আখের খেতের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীর ছবিকে উত্তর প্রদেশের হাথরাসে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রয়াত নির্যাতিতার ছবি বলে ভুল শনাক্ত করা হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। বুম মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা বলেন, ছবিতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে তাঁরা চেনেন না।আখের খেতের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীর ছবিকে উত্তর প্রদেশের হাথরাসে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রয়াত নির্যাতিতার ছবি বলে ভুল শনাক্ত করা হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। বুম মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা বলেন, ছবিতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে তাঁরা চেনেন না।
বুম মৃতের ছবি জোগাড় করে নিশ্চিত হয় যে, দুটি ছবি দুই ভিন্ন ব্যক্তির।
উত্তরপ্রদেশের হাথরাস থেকে আসা ১৯ বছর বয়সী এক দলিত মেয়ে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ২৯ সেপ্টেম্বর মারা যায়। বলা হচ্ছে, ১৪ সেপ্টেম্বর ৪ উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ওই মহিলাকে গণধর্ষণ ও অমানুষিক নির্যাতন করে। তিনি যখন মাঠে তাঁর পোষ্যদের জন্য খাদ্য জোগাড় করছিলেন, তখন তিনি আক্রান্ত হন। পরে অভিযুক্ত চার ব্যক্তিকেই গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনা সম্পর্কে আরও পড়ুন
এখানে। ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরের দিকে, মৃতের দেহ পরিবারের অনুমতি ছাড়াই পুলিশ দাহ করে দিলে, এক নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২৯ সেপ্টেম্বর, ওই নির্যাতিতার মৃত্যুর পর, সোশাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাঁর প্রতি ন্যায়বিচার দাবি করে একাধিক হ্যাশট্যাগ টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপে ট্রেন্ড করছে। সোশাল মিডিয়ায় ওই প্রতিবাদের মধ্যে, একটি মেয়ের ছবি বারবার টুইট আর শেয়ার করা হয় এই বলে যে, উনিই হলেন সেই প্রয়াত নির্যাতিতা।
বেশ কিছু যাচাই করা টুইটার হ্যান্ডেল ও ফেসবুক প্রোফাইল মৃত মহিলার নাম সমেত ছবিটি শেয়ার করে। বুম পোস্টগুলি এখানে দেয়নি কারণ ভারতের আইন অনুযায়ী, একজন ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ করা যায় না।
একই দাবি সমেত ছবিটি বেশ কিছু টুইটার হ্যান্ডেল ও ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়েছে।
বুম নির্যাতিতার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে। তিনি জানান, যে ব্যক্তিকে ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি তাঁর বোন নন।
"একটি মাঠের সামনে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে...না, উনি আমার বোন নন," মৃতের ভাই বুমকে বলেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যই ভাইরাল ছবির ওই মেয়েটিকে চেনেন না।
আমরা নির্যাতিতার ওপর তোলা একটি ভিডিও-ও জোগাড় করি। সেটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে সেটিকে আমরা ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে মিলিয়ে দেখি। দেখা যায়, তাতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে তাঁরা আলাদা ব্যক্তি।
ভাইরাল ভিডিওতে যে মেয়েটিকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে বুম শনাক্ত করতে পারেনি।
ফেসবুকে কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম একটি পোস্ট খুঁজে পায় যেখানে একই ভাইরাল ছবি ব্যবহার করা হয়েছে এবং ক্যাপশনে ছবিতে থাকা মেয়েটির পরিচিতি খুঁজে পাওয়ার কথা বলা হয়।
হিন্দিতে ক্যাপশনে লেখা ছিল, "দয়া করে এটিকে বেশী করে শেয়ার করুন। দ্রষ্টব্য – এই ছবিতে থাকা মেয়েটি, যাকে হাথরাস কান্ডের সাথে জড়িয়ে শেয়ার করা হচ্ছে, সে আমার বোন, সে ২০১৮ সালে চণ্ডীগড়ের একটি হাসপাতালে মারা যায় চিকিৎসকের গাফিলতির কারনে। তখন সেখানকার পুলিশ এই বিষয়ে আমাদের এফআইআর নিতে চাইছিলো না তাই আমরা এই ছবি ব্যবহার করে একটি প্রচার করেছিলাম। সেই কেসটি এখনও চন্ডীগড়ে চলছে। আপনাদের কাছে একটি আবেদন যে এই ছবিকে হাথরাসের ঘটনার সাথে জড়িয়ে শেয়ার করবেন না। ধন্যবাদ।"
(হিন্দি: ज्यादा से ज्यादा शेयर करे । नोट- ये फोटो जो आप लोग हाथरस केस के साथ जोड़कर शेयर कर रहे है ये फोटो मेरे बहिन की है जिसकी मौत 2018 में चंडीगढ़ के हॉस्पिटल में हुई थी ।डॉक्टर की लापरवाही से उस वक़्त वहाँ की पुलिस FIR नही लिख रही थी तब हम लोगो ने ये फोटो डालकर कंपेन चलाया था। उसका केस चंडीगढ़ में चल रहा है कृपा आप लोगो से निवेदन है ये फोटो हाथरस केस के साथ जोड़कर न शेयर करे और शेयर होने से रोके। धन्यवाद)
বুম এই ছবিটিকে ফেসবুকের একটি প্রোফাইলে খুঁজে পায় যেখানে ২৫ জুলাই ২০১৮ তে ছবিটিকে আপলোড করা হয়েছিল।
এই পোস্টের ক্যাপশনে হিন্দিতে লেখা ছিল, "আমি বিচার চাই। দয়া করে আমাকে সমর্থন করুন। আজ আমার বোন, কাল সে অন্য কারও বোন হতে পারে, যতদিন এই দেশে চিকিৎসকরা টাকার কাছে বিবেক বেঁচে চিকিৎসা করবে। এটি প্রথম এবং শেষ ঘটনা নয়। যতদিন পর্যন্ত এইরকম চিকিৎসক থাকবে,এইরকম ঘটনা চলতে থাকবে। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।"
(হিন্দি: मुझे न्याय चाहिए किस कारण से मेरी बहन की मौत हुई है plz support me आज मेरी बहन है कल किसी और की हो सकती जबतक ऐसे डॉक्टर इस देश में रहेंगे। जो पैसे के लिए अपनी इंसानियत बेच दी ये कोई आज पहली केश नही है और आखिरी भी नही है जबतक ऐसे डॉक्टर रहेंगे ये होता रहेगा और कोई न कोई इनके लापरवाही का शिकार होता रहेगा। plz help me.)
বুম ফেসবুক ব্যবহারকারী অজয় যে যাদব, যে এই ছবিটি আপলোড করেছিল, তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছে, তাঁর প্রতিক্রিয়া পেলে প্রতিবেদনটি সংস্করণ করা হবে।