পরস্পর সম্পর্কহীন কতগুলো ছবি সোশাল মিডিয়ায় সাজিয়ে ছড়ানো হচ্ছে, যার একটিতে একজনকে বিরিয়ানি পরিবেশন করতে দেখা যাচ্ছে এবং অন্যগুলিতে অনেক ট্যাবলেট রাখা দেখা যাচ্ছে। ছবিগুলি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, কোয়েম্বাটুরের একটি রেস্তোরাঁয় ওই ট্যাবলেটগুলি মিশিয়ে হিন্দুদের বিরিয়ানি পরিবেশন করা হচ্ছে, যা খেলে তারা নির্বীর্য অর্থাৎ সন্তান-উত্পাদনে অক্ষম হয়ে যাবে কোয়েম্বাটুরের পুলিশ এক টুইটে এই গুজবটিকে ভুয়ো খবর বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং কার হ্যান্ডেল থেকে গুজবটি প্রথম ছড়িয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে।
২০২০ সালের ১ মার্চ জনৈক আর ডি সিং তার টুইটে এই ছবিগুলি শেয়ার করে ক্যাপশন দেয়: "হিন্দু ও মুসলমানদর জন্য এই হোটেলে আলাদা-আলাদা পাত্রে বিরিয়ানি রান্না করা হয়। হিন্দুদের বিরিয়ানিতে এমন ট্যাবলেট মিশিয়ে দেওয়া হয়, যা তাদের বীর্যহীন করে দেবে। কোয়েম্বাটুরের রহমান বিসমিল্লার মাশা আল্লা নামের রেস্তোরাঁ এই বিরিয়ানি বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। হুঁশিয়ার! ওরা সব দিক দিয়ে তোমাদের ক্ষতি করে চলেছে!"
ক্যাপশন থেকে কয়েকটি মূল শব্দ তুলে নিয়ে আমরা অনলাইনে খোঁজ করে দেখেছি, ফেসবুকেও এই পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেকে পক্ষাঘাতের বিষ-বড়ি মেশানোর ভিডিওটি কি সত্যি? একটি তথ্য যাচাই
তথ্য যাচাই
বুম ছবিগুলির খোঁজখবর করে দেখেছে, এগুলি ভারত ও শ্রীলঙ্কার পরস্পর সম্পর্কহীন কতগুলি ঘটনার জোড়াতালি। যেমন, একটি লোকের বিরিয়ানি পরিবেশন করার ছবিটি ২০১৬ সালের ৩০ জুন ইউটিউবে আপলোড হওয়া একটি ভিডিওর 'থাম্বনেল' থেকে নেওয়া। এটির ক্যাপশন ছিল: "ভারতীয় মুসলিমদের পরবে ৩০ জনের দম বিরিয়ানি তৈরি এবং রাস্তার খাবার।"
ট্যাবলেটের ছবিগুলো শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে নেওয়া, সেখানে কলম্বো পুলিশ ৪০ লক্ষ টাকার বেআইনি ওষুধ মজুত করার দায়ে বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করার খবর প্রকাশিত হয়।
কোয়েম্বাটুর পুলিশ গুজব ছড়ানো আর ডি সিং-এর টুইটের পত্রপাঠ জবাব দিয়ে টুইট করে, "এই টুইটার হ্যান্ডেলটি যেন কেউ বিশ্বাস না করে, কারণ এটি ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে।" তারা আরও জানায় যে, সাম্প্রদায়িক ক্যাপশন দিয়ে ছড়ানো এই গুজবের হোতাটিকে তারা চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মোম আছে, তাই জ্বলছে চকোলেট? একটি তথ্য যাচাই