দিল্লির রঘুবীরনগর অঞ্চলের তিন কিশোর ছুরি দিয়ে কুপিয়ে এক ব্যক্তিকে খুন করে এবং এই ঘটনার একটি ভিডিও মিথ্যে সাম্প্রদায়িক দাবির সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে যে অভিযুক্তরা মুসলমান।
বুম এফআইআর-এর একটি কপি হাতে পায় এবং দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে নিশ্চিত ভাবে জানতে পারে যে অভিযুক্তরা কেউই মুসলমান নয়।
ভিডিওটি একটি হিন্দি ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। ওই ক্যাপশনের অনুবাদ: "দিল্লির মাদীপুর অঞ্চলে তিন নাবালক জেহাদি এক যুবককে সামান্য কারণে ছুরির আঘাতে মেরে ফেলেছে। আমরা বর্ণবিদ্বেষের কারণে লড়াই করছি আর এই 'শান্তির দূতরা' ভাল প্রশিক্ষণ পাচ্ছে।"
(হিন্দিতে লেখা মূল বয়ান: दिल्ली के मादीपुर में तीन नाबालिगों जिहादियों ने एक लड़के की मामूली सी बात पर बीच सड़क चाकुओं से गोद कर हत्या कर दी। हम सब जातिवादिता में मर रहे हैं वहाँ इन शांतिदूतों को अच्छी ट्रेंनिग मिलती है)।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে পশ্চিম দিল্লির রঘুবীর নগর অঞ্চলের মনীশ কুমার নামে এক গাড়িচালককে তিন কিশোর ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। ভিডিওটি ৮ জুলাই তারিখের। অভিযোগ করা হয়েছে যে নিহত ব্যক্তি ওই অঞ্চলে তিন কিশো্রের র্যাাশ ড্রাইভিং এবং বাইক স্টান্ট দেখানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন এবং সে জন্য তারা আগে থেকেই তাঁর উপর রেগে ছিল। নিহতকে ২৮ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় এবং দীন দয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে আনা হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
জুভেনাইল জাস্টিস আইন অনুসারে বুম এই নাবালকদের নাম প্রকাশ করছে না।
ভিডিওটি ফেসবুকেও একই দাবির সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে।
টুইটারেও এই একই দাবি শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
খয়লা থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর-এর একটি কপি বুমের হাতে আসে। তা থেকে বুম নিশ্চিত ভাবে জানতে পারে যে নাবালক অভিযুক্তরা মুসলমান নয়। দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত জনসংযোগ অধিকারিক অনিল মিত্তলও একই কথা জানান।
মিত্তল বুমকে বলেন, "অভিযুক্তরা নাবালক, তাই আমরা তাদের নাম প্রকাশ করতে পারব না, কিন্তু তারা মুসলমান নয়।"
বুম এফআইআর-এর যে কপি দেখেছে তা থেকে জানা যায় নিহত গাড়িচালক মনীশ কুমার রঘুবীর নগরের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় অভিযুক্তদের এক জন এসে তার সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করে। ৮ জুলাই ঘটনাটি ঘটে এবং এফআইআর-এ ঘটনাটি সম্পর্কে বিশদে যা লেখা হয়, "বাড়ির কাছেই একটি দোকানের সামনে আমার ভাই মনীশ দাঁড়িয়ে ছিল। তখন অভিযুক্তদের এক জন এসে তার সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করে। ওই অভিযুক্তের সঙ্গে তার দুই বন্ধু ছিল। আমি যখন আমার ভাইকে বাঁচাতে দৌড়ে যাই, তারা ছুরি দিয়ে আমাকে ভয় দেখায়। তখন অভিযুক্তদের এক জন আমার ভাইকে ধরে রাখে, আর অন্য দুজন বার বার তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। তার পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।"
সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে মনীশকে অন্তত ২৮ বার ছুরির আঘাত করা হয়। ওই জায়গায় লাগানো সিসিটিভিতে এই নারকীয় ঘটনার ভিডিও দেখা গেছে।
বুম নিশ্চিত ভাবে জেনেছে যে অভিযুক্তদের বয়স ১৭ এবং তারা ওই একই অঞ্চলের বাসিন্দা।
নীচে সম্পূর্ণ এফআইআর'র একটি পাতা দেওয়া হল তবে অভিযুক্তরা নাবালক বলে তাদের নাম গোপন রাখা হল।