উত্তরপ্রদেশের দুই মহিলার শ্লীলতাহানির ঘটনার ২০১৭ সালের ভয়াবহ ফুটেজ নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বহু নেটিজেন দাবি করেছেন যে এটি সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও। এই মর্মান্তিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি নোংরা রাস্তায় একদল লোক দুই মহিলাকে জোর করে আটক করে এবং তাদের শ্লীলতাহানি করে। দুই মহিলাই বারে বারে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করতে থাকেন।
বুম অনুসন্ধান করে দেখে যে এই ভিডিওটি উত্তরপ্রদেশের রামপুর অঞ্চলের। সেখানেই দুই মহিলার শ্লীলতাহানির এই ঘটনার ভিডিও তোলা হয়। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "মুসলমান-অধ্যুষিত অঞ্চলে আমাদের মেয়েদের সঙ্গে এই সব ঘটনা ঘটছে। ভাবুন, কাল যদি ওঁদের জায়গায় আপনি থাকেন! এটা দেখেও যদি আপনারা বুঝতে না পারেন তবে ঈশ্বরও আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।" ( "হিন্দিতে লেখা মূল ক্যাপশন: ये हो रहा है #मुस्लिम_बहुसंख्यक इलाकों में #हिन्दू बहू - बेटियों के साथ!, सोचो अगर कल ये तुम्हारे साथ हो इसको देखकर भी अगर तुम्हारी समझ में नहीं आता तो तुम्हे भगवान भी नहीं बचा सकते।")
ভিডিওটি আপনাকে বিচলিত করতে পারে, দর্শকদের নিজস্ব বিবেচনা অনুসারে দেখার সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। পোস্টটির আর্কাইভ
এখানে দেখতে পাবেন।
একই বক্তব্যের সঙ্গে ফেসবুকেও এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টটির আর্কাইভ
এখানে দেখতে পাবেন।
একটি ফেসবুক পোস্টের আর্কাইভ দেখতে
এখানে () ক্লিক করুন।
একই দাবির সঙ্গে ভিডিওটি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে। টুইটের আর্কাইভ দেখতে
এখানে ক্লিক করুন।
ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করার জন্য ভিডিওটি বুমের হেল্পলাইন নম্বরেও আসে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেমের উপর বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ চালায় এবং দেখতে পায় ভিডিওটি ২০১৭ সালের। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় ১৪ জন পুরুষ মিলে দুজন মহিলার শ্লীলতাহানি করে এবং সেই ঘটনার ভিডিও করে।
২০১৭ সালের ২৯ মে এই ঘটনাটি সম্পর্কিত
প্রতিবেদনে শিরোনাম দেওয়া হয় 'উত্তরপ্রদেশে ১৪ জন পুরুষ মিলে দুই মহিলার শ্লীলতাহানি করল। ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করল ইন্টারনেটে।' এই প্রতিবেদনে টান্ডা থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে কী ভাবে ১৪ জন পুরুষ মিলে ওই দুই মহিলার শ্লীলতাহানি করে, তা জানানো হয়। অভিযুক্তদের এক জন ঘটনাটির ভিডিও করে এবং তারা সেটাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ফার্স্ট পোস্টের
প্রতিবেদন থেকে জানা যায় নিগৃহীতদের মধ্যে কেউ বা তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এফআইর করে। ভিডিওতে যে ১৪ জন পুরুষকে দেখা গেছে, তাদের সবাইকে শনাক্ত করা গেছে।
শাহ নওয়াজ নামের এক ব্যক্তি এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত এবং সেই তার মোবাইল ফোনে ঘটনাটির ভিডিও করে। তাকে সবার আগে গ্রেফতার করা হয়। পরে আরোও দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মে এদের সকলকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রমোদ কুমারের আদালতে পেশ করা হয় এবং পরে তাদের জেলে পাঠানো হয়।
এই ঘটনার উপর বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতিবেদনের ছবি এবং নতুন ভিডিওর ছবি ফ্রেম ধরে মেলালে দেখা যাচ্ছে দুটি একই ঘটনার ছবি।
ইনখবর এই একই ঘটনার উপর
প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বাঁ দিকে ২০১৭ সালের ইনখবরের প্রতিবেদন। ডানদিকে নতুন ভিডিও।