মোবাইলে রেকর্ড করা ২০১৭ সালের অন্ধ্রপ্রদেশের একটি অস্বস্তিকর ঘটনার ভিডিও ক্লিপ, যেখানে তিনজন যুবককে এক যুবতীক শ্লীলতাহানির চেষ্টা করতে দেখা যায়, সেই ক্লিপকে ভুয়ো দাবির সাথে সাম্প্রদায়িক মোড় দিয়ে শেয়ার করে বলা হচ্ছে ঘটনাটি নাকি কেরলে ঘটেছে।
বুম যাচাই করে দেখে ঘটনাটি ২০১৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলায় ঘটেছিল এবং ঘটনাটির সঙ্গে কোনও সাম্প্রদায়িক যোগ নেই।
১ মিনিট ৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওকে ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "#ভারতবর্ষে জিহাদী আগ্রাসনে কেরালায় নারীদের শ্লীলতাহানির এই ভিডিওটি দেখে আপনার মন খারাপ হওয়ার কথা নয় কারন ঐসব নির্যাতিত হিন্দুরা ভারতীয় শিক্ষীত পটুপাটি হিন্দুদের কেউ নয় ? আজ কেরালা এমন একটি রাজ্য যেখানে হিন্দু সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, পাশাপাশি হিন্দু হত্যার বিষয়টিও নতুন নয়। বামপন্থী সরকার কর্তৃক হিন্দু ও আরএসএসের কর্মীদের হত্যা কয়েক বছর ধরেই চলে আসছে।"
ভিডিওটি আপত্তিকর হওয়ায় বুম পোস্টটিকে প্রতিবেদনে সংযোজন করেনি। পোস্টটি আর্কাইভ করা রয়েছে
এখানে।
বুম ভাইরাল এই ভিডিওর তথ্য যাচাই করে জানতে পেরেছে ঘটনাটি প্রায় তিন বছর আগের এবং ঘটনাটি কেরলে হয়নি। মূল ঘটনাটি ঘটেছিল অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলার কানিগিরি গ্রামে। ওই ঘটনার সাথে জড়িত তিনজঙ্কেই স্থানীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
বুম যাচাই করে দেখে যে এই ঘটনার সঙ্গে কোন সাম্প্রদায়িকতার যোগ নেই।
ইনভিডের সাহায্যে ফেসবুক ভুডিওটিকে কয়েকটি মূল ফ্রেমে ভেঙ্গে নিয়ে বুম ইয়ান্ডেক্সে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করে এবং ভিডিওর মূল ঘটনা নিয়ে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কিছু সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পায়।
প্রতিবেদনের মাধ্যমে বুম জানতে পারে যে ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে। ঘটনার কয়েকদিন পর থেকে রেকর্ড করা ক্লিপটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
২০১৭ সালের
২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এনডিটিভির
প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ১৯ বছর বয়েসি কলেজ পড়ুয়া ওই মেয়েকে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সদলবলে ঘিরে ধরে এবং শ্লীলতাহানি করে। অপরাধীদের মধ্যে কেউ এই ঘটিনাটি মোবাইলে রেকর্ড করে এবং পরবর্তীতে সোহাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেয়। মেয়েটির সাথে থাকা বান্ধবী ওই মেয়েটিকে ছেলেগুলির কবল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায় বি সাই নামে ওই ছেলেটিকে মেয়েটি এক বছর ধরে চিনত।
কার্ত্তিক নামে ছেলেটির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে সে বি সাইকে মেয়েটির উপর চড়াও হতে বলে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আরেক যুবকের নাম পবন।
বুম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটেও ওই ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিও
প্রতিবেদন খুঁজে পায়। সেখানেও ঘটনাটির একই রকম বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।