Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

পর্দাফাঁস: না, আদিত্য পাঞ্চোলি পুলিশ সেজে সুশান্তের বাড়ি যাননি

বুম দেখে ওই ব্যক্তি হলেন বান্দ্রা থানার সহকারি পুলিশ আধিকারিক অবিনাশ নাদভেঙ্কেরি।

By - Nivedita Niranjankumar | 2 Oct 2020 3:35 PM GMT

এই বছরের আগের দিকে অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুকে ঘিরে নানা ষড়যন্ত্রের কাহিনীর এক স্বতন্ত্র জগৎ তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে একটি হল, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলী সুশান্ত সিং রাজপুতের বাড়িতে গিয়েছিলেন।

এই দাবিটি কিছুটা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে কারণ, পাঞ্চোলীর সঙ্গে চেহারায় মিল আছে সেই রকম এক পুলিশ অফিসারের উপস্থিতি নজরে এসেছে একটি ছবিতে। একাধিক সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে। সেগুলিতে ছবিটিকে ব্যবহার করে দাবি করা হয়েছে, এটি হল আরও একটি "প্রামাণ্য তথ্য" যা প্রমাণ করছে রাজপুতকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু দাবিটি মিথ্যে।
বুম দেখে, ভাইরাল ছবিতে যে পুলিশ অফিসারকে দেখা যাচ্ছে, তিনি হলেন বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত একজন অ্যাসিসটেন্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর (এপিআই)। রাজপুতের মৃত্যুর খবর পাওয়ায় উনি রাজপুতের বাড়ি গিয়েছিলেন। ওই পুলিশটিকে আমরা মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে নিয়োজিত এপিআই অবিনাশ নাদভেঙ্কেরি হিসেবে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।
আমরা আদিত্য পাঞ্চোলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, উনি অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সেই সময় উনি বাড়িতেই ছিলেন। উনি আরও বলেন, "এটা খুবই এক নির্বোধ ও অবাস্তব চিন্তা যে, পুলিশের পোশাক পরে আমি অপরাধের জায়গায় যাব।"
মুম্বাইয়ের ওই পুলিশ অফিসারটির ছবি বিভিন্ন ক্যাপশান সহ ফেসবুক ও টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। সেগুলির মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ক্যাপশনটিতে বলা হয়েছে, প্রমাণ নষ্ট করতে পাঞ্চোলী রাজপুতের বাড়ি গিয়েছিলেন।
ক্যাপশানটিতে লেখা হয়েছে, "ভুয়ো পুলিশ: মুম্বাই পুলিশের ছদ্মবেশে, প্রমাণ লোপাট করতে, পাঞ্চোলী এসএসআর-এর বাড়িতে যান। অন্য একটি ক্যাপশানে বলা হয়েছে, "দেখুন, তাঁকে মেরে ফেলার পর, পুলিশ সেজে তাঁর বাড়িতে অভিনেতা পাঞ্চোলী।
আর্কাইভের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
টুইটটির আর্কাইভ এখানে দেখুন।
রাজপুতের মৃত্যুর কয়েকদিন পর একই অভিযোগ ফেসবুকেও ভাইরাল হয়। এবং ফেসবুক গ্রুপগুলিতে সেটি কয়েক হাজার বার শেয়ার করা হয়। ফেসবুক পোস্টগুলিতে পুলিশ অফিসারের মুখের চারপাশে গোল দাগ দিয়ে পাঞ্চোলীর একটি ছবির সঙ্গে সেটি তুলনা করে তাঁদের চেহারার গঠন, চুলের ছাঁট, ভুরুর আকৃতির মধ্যে মিল দেখানো হয়েছে।

