মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (United States of America) রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে খালিস্তানি পতাকা (Khalistani Flag) হাতে একদল লোককে ভারতের পতাকার (Indian flag) ওপর হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় পতাকার ওই অবমাননার ভিডিওটিকে এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, ঘটনাটি ভারতের আন্দোলনরত কৃষকরা (Protesting Farmers) ঘটিয়েছেন।
ভিডিওটিতে একটি লোক ভারতের পতাকা মাটিতে ফেলে বলে, পতাকাটিকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। তারপর সে পতাকাটিকে পদদলিত করে। তার চারপাশে, খালিস্তানি পতাকা হাতে একদল লোক স্লোগান দেয়, "খালিস্তান জিন্দাবাদ", "ভারত খালিস্তান থেকে দূর হটো"।
ভিডিওটি টুইটার ও ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সেটিকে ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে ঘটে যাওয়া হিংসার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন কৃষকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ও লাল কেল্লার সুরক্ষা বলয় ভেদ করে সেখানে একটি ফ্ল্যাগপোলে শিখদের একটি ধর্মীয় পতাকা তোলেন। দিল্লির হিংসাত্মক ঘটনায় একজন কৃষক প্রাণ হারান ও একাধিক পুলিশ কর্মী আহত হন। ফলে, তার বিরুদ্ধে একদিকে নিন্দার ঝড় ওঠে আর অন্য দিকে মিথ্যে খবরের বন্যা বয়ে যায়। তার মধ্যে দাবি করা হয় যে, কৃষকরা লাল কেল্লায় খালিস্তানি পতাকা তোলে। ওই খবর বুম খণ্ডন করে। সেটি
এখানে পড়ুন।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের জাতীয় সম্পাদক হর্ষ নারায়ণ ভিডিওটি শেয়ার করে বলেন, "গতকালের বিশৃঙ্খলার জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তি দিতে হবে। এই ভিডিও, ঘটনাটির দেশদ্রোহী চরিত্র স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
একজন টুইটার ব্যবহারকারীও ভিডিওটি শেয়ার করেন। কৃষকদের সমর্থন করার জন্য তিনি অভিনেতা-গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জ-এর সমালোচনা করেন ওই টুইটে।
২৬ জানুয়ারির হিংসার সঙ্গে যুক্ত করে ভিডিওটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওটি ভারতের নয়। সেটি ক্যালিফর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টো-য় তোলা।
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে আমরা দেখি যে, সেটি একটি টিক-টক ভিডিও। তাতে 'আমনবীর_সিংহ৫' নামটা আবছা দেখা যাচ্ছিল। আমরা ওই টিক-টক অ্যাকাউন্টে গিয়ে দেখি যে, অ্যাকাউন্ট যিনি চালান, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। এবং ভিডিওটি ২৫ জানুয়ারি আপলোড করা হয়। অর্থাৎ, দিল্লিতে হাঙ্গামার একদিন আগে।
আমরা সিংহ-র প্রোফাইল দেখি। তা থেকে জানা যায় যে, খালিস্তানের সমর্থনে উনি নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন ও তাতে ভারতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উনি ভারতীয় তেরঙ্গা কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন।
আমরা দেখি যে, ভাইরাল ভিডিওটি তাঁর অ্যাকাউন্টে ২৫ জানুয়ারি আপলোড করা হয়েছিল।
২৪ জানুয়ারি আপলোড করা অন্য একটি ভিডিওতে উনি সকলকে বিক্ষোভে সামিল হতে বলেন। স্ক্রিনে তাঁর ঠিকানা হিসেবে লেখা ছিল: ৭৬০৯ উইবার ওয়ে, স্যাক্র্যামেন্টো, সিএ ৯৫৮২৮।
ওই টিকানা আমরা
গুগুল ম্যাপে দেখে নিই। দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য আর ক্যালিফর্নিয়ার স্যাক্র্যামেন্টোর মধ্যে অনেক মিল আছে।