মিথ্যে একটি ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন সিবিআইকে। ওই পোস্টগুলিতে অভিনেতার মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর একটি চিঠির ছবি রয়েছে। আর সেই সঙ্গে অমিত শাহ ও রাজপুতের ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়ে স্বামীর চিঠিকে সিবিআই তদন্তের জন্য অমিত শাহর নির্দেশ বলে শেয়ার করছেন।
১৪ জুন দুপুরে, সুশান্ত সিংহ রাজপুতকে তাঁর মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মৃত্যুর পর নেটিজেনরা বলিউডে প্রযোজক ও শিল্পীদের মধ্যে পক্ষপাতিত্বের ঘটনার নিন্দা করেন। গলায় ফাঁস দেওয়ার ফলে শ্বাসরোধই রাজপুতের মৃত্যুর কারণ বলে চিহ্নিত করা হয় ময়না তদন্তে। মুম্বাই পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে।
ছবিগুলির সঙ্গে বাংলায় লেখা হয়, "সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তভার সিবিআইকে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার। এবার সব সত্যি সামনে আসবে।"
ওই ধরনের একটি পোস্টের আর্কাইভ সংস্করণ
এখানে দেখা যাবে।
অমিত শাহ সিবিআইকে রাজপুতের মৃত্যু তদন্ত করার ভার দিয়েছেন, এই মর্মে কোনও খবর প্রকাশিত হয়নি এখনও।
বুম নিশ্চিত হতে পেরেছে যে, ভাইরাল চিঠিটি হল রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর লেখা চিঠি।
১৫ জুন আইনজীবী ঈশকরণ ভান্ডারি চিঠির ছবি
টুইট করেন ও সেই সঙ্গে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের লিঙ্কও দিয়ে দেন, যেখানে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এই বিষয়ে লাইভ আলোচনা করছিলেন। সেই আলোচনায় স্বামী বলেন, রাজপুতের মতো এক তরুন প্রতিভা বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলেন।
দুটো চিঠিকে তুলনা করলে দেখা যায় সেগুলি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লেখা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর সেই চিঠি।
অভিনেতার মৃত্যু তদন্ত করার জন্য স্বামী ঈশকরণ সিং ভান্ডারিকে নিয়োগ করেন।
এবিপি নিউজ জানায় যে, আইনজীবী ঈশকরণ মুম্বাইয়ের পুলিশ কমিশনারকে লেখা এক চিঠিতে সুশান্ত সিং রাজপুতের বাড়ি 'সিল' করে সেটিকে 'সংরক্ষণ' করতে অনুরোধ করেন। স্বামী ওই আইনজীবীকে এই মর্মে একটি
নোট পাঠান, যাতে বলা হয় পুলিশ যেন ওই কাজটি ১১ জুলাই করে।
অমিত শাহ চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেন
তাঁর চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে, অমিত শাহ জন অধিকার পার্টির পাপ্পু যাদবকে চিঠে দেন। পাপ্পু যাদব রাজপুতের মৃত্যুর ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছিলেন। যাদব ১৪ জুলাই টুইট করে এ কথা জানান।
মিড-ডে সংবাদ মাধ্যমকে মহারাষ্ট্রের গৃহমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেন, "আমি টুইটগুলি ও প্রচারটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আমার মনে হয় না সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন আছে। এই ধরনের কেস মুম্বাই পুলিশ দক্ষতার সঙ্গেই হ্যান্ডেল করে। এবং পেশাগত রেশারেশি সহ তাঁরা সব দিকই খতিয়ে দেখছেন। এখনও পর্যন্ত আমরা কোনও অভিসন্ধিমূলক কাজের ইঙ্গিত পাইনি। তদন্ত শেষে, তার ফলাফল জানানো হবে।" মুম্বাই পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৩৪ ব্যক্তির
জবানবন্দি রেকর্ড করেছে।