পোস্টটির লিঙ্ক এখানে দেখুন; সেটির আর্কাইভ সংস্করণ এখানে

পোস্টটির লিঙ্ক এখানে দেখুন; সেটির আর্কাইভ সংস্করণ এখানে
ভাইরাল পোস্টগুলিতে কালো মাস্ক-পরা একজন পুলিশকে একটি কালো ব্যাগে-পোরা একটি দেহ স্ট্রেচারে তুলতে দেখা যাচ্ছে। তাঁর সঙ্গে হাত লাগাচ্ছেন আরও কিছু পুলিশ ও সাধারণ কর্মী।
একই ছবি ভাইরাল হয়েছে ইউটিউবে-ও। সেখানে ক্যাপশানে দাবি করা হয়েছে যে, পুলিশ অফিসারটি ভুয়ো। এবং তিনি আসলে ছদ্মবেশে আদিত্য পাঞ্চোলী। সব ক'টি ভিডিওতেই একই ধরনের ক্যাপশন রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, "খুন চাঞ্চল্যকর খবর – ১৪ জুন সুশান্ত 
সিংহ
 রাজপুতের বাড়িতে পুলিশের পোশাকে আদিত্য পাঞ্চোলী- সুরাজ।"
Full View
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ওই পুলিশ অফিসার আদিত্য পাঞ্চোলী নন, বরং বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে নিয়েজিত মুম্বাই পুলিশের একজন আধিকারিক। আমরা তাঁকে বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনের অ্যাসিসটেন্ট ইন্সপেক্টর অবিনাশ নাদভেঙ্কেরি হিসেবে শনাক্ত করি। সুশান্তু সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর খবর পুলিশের কাছে খবর পৌঁছনর পর, যে পুলিশের দল তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল, তার মধ্যে ছিলেন নাদভেঙ্কেরি।
আমরা প্রথমে অবিনাশ পাঞ্চোলির সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সে দাবি উনি অস্বীকার করেন। উনি বলেন, "আমি পোস্টগুলি ও ছবিটি দেখেছি। লোকজনের বোঝা উচিৎ কী ধরনের গুরুতর অভিযোগ তাঁরা আমার বিরুদ্ধে আনছেন এবং তাও আবার সোশাল মিডিয়ায়।" উনি আরও বলেন, "তাঁদের কি ধারণা যে, এটা কোনও একটা সিনেমায় অপরাধের দৃশ্য যে, আমি পুলিশের পোশাক পরে সুশান্ত 
সিংহে
র বাড়িতে যাব। আমি বাড়িতে ছিলাম, আর এঁরা এই দাবি শেয়ার করছেন। কেন তাঁরা মনে করছেন যে, আমার বাড়িতে পুলিশের পোশাক থাকবে?"
পাঞ্চোলী আরও বলেন যে, ওই পোস্টগুলি ও অভিযোগটি হাস্যকর ও উদ্ভট হলেও, সেগুলি যথেষ্ট ঘোরতর ধরনের। "তাঁরা সূরজের (পাঞ্চোলীর ছেলে) ক্ষেত্রেও এমনটি করেন। বাড়ি থেকে কেউ একজন টি-শার্ট পরে বেরিয়ে আসছিলেন, তাঁর সঙ্গে সূরজের ছবি মেলান হয়। এই সময় সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে, যখন সোশাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছে তাই শেয়ার করা যায়।"
আমরা আসল ছবিটি ইনস্টাগ্র্যামে খুঁজে পাই। পেশাদার আলোকচিত্রী মানব মাগলানি ছবিটি তোলেন ও ১৪ জুন, যে দিন রাজপুত মারা যান, সে দিনই সেটি আপলোড করেন। তারকাদের ছবি তোলেন মাগলানি। তিনি দৃশ্যটি তিন দিক থেকে তুলেছিলেন।
মাগলানির সঙ্গে যোগাযোগ করলে, উনি বলেন ছবিতে পাঞ্চোলী নেই। তবে পুলিশ অফিসারের ব্যাজটি আরও স্পষ্ট দেখা যায়, তেমন ছবি উনি আমাদের দিতে পারেননি।
আমরা মুম্বাই পুলিশের এক সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি ছবিতে যে অফিসারকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে এপিআই অবিনাশ নাদভেঙ্কেরি বলে শনাক্ত করেন। এই সূত্র ধরে আমরা নাদভেঙ্কেরির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সকলের দেখার জন্য দেওয়া তাঁর একটি ছবির সঙ্গে ভাইরাল ছবিটি মিলিয়ে দেখি।
সেগুলির মধ্যে আমরা অনেকগুলি মিল খুঁজে পাই। যেমন, শরীরের গঠন, ভুরুর আকৃতি ও শার্টের ল্যাপেলে তিন-তারার পদমর্যাদা। ফেসবুকে নাদভেঙ্কেরির ছবি আমরা আরও খুঁটিয়ে দেখি। ফলে, তাঁর ডান হাতের কোনুইয়ের নীচে ট্যাটু বা উল্কি আমাদের নজরে আসে।
আতস কাঁচের সাহায্যে আমরা দেখি যে, ওই একই জায়গায়, একই উল্কি লক্ষ করা যাচ্ছে ভাইরাল ছবিটিতেও। নীচে সেটি দেখান হল।

চুলের স্টাইলের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ অফিসারটিকে পাঞ্চোলী বলে দাবি করেন। তাই আমরাও বিষয়টা খুঁটিয়ে দেখি। তাতে দেখা যায়, পাঞ্চোলী ও পুলিশ অফিসারের চুলের স্টাইলে মিল থাকলেও তা হুবহু এক নয়। তুলনা করার জন্য আমরা হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া তাঁর ছবিটি ব্যবহার করি।
আমরা প্রথমে পাঞ্চোলীর ছবির সঙ্গে এপিআই নাদভেঙ্কেরির ছবি মিলিয়ে দেখি। তারপর আমরা পাঞ্চোলীর ছবি আর রাজপুতের বাড়িতে পুলিশ অফিসারের ভাইরাল ছবিটি মেলাই।
তুলনাগুলি নীচে দেওয়া হল।

পাঞ্চোলীর চুলের চেয়ে পুলিশ অফিসারের চুল আরও ঘন। তাছাড়া দু'জনের চুলের ছাঁটও আলাদা।
ছবিগুলির মিল অমিলগুলি মিলিয়ে দেখার পর আমরা এপিআই নাদভেঙ্কেরির সঙ্গে যোগাযোগ করি। ভাইরাল-হওয়া দাবিটি সম্পর্কে উনি বিস্ময় প্রকাশ করেননি, কিন্তু বেশি কিছু বলতেও চাননি।
১৪ জুন, রাজপুতকে তাঁর বান্দ্রার ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ একটি আত্মহত্যার কেস নথিভুক্ত করে। সেই থেকে ঘটানাটি ফেসবুক ও টুইটারে একাধিক ভুয়ো খবর ও তথ্যের জন্ম দেয়। কিছু সংবাদ পরিবেশকও মিথ্যে খবর প্রচার করে। এই মামলাটি ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে কারণ একটি মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত সমান্তরাল তদন্তে নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো বলিউডের তারকাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। রাজপুতের জন্য মাদক জোগাড় করার অভিযোগে তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে এক সময় গ্রেপ্তার করে এনসিবি। কেসটি বর্তমানে সিবিআই তদন্ত করছে।

Related Stories