সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে (Bangladesh National Elections) কেন্দ্র করে একটি বিভ্রান্তিকর দাবিসহ ভিডিও দেখা যায় যেখানে একজন মহিলাকে বলতে শোনা যায় তিনি ৪ মিনিটে ৫০টি জাল ভোট (50 False Votes) দেন। এই ধরণের পোস্ট দেখা যায় জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে যে সময় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলে।
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটি পুরনো এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনের সাথে এটির কোনও যোগ নেই। এর আগেও আমরা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই করি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পার্টি আওয়ামী লীগ এবছর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যায় জয়ী হয়। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সেই সূত্রে চতুর্থ বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে, এই নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশ্ন তোলেন বহু দেশ এবং সংস্থা যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ। তারা দাবি করেন নির্বাচন প্রক্রিয়া 'স্বাধীন এবং নিরুপেক্ষ' ভাবে হয়নি এবং তারা বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতারিসহ ভোটপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়ও উদ্বেগ প্রকাশ করে। বুম বাংলাদেশও জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য যাচাই করেছে।
এর মধ্যেই উঠে এলো সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও যেখানে একজন মহিলাকে জাল ভোট দেওয়ার বিষয় বলতে শোনা যায়। একজন ব্যবহারকারী ভিডিওটি ৭ জানুয়ারী তারিখে পোস্ট করে ক্যাপশন হিসেবে লেখেন,"৪ মিনিটে ৫০ টা ভোট দিছি, আমি আর কত ভোট দিমু? (ঢাকা ১৭ আসনের একজন মহিলা ভোটার)...!"
এই ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন। এই ভিডিওর আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।
এই ধরণের আরও পোস্ট দেখতে এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে এই ভিডিও সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের নয়, ২০২৩ সালের জুলাই মাসের একটি উপনির্বাচনের সময় এটি তোলা হয়।
বুম ফেসবুকে এই সংক্রান্ত একটি কিওয়ার্ড সার্চ করায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের যাচাই করা ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও খুঁজে পায় যেটি পোস্ট করা হয় ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে, অর্থাৎ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের বেশ কিছু মাস আগে। এই ভিডিওর কিছু অংশে দেখা যায় এখানে ঢাকা-১৭ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের কথাও বলা হয়। ভিডিওতে মহিলাটিকে বলতে শোনা যায়,"৪ মিনিটে আমি ৫০ তা ভোট দিয়েছি।" এছাড়াও, তিনি নিজেকে ফাতিমা খাতুন হিসেবে পরিচয় দেন।
এই ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আমরা এই একই ভিডিও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ইউটিউব চ্যানেলেও খুঁজে পাই।
এই সূত্র ধরে একটি কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদমাধ্যমের ১৭ জুলাই ২০২৩ তারিখের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই যেখানে বলা হয় বাংলাদেশের ঢাকা-১৭ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের মহম্মদ আরাফাত। আরও জানা যায় হিরো আলম এই উপনির্বাচনে তার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মাত্র ৫,৬০৯ ভোট পান। ঢাকা ট্রিবিউনের আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় এই কেন্দ্রে এর আগে সাংসদ ছিলেন অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ফারুখ নামেও পরিচিত। তার মৃত্যুর পরেই অনুষ্ঠিত হয় এই কেন্দ্রের উপনির্বাচন ২০২৩ সালের জুলাই মাসে।