২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদের ফলে আক্রোশের জেরে বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রের খুনের ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদপত্রের খবরের ক্লিপিংকে ভুয়ো দাবি সহ ফেসবুকে জিইয়ে তুলে শেয়ার করা হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে ওই সংবাদপত্রের ক্লিপিং শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ওই খুনের ঘটনায় দুস্কৃতীরা এখনও গ্রেফতার হয়নি আর ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের না ধরা গেলে পুলিশ মন্ত্রী যেন পদত্যাগ করেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে উৎপল বেহেরা নামে মূল খুনিকে পুলিশ গ্রেফতার করে সাগরদিঘী থানার পুলিশ। আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
বুম বর্তমান বিচারাধীন মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে যোগাযোগ করে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গে। বুমকে সোমবার তিনি জানান, "এই পোস্টটি ভুয়ো, এই ঘটনার অভিযুক্ত এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছে। উৎপল বেহেরার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া খুনের মামলা এখন আদালতের বিচারাধীন।" উৎপল বেহরার গ্রেফতারির পর সংবাদিক সম্মেলনের সময় সাগরদিঘি থানায় মুকেশ কুমার উপস্থিত ছিলেন সে সময়।ফেসবুকে একটি গ্রাফিক ছবি শেয়ার করা হচ্ছে যার মধ্যে রয়েছে একটি সংবাদপত্রের ক্লিপিং। ওই ক্লিপিংয়ে শিরোনাম লেখা রয়েছে, "কুপিয়ে খুন স্বামী স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে।" পাশের ছবির তলায় ক্যাপশন লেখা রয়েছে, "নিহত বন্ধুপ্রকাশ, বিউটি ও তাদের পুত্র অর্জুন।" এই গ্রাফিক পোস্টের আরেক পাশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। গ্রাফিকে লেখা হয়েছে, "দুষ্কৃতীরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি কেন? এ কোন রাজ্যে বসবাস করছি আমরা? খুনি কে? পুলিশ কোথায়? সরকার কোথায়? বিচার কোথায়? ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনি ধরা না পরলে পদত্যাগ করুক রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী।"
বুম দেখে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে একই পরিবারের তিনজন সদস্যের খুনের ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ৮ অক্টোবর। ভাইরাল হওয়া সংবাদপত্রের ক্লিপংটি ৯ অক্টোবর ২০২০
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের অংশ।
১৮ অক্টোবর ২০১৯ প্রকাশিত
আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, "
সাগরদিঘি থানায় ডেকে পাঠানো হয় বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর স্ত্রী বিউটির পরিবারের লোকজনকে। তাঁদের দেখানো হয় নবমী এবং দশমীর সকালে জিয়াগঞ্জে উৎপল বেহেরার আনাগোনার বিভিন্ন ছবির ফুটেজ। ফেরিঘাটে তার টিকিট কাটা থেকে থানার বাঁকে সহজ ভঙ্গিতে উৎপলের হেঁটে যাওয়া— সব ছবিই ওই ফুটেজে ধরা পড়েছে বলে পুলিশের দাবি। দুই পরিবারের সামনে খুনের পুননির্মাণের ভিডিয়ো ফুটেজও তুলে ধরে পুলিশ এ দিন প্রমাণ করার চেষ্টা করে বন্ধুপ্রকাশ পালকে সপরিবার খুনের পিছনে উৎপলই মূল হোতা।"মুর্শিদাবাদের এসপি মুকেশ কুমার সে সময় গণমাধ্যমকে বলেন,''আমরা নিশ্চিত এ খুন একা উৎপলই করেছে। জেরায় তা কবুলও করেছে সে।'' উৎপল বেহেরার গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে। দুর্গাপুজোর দশমীর দিন জিয়াগঞ্জে ৩৫ বছর বয়সী পেশায় স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি ও আটবছরের ছেলে অঙ্গন খুন হয় নৃশংসভাবে। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী উংপল বেহরার সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশের বীমা সংক্রান্ত টাকার লেনদেন হয়।