আমেরিকার(US) এক ব্যক্তির ওমানে (Oman) ইসলাম ধর্ম (Islam) গ্রহণের পর আবেগপ্রবণ মুহূর্তের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি সহ ছড়ানো হচ্ছে। ছবিটি শেয়ার করে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি মিডিয়া কর্তা বা ধনকুবের জন ফোর্ড (John Ford)।
বুম যাচাই করে দেখে ওই ব্যক্তি মার্কিন মিডিয়া কর্তা (Media) জন ফোর্ড (John Ford) নন, আমেরিকার একজন সেনা কর্মী যিনি ওমানে ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায়, আবেগপ্রবণ মুহূর্তের এক ব্যক্তি। ওই একটি ব্যক্তির দুটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "আলহামদুলিল্লাহ (জন ফোর্ড) বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনীদের মধ্যে অন্যতম তিনি গতকাল শান্তি ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কালিমা পড়ার সময় একপর্যায়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন। আমিন।"
বুম দেখে একই দাবি সহ ফেসবুকে ছবি দুটি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে।
বুম দেখে ইংরেজিতে একই ছবি একই ধরণের ক্যাপশন সহ শেয়ার করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, "জন ফোর্ড বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি যিনি ১৯০ টি আমেরিকার চ্যানেলের মালিক। তিনি ইসলাম ধর্ম পরিবর্তন ঘোষনা করলেন এবং ইসলামিক পাঠের সময় কাঁদলেন।" এরকম দুটি পোস্ট দেখা যাবে এখানে ও এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে ২৩ মার্চ ২০১৮ প্রকাশিত খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে ওই ব্যক্তির ছবি ব্যবহার হতে দেখে। ইউনাইটেড আরব আমিরশাহীর ওই গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে মার্কিন সেনা আধিকারিক ওই ব্যক্তি ওমানে ধর্ম পরিবর্তনের পর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
ওই প্রতিবেদনে একটি ভিডিও রয়েছে। ১৮ মার্চ ২০১৮ আরবি শিরোনাম সহ ১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ইউটিউবে আরবি শিরোনাম সহ প্রকাশ করা হয়। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় ইসলাম ধর্মীয় স্তোত্র পাঠের পর ওই ব্যক্তি আবেগী হয়ে চোখের জল মোছেন।
আরেকটি ইউটিউব চ্যানেলে ওই একই ভিডিও দেখা যাবে।
খালিজ টাইমসের খবর উদ্ধৃত করে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্যট্রিবিউনও বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করে।
উপরে উল্লেখ করা কোনও ভিডিও কিংবা প্রতিবেদনে টিভি চ্যানেলের মালিক বলে ওই ব্যক্তির পরিচয় দেওয়া হয়নি। বুমের পক্ষে স্বাধীনভাবে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জন ফোর্ড
বিনোদন গণমাধ্যম ভ্যারাইটিরপ্রতিবেদন অনুযায়ী, জন ফোর্ড আমেরিকার প্রযোজনা সংস্থা এনপ্যাক্ট-এর জেনারেল ম্যানেজারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। এব্যাপারে টেলিভিশন বিজনেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে।
জন ফোর্ড ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডিসকভারি চ্যানেলের সভাপতি ও জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। কিন্তু এই ব্যক্তির সঙ্গে ভাইরাল ছবির কোনও মিল নেই।
বুম দেখে অন্য আরেক মার্কিন সিনেমা পরিচালক জেমস ফোর্ডের সঙ্গেও এই ছবি বা ভিডিওর কোনও যোগ নেই।