সোশাল মিডিয়ায় গৃহবধূদের মাস মাইনে নিয়ে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রস্তবিত খসড়া বিলের ভাবনা নতুন করে জিইয়ে উঠলো। বিভ্রান্তিকর দাবি সহ ফেসবুক স্ট্যাটাস শেয়ার করা হচ্ছে, যার উৎস একটি বিবর্ণ সংবাদপত্রের টুকরো ছবি।
বুম দেখে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এরকম একটি খসড়া বিলের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ
ভাইরাল হওয়া ওই ছবির শিরোনামে লেখা রয়েছে, ''স্ত্রীকে বেতন দিতে হবে স্বামীদের আইন আনার কথা ভাবছে কেন্দ্র।''
সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ওই ছবিটিতে ''নয়াদিল্লি, ১০ সেপ্টেম্বর''—এর তারিখ দেওয়া রয়েছে।
এই ফেসবুক পোস্টকে ভিত্তি করেই সম্প্রতি স্যাটাস দেওয়া হচ্ছে, ''স্ত্রী কে বেতন দিতে হবে স্বামীদের, আইন আনার কথা ভাবছে কেন্দ্র। সাথে প্লিস PF,ESI,DA টাও চালু করার আর্জি জানালাম।''
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই বয়ানে ফেসবুকে অনেকেই এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তথ্য যাচাই
বুম সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরণের কোনও বিলের ব্যাপারে কোনও প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি।
বুম কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখে সংবাদপত্রের ক্লিপটি সাম্প্রতিক নয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেটি ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছিল।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী একই ছবি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২ শেয়ার করেছিল। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
২০১২ সালে এরকম একটি খসড়া বিলের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ। ওই প্রস্তাবিত খসড়া বিলের ভাবনা ছিল স্বামীর উপার্জনের কিছু অংশ তাঁর স্ত্রীর গৃহকর্মের পারিশ্রমিক হিসেবে বরাদ্দ হবে। এমনটা তিনি জানান গণমাধ্যমকে।
মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ পিটিআইকে বলেন, "মহিলারা বাড়িতে যা কাজকর্ম করেন তা অর্থনৈতিক কিন্তু তা ধরা হয়না। যদি বাচ্চাদের ক্রেশে পাঠানো হয়, তাহলে অর্থব্যায় হয়। যদি বাইরের কেউ রান্নাবান্না অন্যান্য কাজ করে তাহলে খরচ করতে হয়। গৃহবধূরা যে পরিমান বাড়ির কাড করেন তার অন্যকিছুর সঙ্গে তুলনা হয়না।" এনডিটিভি ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২।
অবশ্য 'গৃহবধূদের মাসিক বেতনের' এই বিলের ভাবনা আনা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে জিবাংলা, টাইমসঅফ ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়াটুডের প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে, এখানে ও এখানে।
বুম এব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে যে সংবাদপত্রের ওই প্রতিবেদনটি ২০১২ সালের, কিন্তু বুমের পক্ষে ২০১২ সালে উপলব্ধ বাংলা সংবাদপত্রের আর্কাইভের অপ্রতুলতার কারণে তার কোনও ই-পেপার লিঙ্ক সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি এবং এটি ঠিক কোন সংবাদপত্রে বেরিয়েছিল তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ।
আরও পড়ুন: অতিমারির সময় নরেন্দ্র মোদীর প্রচার বলে হাঁসের সঙ্গে পুরনো ছবি ভাইরাল