ছয় সেকেন্ডের ভিডিও। তাতে এক আহত জামিয়া মিলিয়ার ছাত্রকে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। সেটি শেয়ার করা হচ্ছে এই মিথ্যে দাবি সমেত যে, আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯'এ, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে জেএমআই-এর ছাত্রদের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ভিডিও ক্লিপটি শেয়ার করা হচ্ছে।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ইউনিভারসিটির উপাচার্য নাজমা আখতার সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল দাবিটি খণ্ডন করেছেন। উনি বলেছেন প্রতিবাদ চলা কালে কোনও ছাত্র মারা যায়নি।
বিকেলের দিকে বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। বাস ও বেশকিছু দু-চাকার যান পুড়িয়ে দেওয়ার খবর আসে। বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং তাদের লক্ষ করে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। "প্রায় ২০০ ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছে," ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯-এ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান উপাচার্য আখতার। সেই সঙ্গে উনি পড়ুয়াদের ওপর কঠোর পুলিশি পদক্ষেপের নিন্দা করেন।
অনেক সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ভাইরাল ক্লিপটি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে বলা হয়, "জামিয়া মিলিয়ার প্রতিবাদে আমরা আমাদের এক বন্ধুকে হারিয়েছি। দিল্লি পুলিশের দ্বারা এক বর্বর হত্যা...কোটা, রাজস্থান, থেকে শাকির।"
টুইটগুলি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। টুইটগুলি আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
আহত ছাত্রটির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি-করা ক্লিপটি ভাইরাল হলে, আলিয়া ইউনিভারসিটির সাংবাদিকতা ও জনসংযোগ বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর রিয়াজ সেটিকে গুজব বলে খারিজ করে দেন। উল্লেখ্য, রিয়াজ জেএমআইয়ের প্রাক্তন ছাত্র। "আমরা নিশ্চিত ভাবে জানাচ্ছি যে জামিয়ার কোনও ছাত্র মারা যায়নি। আমরা এটাও জানাতে চাই যে, সব আটক ছাত্রদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে," টুইট করে বলেন রিয়াজ।
ফেসবুকে ভাইরাল
একই ক্যাপশন দিয়ে সার্চ করলে দেখা যায় যে, বিভ্রান্তিকর দাবি সমেত ভিডিওটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
সাংবাদিক বৈঠকে উপাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ইউনিভারসিটির মধ্যে ও তার চারপাশে প্রতিবাদ চলাকালে কোনও ছাত্র মারা যায়নি। "একটি জোরাল গুজব ছড়িয়েছে যে দু'জন ছাত্র মারা গেছে। একথা আমরা সম্পূর্ণ অস্বীকার করছি। ওই ঘটনায় আমাদের কোনও ছাত্র মারা যায়নি," জানান উপাচার্য আখতার।
তাঁর ব্যক্তব্য ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ড সময় থেকে শোনা যাবে।
রিয়াজ বুমকে বলেন জামিয়ার প্রাক্তনীরা ঘটনার ওপর নজর রাখছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে, ছাত্রটি জীবিত। "জামিয়ার সেই সব প্রাক্তনীরা যাঁরা সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন নানান ক্ষেত্রে, তাঁরা ঘটনার গতিপ্রকৃতির ওপর নজর রাখছিলেন। আমাদের নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও আছে। সকাল তিনটেয় জানা যায় বিক্ষোভের সময় আহত ছাত্রটি স্থিতিশীল আছে," বলেন রিয়াজ।
এছাড়াও, জেএমআই-এর ছাত্র প্রতিনিধি নৌশাদ আহমেদ রাজার সঙ্গেও কথা বলি আমরা। উনি বলেন, ছাত্রটি এখন দিল্লির এইমসের ট্রমা সেন্টারে সুস্থ হয়ে উঠছে।
"জেএমআই-এর এক ছাত্র চোখে আঘাত পেয়েছে। সেও এখন এইমসের ট্রমা সেন্টারে সুস্থ হয়ে ওঠার দিকে। তবে, কোনও প্রাণহানি হয়নি," বলেন রিয়াজ।