জওহরলাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র সূরি কৃষ্ণানের ছবি এখন সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, রবিবার ইউনিভারসিটি চত্বরে এক মারমুখী জনতার হামলার পর তিনি নাকি আঘাতের ভেক ধরেছিলেন। কৃষ্ণান ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য। ঘটনার আগের ও পরের কয়েকটি ছবির কোলাজে তাঁকে মাথায় ও হাতে ব্যান্ডেজ সহ দেখা যাচ্ছে এবং পরে সেগুলি আর দেখা যাচ্ছে না।
বুম কৃষ্ণানের সঙ্গে কথা বলে। অনলাইনের দাবিগুলি নস্যাৎ করে উনি বলেন যে, তার ক্ষতগুলিতে স্টিচ করার পর ডাক্তার ব্যান্ডেজগুলি খুলে দেন।
ওই ভাইরাল দাবিটি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ও ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যরা শেয়ার করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ওই মিথ্যে দাবি যে, 'কৃষ্ণানের আঘাত সাজানো', ভাইরাল হয়ে যায়।
Comedy show of the left comrades
— Ashish Chauhan (@AshishSainram) January 7, 2020
SFI leader Soori from JNU after being "brutally injured" in Delhi
Seen completely in high spirits while welcomed with garlands in Trivandrum within 24 hours.#TukdeTukdeGang #JNUHiddenTruth #JNUViolence pic.twitter.com/8LqoiycnPY
Hey @TheAcademy, why no Oscar for SFI's Comrade Soori? pic.twitter.com/DALtl2Tgra
— Political Kida (@PoliticalKida) January 7, 2020
Meet #JNU #SFI leader #Soori admitted to hospital 4 'serious injuries'. From ICU, flew to Kerala, landed in Trivandrum in 24hrs. His stitches were removed & wounds were healed in 24 hrs🤔
— Prabin Padhy (@prabinkp) January 7, 2020
Total Bollywood👏🤪
(*Got from social media)@amitmalviya @ABVPVoice @abvpjnu @ABVPDelhi pic.twitter.com/sEC6cnTjiVFull View
তথ্য যাচাই
কৃষ্ণান তার মেডিক্যাল রেকর্ড এবং ডাক্তারের চেম্বারে তোলা ক্ষতের ছবি বুমের সঙ্গে শেয়ার করেন।
ব্যান্ডেজের ছবি
৫ জানুয়ারি বিকেলে কৃষ্ণান এক মারমুখী জনতার দ্বারা আক্রান্ত হন। কৃষ্ণান বুমকে বলেন, "আমার আঘাত লাগে এবং হেল্থ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় আমায়। আমার মাথা থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করার জন্য সেখানে ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়। আমাকে হাত নাড়তেও বারণ করা হয়। সেখানেই ছবিটা তোলা হয়, যেখানে আমায় হাঁটতে দেখা যাচ্ছে।"
দ্বিতীয় ছবিতে ওনাকে একটি হুইল চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। গলা থেকে ঝোলানো ব্যান্ডেজে তার হাত আটকান। উনি জানালেন ছবিটি অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ (এআইআইএমএস) তোলা।
"এর পর আমাদের এআইআইএমএস-এর ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার ক্ষতগুলি সেলাই করা হয়। গলা থেকে ঝোলানো ব্যান্ডেজে আমার হাত ঝুলিয়ে রাখা হয় যাতে সেটি বেশি নাড়াচাড়া না করা যায়। ছবিতে আমার মাথায়ও ব্যান্ডেজ দেখা যাচ্ছে। সেখানেই স্টিচগুলি আছে," বলেন কৃষ্ণান।
ব্যান্ডেজ ছাড়া ছবি
তৃতীয় ছবিতে কৃষ্ণানকে লাল শার্টে দেখা যাচ্ছে। শরীরে কোনও ব্যান্ডেজও নেই। জানতে চাওয়া হয়, কোথায় তোলা হয় ছবিটি।
কৃষ্ণান বলেন, "৬ জানুয়ারি বিকেলে আমি তিরুবনন্তপুরম পৌঁছাই। সেখানে ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই-এর সদস্যরা আমায় অভ্যর্থনা জানান। মিডিয়ার অনেকে এবং আমার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। তৃতীয় ছবিটা সেখানেই তোলা।"
উনি আরও বলেন, কিছু সময় পরে তার মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দেওয়া হয়, যাতে স্টিচগুলি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। "আমায় বলা হয়, স্টিচ করার পর ব্যান্ডেজ বেঁধে রাখে না। ব্যান্ডেজ না থাকা মানে ক্ষত নেই, এমনটা নয়।"
মিথ্যে পোস্ট শেয়ার হতে শুরু করলে, সেটিকে খণ্ডন করে কৃষ্ণান একটি ভিডিও রেকর্ড করেন। উনি সেটি বুমের সঙ্গে শেয়ার করেন। "আমার হাত ভাঙ্গেনি। কিন্তু আমার কাঁধ ফুলে আছে আর হাতেও চোট লেগেছে। আমার পক্ষে হাত নাড়ানোই কঠিন। এবং সেটা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে।"
এআইআইএমএস-এর বহির্বিভাগ কৃষ্ণানের চিকিৎসা হয়। মেডিক্যাল রিপোর্টে বলা হয় 'তার দু'হাত ফুলে আছে এবং ব্যাথা রয়েছে। আর মাথায় আছে গভীর কাটার চিহ্ন'।
মেডিক্যাল রিপোর্ট নীচে দেখুন।