২০১৭ সালে হরিয়ানার পঞ্চকুলায় (Panchkula) ডেরা সচা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে (Gurmeet Ram Rahim) সিবিআই কোর্ট ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করায় তাঁর অনুগামীদের তাণ্ডবের ছবিকে বলা হল শীতলকুচির হিংসার ঘটনা। ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে এটি শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর আক্রমণ।
কোচবিহারের শীতলকুচিতে চতুর্খ দফার নির্বাচনের দিন ১০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এই মুহূর্তে তোলপাড় হচ্ছে বাংলার রাজনীতি। আরেকটি ঘটনায় ওই দিন আরেকটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে আরেক তরুণের প্রাণহানি হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছে গুলি চালানোর জন্য দোষী সিআইএসএফ জওয়ানের শাস্তি চাওয়া হয়েছে ঘটনার পূর্ণঙ্গ তদন্ত চেয়ে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গ্রামবাসীরা ঘেরাও করলে তাঁরা গুলি চালাতে বাধ্য হন জানানো হয় পুলিশের রিপোর্টে। নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও ছবি বা ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি।
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায় এক দল জনতা লাঠি, পাথর নিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মীদের উপর হামলা করছে। ছবিটি শেয়ার করে ফেসবুকে ক্যাপশন লেখা হয়, "শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে"।
পোস্টটিকে দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: শীতলকুচির জখম জওয়ান বলে ধানবাদের ছবি ছড়ালেন বাংলার বিজেপি নেতারা
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবি ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে গুরমিত রাম রহিমের অনুগামীদের নিরাপত্তারক্ষীদের উপর হমলার ঘটনা।
বুম ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে ২০১৭ সালের অগস্ট মাসের একটি টুইট খুঁজে পায়। ওই টুইটে ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান রাম রহিমের দোষীসাব্যস্ত হওয়ার ঘটনায় তাঁর অনুগামীদের দাঙ্গা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বুম এই সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ করে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর ২৬ অগস্ট ২০১৭ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটিকে খুঁজে পায়। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "পঞ্চকুলা-র নিরাপত্তা কর্মীদের পাথর ছুঁড়ছে ডেরা অনুগামী জনতারা।" এক্সপ্রেসের তরফে ছবিটি তোলেন চিত্রসাংবাদিক জইপাল সিংহ।
ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রকাশিত ছবিটির। নিচে ছবি দুটির সাদৃশ্য দেখানো হল।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী পঞ্চকুলার সেক্টর ২ এলাকায় ডেরা অনুগামীরা ওই তাণ্ডব করে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় রাম রহিমের অনুগামীরা রেল স্টেশন ও বিভিন্ন এলাকায় হিংসা ছড়ায়। গাড়ি ভাঙচুর করে। ৩৮ জন মারা যায় ও ২০০ জন আহত হয় ওই হিংসার ঘটনায়। ২০০২ সালে দুই মহিলাকে ধর্ষন করার অপরাধে ২০ বছর কারাবাসের রায় দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল মুসলিম দম্পতির হিন্দু পালিত কন্যার বিয়ের ছবি