কয়েকটি ছবির কোলাজে একটি সদ্যজাত মৃত শিশুর শরীরে এক ঘোরতর বৈকল্য লক্ষ করা যাচ্ছে। ছবিগুলি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং আলাদা আলাদা ভাবে দাবি করা হয়েছে যে, করোনাভাইরাস ও 'ব্ল্যাক ম্যাজিক' বা তন্ত্রমন্ত্রের ফলে শিশুটির ওই অবস্থা হয়।
বুম দেখে যে, বাচ্চাটি রাজস্থানের একটি গ্রামে অ্যানেনসেফালির মতো গুরুতর অস্বাভাবিকতা নিয়ে জন্মায়। এই অসুখে বাচ্চার মস্তিষ্ক ও করোটির সম্পূর্ণ অংশ তৈরি হয় না। এই ধরনের শিশুরা হয় মৃত জন্মায়, নয়তো জন্মানোর কিছু পরেই মারা যায়। এই অসুখের কোনও চিকিৎসা নেই। এ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন এখানে।
ভাইরাল পোস্টে দেখা যাচ্ছে, একজন চিকিৎসক একটি সদ্যজাত শিশুকে ধরে আছেন, যার মাথার অস্বাভাবিকতা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আর তাঁকে ঘিরে থাকা লোকজন ছবি তুলছেন বাচ্চাটির।
বাচ্চাটির ছবি বুমের হেল্পলাইনে আসে।
সতর্ক বার্তা: কোনও কোনও ব্যক্তির কাছে ছবিটি পীড়াদায়ক হতে পারে।ক্যাপশনটিতে বলা হয়, "গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: আমাদের কাছে খবর এসেছে যে রাজস্থানের আজমের জেলার নাগেলাও গ্রামের এক হাসপাতালে এক মেয়ে শিশুর জন্ম হয়েছে। জন্মানোর পরেই, শিশুটি বলে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ করতে দেশের সব মানুষকে তাদের ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে হলুদ-বাটা লাগাতে হবে। এর ফলে করোনাভাইরাস ঠেকান যাবে এবং মানুষজন নিরাপদে থাকবেন। এর পরই, ডাক্তারদের স্তম্ভিত করে দিয়ে বাচ্চাটি মারা যায়। তাই আমরা সকলকে তাদের ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নোখের ওপর হলুদ-বাটা লাগাতে অনুরোধ করছি। এটা ফেক নিউজ নয়।"
(হিন্দিতে লেখা মূল ক্যাপশন: आवश्यक सूचना:- अभी अभी जानकारी मिली है कि ग्राम नागेलाव वाया पीसांगन जिला अजमेर में एक बालिका का जन्म हॉस्पिटल में हुआ l बालिका ने जन्म लेते ही बोली कि भारत में जो कोरोना वायरस संक्रमण फैला हुआ है उसके बचाव के लिए भारत के प्रत्येक नागरिक को अपने दाएं पैर के अंगूठे के नाखून पर हल्दी का लेप (मेहंदी की तरह) लगाना है l इससे कोरोना का संक्रमण समाप्त हो जाएगा सभी नागरिक सकुशल रहेंगे l यह कहकर बालिका की उसी समय मृत्यु हो गई यह देखकर अस्पताल के डॉक्टर भी आश्चर्यचकित हो गए l अतः आपसे निवेदन है कि आप भी तत्काल इस तरह का लेप अपने दाएं पैर के अंगूठे के नाखून पर लगाकर कोरोना वायरस संक्रमण से अपना एवंअपने परिवार का जीवन को बचाएं l यह फेक न्यूज़ नहीं है सत्य घटना है l)তথ্য যাচাই
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বুম আসল ছবিগুলির খোঁজ করে, কিন্তু সেগুলির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর পর আমরা হিন্দি কি-ওয়ার্ড विचित्र बच्चा पैदा हुआ (বিচিত্র বাচ্চার জন্ম হয়েছে) দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করি। এর ফলে, ২০১৬ সালে প্রকাশিত 'নিউজ ১৮'-এর একটি রিপোর্ট আমরা পাই। দেখা যায়, ওই প্রতিবেদনেও একই ধরনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল।
বুম রাজস্থান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ওয়েবসাইট থেকে ডঃ ভাটির ফোন নম্বর জোগাড় করে। বর্তমানে ডঃ সুমের সিং ভাটি রাজস্থানের সিরোহিতে কালান্দ্রি কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
ডঃ ভাটি বুমকে বলেন, ভাইরাল ছবিতে ওনাকেই বাচ্চাটিকে ধরে থাকতে দেখা যাচ্ছে। "শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্মায়। কালান্দ্রির সিজিএইচ-এ বাচ্চাটি জন্মায় ১৯ মার্চ ২০২০ তে," বলেন ডঃ ভাটি।
ওই বাচ্চাটির সঙ্গে তন্ত্রমন্ত্র ও করোনাভাইরাসের বিষয়টি জড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ তোলা হলে, ডঃ ভাটি তা উড়িয়ে দেন। উনি বলেন, "করোনাভাইরাস লোকজনকে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অনেক সুযোগ করে দিয়েছে।"
ডঃ ভাটি বুমকে বলেন, বাচ্চাটি অ্যানেনসেফালির শিকার হয়েছিল। ওই অসুখে মাথার অনেক অংশ তৈরি হয় না। ওনার হাতে বেশ কয়েকটি ওই ধরনের শিশুর জন্ম হয়।
২০১৬ সালে 'লিমকা বুক অফ রেকর্ডস'–এ তাঁর নাম ওঠে। কারণ, একমাসে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক অ্যানেনসেফালিতে আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয় তাঁর হাতে।