বিচলিত করার মতো একটি ছবিতে, কাঠে হাত, পা বাঁধা এক মহিলার ঝুলন্ত মৃত দেহ বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর দুই জওয়ানকে। ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে, ছত্তীসগঢ়ে নকশালদের (Naxal) বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নাম করে, নির্দোষ ব্যক্তিদের মেরে ফেলা হচ্ছে।
বুম দেখে, সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার ছবি সেটি নয়। সেটি ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গে তোলা হয়। অথচ, ছত্তীসগঢ়ে তোলা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ছবিটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "এই হলো ছত্তীসগঢ়ের অবস্থা। নকশালদের নামে নির্দোষ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এই নির্দোষ মানুষগুলির জন্য কে দায়ী থাকবে?"
(হিন্দিতে লেখা আসল ক্যাপশন: यह हाल है छत्तीसगढ़ का नक्सल के नाम पर बेकसूर लोग मारे जा रहे हैं। इन बेकसूर लोगों का जेम्मेदार कौन होगा।)
এমনই এক পোস্টকে নীচে দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: নিউজ উইক ম্যাগাজিনের বিচারে বিশ্বের সেরা হাসপাতাল কলকাতার এস.এস.কে.এম?
তথ্য যাচাই
আমরা ছবিটির একটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করি এবং গেট্টি ইমেজেস-এর স্টক ফটো ওয়েবসাইটে ওই একই ছবি দেখতে পাই।
ছবিটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "১৬ জুন, ২০১০, কলকাতা থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে শালবনির মাওবাদী ঘাঁটির কাছে, রঞ্ঝার জঙ্গলে, গুলির লড়াইয়ের পর এক সন্দেহভাজন মহিলা মাওবাদী গেরিলার মৃত দেহ নিয়ে যাচ্ছে ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর সেনারা। ওই গুলির লড়াইয়ে, তিন মহিলা সহ আটজন মাওবাদী গেরিলার মৃত্যু হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী সেখান থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে।"
ছবিটির আলোকচিত্রীর নাম দেওয়া হয়নি। তবে তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ এজেন্সি 'এজেন্স ফ্রাঁন্স-প্রেস''র (এএফপি) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ওই সূত্র ধরে আমরা প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়ে ওই ঘটনার ওপর সংবাদ প্রতিবেদনের সন্ধান করি। তার ফলে, ১৬ জুন, ২০১০ তে, 'দ্য ইকনমিক টাইমস'-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই।
ওই লেখায় বলা হয়, "আজ ভোরে, এক বড় ধরনের মাওবাদী-বিরোধী অভিযানে, পশ্চিম মেদনিপুর জেলার এক জঙ্গলে এনকাউন্টারের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনী তিন মহিলা সহ আট নকশালকে মেরে ফেলে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, চারটি এসএলআর বন্দুক, তিনটি একে-৪৭, দু'টি একে-৫৬ ও গুলি উদ্ধার করা হয় ওই অভিযানে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক এন এস নিগম জানান যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছু মাইন, ডেটোনেটর ও আইইডি বা বিশেষ ধরনের বোমাও উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: আপ গুজরাত সমাবেশ গড়ল বিশ্ব রেকর্ড? নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেনি