সোশাল মিডিয়ায় ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের কনিষ্ঠতম শহীদ ওড়িশার ঢেঙ্কানালের নীলকান্তপুরের বাসিন্দা বিপ্লবী বাজি রাউতের ছবিকে মিথ্যে দাবি সহ ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুকের গ্রাফিক পোস্টে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে ছবিটি স্বাধীনতা যুদ্ধের আরেক শহীদ বাংলার ছেলে ক্ষুদিরাম বসুর এবং ছবিটি ফাঁসি কাঠ থেকে নামানোর পর তোলা হয়।
মঙ্গলবার ক্ষুদিরাম বসুর শহীদ দিবসের প্রেক্ষিতে এই ছবিটি জিইয়ে তোলা হয়েছে। ১৯০৮ সালের ১১ অগস্ট মুজফফরপুর ষঢ়যন্ত্রের মামলায় ক্ষুদিরাম বসুকেফাঁসি দেয় ব্রিটিশরা।
সাদা কালো শুয়ে থাকা একটি নাবালক ছেলের ছবি সহ গ্রাফিক পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, ''অনেক দুষ্প্রাপ্য একটি ছবি। ফাঁসি কাঠ থেকে নামানোর পর ক্ষুদিরাম বসুর ছবি। বন্দেমাতরম।''
ফেসবুক পোস্টে গ্রাফিক ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''১৯০৮ সালে আজকের দিনে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়।''
আরও পড়ুন: ব্রাজিলের বিমানের জ্বালানি ভরার পুরনো ভিডিওকে ভারতের রাফাল বলা হল
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভাইরাল হওয়া ছবিটি ক্ষুদিরাম বসুর নয়, এটি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে কনিষ্ঠতম শহীদ বাজি রাউতের ছবি।
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করলে নুয়াওড়িশা ও ইওডিশা প্রভৃতি একাধিক ওয়েবাসইটে ছবিটির হদিস পায় সেখানে ছবিটিকে বাজি রাউতের ছবি বলে দাবি করা হয়েছে। ১৯৩৮ সালের ১১ অক্টোবার নীলকান্তপুর ঘাটে ব্রিটিশ সেনাদের ব্যাটনে ঘায়ে খুলিতে আঘাত লেগে মারা যায় ১৩ বছর বয়সী বাজি রাউত।
ওড়িশার ঢেঙ্কানালে জন্ম বিপ্লবী বাজি রাউতের। বাজি রাউত ব্রিটিশ সেনাদের নীলকান্তপুর ঘাটে বাহ্মণী নদী পারাপার করতে অস্বীকার করলে রোষানলে পরে ব্রিটিশ সেনাদের। বন্দুকের ব্যাটন দিয়ে বাজি রাউতের মাথার খুলি ফাটিয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।
ওড়িশা সরকারের পোর্টালের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের তালিকাতেও রয়েছে বাজি রাউতের ওই একই মুখাবয়বের ছবি।
জ্ঞানপীঠ ও পদশ্রী প্রাপক বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক সচ্চিদানন্দ রাউতরায়ের লেখা "বাজি রাউত"-কবিতা ওড়িয়া সাহিত্যজগতের আঙিনা পেরিয়ে ঘরোয়া নাম হয়ে ওঠে।
২০১৭ সালের ৫ জুলাই প্রকাশিত ইন্ডিয়া টাইমসের প্রতিবেদনেও বাজি রাউতের ভাইরাল ছবিটি রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনে কনিষ্ঠ শহীদ বাজির জীবন পণ রাখার কথা।