ঢাকার (Dhaka) পল্লবীতে, ২০২১ সালের মে মাসের এক খুনের ঘটনার ভিডিও মিথ্যে দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক দাঙ্গায় (Bangladesh Violence) যতীন সাহাকে (Jatin Saha) খুন করার দৃশ্য।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ১৫ অক্টোবর ২০২১, নোয়াখালির বেগমগঞ্জ উপজেলায় হিন্দু মন্দিরের ওপর আক্রমণের সময় যতন কুমার সাহাকে সাহাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক দাঙ্গায় সাত ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। বাংলাদেশের কুমিল্লায় একটি দুর্গা পুজো প্যান্ডেলে ভাঙ্গচুর হওয়ার পর, বিক্ষিপ্ত হাঙ্গামার ঘটনা ঘটে।
৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দু'জন লোক এক ব্যক্তিকে চপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন করতে দেখা যায়। বুম ভিডিওটি এখানে দেয়নি কারণ হত্যার ওই ঘটনাটিকে খুব কাছ থেকে দেখানো হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টির শাখা সংগঠন সিংহ বাহিনীর সভাপতি দেবদত্ত মাঝি, ইংরেজিতে ক্যাপশন সহ ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেন। তাতে বলা হয়, "যতীন সাহা হত্যার ভিডিও। উনি কুমিল্লায় থাকতেন। দুর্গা পুজোর আগের দিন নোয়াখালি গেলে তিনি সেখানে খুন হন। বাংলাদেশে হিন্দুরা বেঁচে নেই। প্রতি মুহূর্তেই তাঁরা মারা পড়ছেন।"
পরে টুইটটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। টুইটটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
যাচাইয়ে জন্য ভিডিওটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনেও আসে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসা বলে আজতক বাংলা ছাপল ত্রিপুরার অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্যের ছবি
তথ্য যাচাই
বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখে যে, যতন সাহার হত্যার সঙ্গে ওই ভিডিওর কোনও সম্পর্ক নেই।
ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি আলাদা করেলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে যমুনা টিভি ওই একই ভিডিও ২৩ মে ২০২১ ইউটিউবে আপলোড করে। ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয়, "পল্লবীতে শাহীন হত্যা মামলার মূল আসামি মনির নিহত"।
এই সূত্র ধরে সার্চ করে শাহীন হত্যা সম্পর্কে আমরা কয়েকটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। ২৩ মে ২০২১, যুগান্তর তাদের প্রতিবেদনে লেখে, "শাহীন উদ্দিন, যাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল, তাঁর হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেন পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা গেছেন।"
চ্যানেল ২৪ তাদের ১৯ মে ২০২১ তারিখের রিপোর্টে ওই একই ভিডিও ব্যবহার করে।
১৬ মে ২০২১ যুগান্তর-এ প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয় যে, একটি জমির বিবাদকে কেন্দ্র করে, আততায়ীরা প্রকাশ্য দিবালোকে, তাঁর ছেলের সামনেই, ৩৪ বছর বয়সী শাহীন উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করে। শাহীন উদ্দিনের সাত বছরের ছেলে জানায়, সে তাঁর বাবার সঙ্গে ছিল যখন তাঁকে হত্যা করা হয়।
২৯ মে ২০২১, প্রথম আলোর ইংরেজি সংস্করণে বলা হয় মূল অভিযুক্ত সুমন আগেই তার অপরাধ স্বীকার করেছিল।
১৯ অক্টোবর ২০২১ বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও ওই মিথ্যে খবর সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও ওই ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান।
অতিরিক্ত রিপোর্টিং: শোয়েব আবদুল্লা, বুম বাংলাদেশ
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দুর্গা পুজো মণ্ডপে তাণ্ডবের ভিডিও পশ্চিমবঙ্গের বলে ছড়াচ্ছে