উত্তরপ্রেদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুতের
মাশুল ৫০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ভাইরাল গ্রাফিকটি ফেসবুকে এই প্রেক্ষিতেই ছড়ানো হচ্ছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া গ্রাফিক পোস্টে লেখা হয়েছে, "পার্থক্য পরিস্কার। উত্তরপ্রদেশ সরকার ৫০ শতাংশ কমালো ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম।" ওই গ্রাফিকে উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মাশুলের তুলনা করে লেখা হয়, উত্তরপ্রদেশের গ্রামীণ এলাকায় আগে দাম ছিল ২ টাকা প্রতি ইউনিট যার বর্তমান মূল্য ইউনিট প্রতি ১ টাকা। আর শহুর এলাকায় দাম ছিল ৬ টাকা প্রতি ইউনিট যা বর্তমানে হয়েছে, ইউনিট প্রতি ৩ টাকা।" অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুত মাশুল গ্রামীণ এলাকায় ৮ টাকা ৩১ পয়সা আর শহুরে এলাকায় ৮ টাকা ৮৮ পয়সা।
ওই গ্রাফিকে আরও লেখা হয়, "সরকারের এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপে উপকৃত বহু জনসাধারণ। পশ্চিমবঙ্গে গত ১০ বছরে ৫০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। মাননীয়া ঠিকই বলেছেন, বাংলাকে কোনও মতেই উত্তরপ্রদেশ হতে দেওয়া যাবে না।"
একই গ্রাফিক সহ দুটি ফেসবুক পোস্ট দেখা যাবে
এখানে ও
এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশের বিদ্যুৎ মাশুলের তুলনা করা ভাইরাল গ্রাফিকটি বিভ্রান্তিকর।
বুম বাসগৃহে ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ পরিষেবার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদশের গ্রামীণ বা শহুরে এলাকায় মাশুল পরিবর্তনের কোনও প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি। শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে বিদ্যুত মাশুল কমানোর কথা বলা হয়েছে।
শুধুমাত্র কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুতের দাম হ্রাস
৭ জানুয়ারি ২০২২ প্রকাশিত
বিজনেস স্যান্ডার্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুতের মাশুল ৫০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
নতুন ঘোষণা অনুযায়ী গ্রামীণ এলকায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত মোটরচালিত নলকূপের ক্ষেত্রে মিটারবাহী বর্তমান বিদ্যুত মাশুল ২ টাকা প্রতি ইউনিটের বদলে ১ টাকা করা হবে। ধার্য মূল্য ৭০ টাকা প্রতি হর্সপাওয়ারে কমানো হবে ৩৫ টাকা।
মিটারছাড়া কানেকশনের ক্ষেত্রে গ্রামীন এই দাম ১৭০ টাকা প্রতি হর্সপাওয়ার থেকে কমিয়ে করা হবে ৮৫ টাকা।
আর শহুরে এলাকায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত মোটরচালিত নলকূপের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি মিটারবাহী বিদ্যুতের মাশুল ৬ টাকা থেকে কমিয়ে করা হবে ৩ টাকা। ধার্য মূল্য শহরে এলাকার ক্ষেত্রে (মিটারবাহী) ১৩০ টাকা প্রতি হর্স পাওয়ার থেকে কমিয়ে ৬৫ টাকা হর্স পাওয়ার করা হবে।
ওই প্রতিবেদনে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, নতুন কামানো বিদ্যুৎ মাশুল সত্ত্বর লাগু হতে পারে ভোটমুখী উত্তর প্রদেশে।
২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে উত্তরপ্রদেশ বিদ্যুৎ নিয়ামক কমিশনের নির্ধরিত মূল্য
২০০৩ সালের আইন অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিদ্যুবিতরণ সংস্থা উত্তরপ্রদেশ পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিডেটের অধীন পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য, দক্ষিণ ও কানপুর বিদ্যৎ বিতরণ নিগম রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বিদ্যুৎ নিয়ামক সংস্থা ২৯ জুলাই ২০২০ প্রকাশিত আদেশে ২০২১-২০২১ অর্থ বর্ষে বিদ্যুৎ মাশুল নিয়ন্ত্রণ করে। নিচে এই সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী বর্তমান বিদ্যুৎ মাশুলের দাম বর্ণনা করা হল। সম্পূর্ণ বিজ্ঞপ্তিটি পড়া যাবে
এখানে।
২০২১-২০২১ অর্থ বর্ষে বিদ্যুৎ মাশুল হেরফের না হওয়ার ব্যপারে প্রতিবেদন পড়া যাবে
এখানে। তার আগের বছর ২০১৯-২০২০ অর্থ বর্ষে বিদ্যুৎ মাশুল হেরফের না হওয়া সম্পর্কে প্রতিবেদন পড়া যাবে
এখানে।
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মাশুল ব্যবহার অনুযায়ী ভিন্ন
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ পরিবহন সংস্থা দুটি, সিইএসসি ও ডাব্লুবিএসইডিসিএল। উভয় সংস্থারই গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার বিদ্যুতের মাশুল ইউনিটের ব্যবহার অনুযায়ী ভিন্ন। (১ কিলোওয়াট প্রতি ঘন্টা বিদ্যুত ১ ইউনিট বিদ্যুতের সমান।)
ডাব্লুবিএসইডিসিএল-এর মাশুল অনুযায়ী, গ্রামীন এলাকায় অবানিজ্যিক প্রথম ১০২ ইউনিট পর্যন্ত ইউনিট প্রতি দাম ৫ টাকা ২৬ পয়সা করে। ৯০০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুতের মাশুল, ইউনিট প্রতি ৮ টাকা ৯৯ পয়সা করে।
ডাব্লুবিএসইডিসিএল-এর মাশুল অনুযায়ী শহুরে এলাকায় অবানিজ্যিক প্রথম ১০২ ইউনিট পর্যন্ত ইউনিট প্রতি দাম ৫ টাকা ৩০ পয়সা করে। ৯০০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুতের মাশুল, ইউনিট প্রতি ৮ টাকা ৯৯ পয়সা করে।