২০১৭ সালে হরিয়ানার রোহতকে শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের দাবিতে জাঠ সম্প্রদায়ের ট্রাক্টর চেপে আন্দোলনের ছবিকে মিথ্যে করে সোশাল মিডিয়ায় কৃষকদের "দিল্লি চলো" আন্দোলন বলে চালানো হচ্ছে।
সংসদে পাশ করা তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহার, ও ফসল পিছু নূন্যতম সহায়ক মূল্য প্রদানের দাবিতে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানের চাষীরা লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন গত সপ্তাহ থেকে। মঙ্গলবার কৃষক সংগঠন ও সরকারের বৈঠকে সমাধান সূত্র না মেলায় পুনরায় বৃহঃস্পতিবার বৈঠক হওয়ার কথা। দাবি মানা না হলে সীমান্তবর্তী জাতীয় সড়ক আবরুদ্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আন্দোলনকারী কৃষকরা। "দিল্লি চলো" নামে এই প্রতিবাদে ট্রাকে চড়ে দিল্লিতে হাজির হওয়ার চেষ্টা করছিলেন কৃষকরা। রাজধানীতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাদের। বুরারী ময়দানে যেতে অস্বীকার করেছেন কৃষকরা।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে এক মহিলা ট্রাকচালককে ট্রাক্টরের পিছনে লোকভর্তি চারটি ট্রলি নিয়ে আসতে দেখা যায়
ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "#কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে 70 হাজার মহিলা কৃষাণ দিল্লির পথে। #Standwithfarmerschallenge"
স্টুডেন্টস ফেডারেশন ইন্ডিয়ার যুগ্ম সম্পাদক দ্বীপশীতা ধরও ছবিটিকে কৃষকদের সাম্প্রতিক 'দিল্লি চলো' প্রতিবাদ বলে টুইট করেছেন।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি দিল্লিতে চলা কৃষকদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হরিয়ানার রোহতকে জাঠ সংরক্ষণের দাবিতে বিক্ষোভের সময় ছবিটি তোলা হয়েছিল।
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ প্রকাশিত
হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদনে ছবিটিকে দেখতে পায়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে স্বত্ব দিয়ে ছবিটির ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "
জাঠ মহিলা আন্দোলনকারীরা তাঁদের সংরক্ষণ আন্দোলনের সময় রোহতকের
জাসসিয়া গ্রামের অভিমুখে রাস্তায়।"
একই ক্যাপশন সহ ছবিটি দেখা যাবে
আউটলুক-এর গ্যালারিতে (
ছবির ক্রম ২৮/১০৩)।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী একগুচ্ছ দাবিতে ওই জাঠ প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত হয়।
শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের পাশাপাশি, আন্দোলনকারী জাঠ যুবকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা তুলে নেওয়া, আন্দোলনের ফলে জেলে যাওয়া যুবকদের ছেড়ে দেওয়া, ২০১৬ সালের আন্দোলনে নিহত ব্যক্তির পরিজনের জন্য ক্ষতিপূরণ, সরকারি চাকরি প্রভৃতি একধিক দাবি নিয়ে সেই সময় হরিয়ানার রোহতকে সরব হয় জাঠ যুবক-যুবতীরা। নিচে ভাইরাল ছবি (বাম দিকে) ও হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনের ছবির (ডান দিকে) তুলনা করা হল।