কৃষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এক বৃদ্ধার ছবি এই দাবি সহ ভাইরাল হয়েছে যে, তিনি হলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-এর বিরুদ্ধে শাহিন বাগের প্রতিবাদ মঞ্চের বিলকিস বানো (৮২), যিনি শাহিন বাগ দাদি বা দিদিমা বলে খ্যাত।
বুম বানোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, উনি জানান যে, ছবির ওই বৃদ্ধা উনি নন। উনি আরও বলেন যে, কৃষকদের প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার কথা উনি ভাবছেন, কিন্তু এখনও তা করেননি।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের প্রতিবাদে ও সেটি বাতিলের দাবিতে, পাঞ্জাবের কৃষকদের উদ্যোগে 'দিল্লি চলো' পদযাত্রায় হাজার হাজার কৃষক যোগ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। বিগত তিন দিন ধরে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের চাষিরা দেশের রাজধানীর দিকে হেঁটে চলেছেন। দিল্লি-হরিয়ানা বর্ডারে, পুলিশের অবরোধ ও কাঁদানে গ্যাসকে উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলে, কৃষকদের অবশেষে ২৭ নভেম্বর দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
দুটি ছবির একটি সেট শেয়ার করা হচ্ছে। একটিতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময়, বিলকিস বানোকে শাহিন বাগের অবেরোধে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয়টিতে, মাথায় হলুদ স্কার্ফ জড়ানো এক বৃদ্ধাকে লাঠি হাতে কৃষকদের সঙ্গে দিল্লির দিকে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশানে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, বানো এখন কৃষক সেজেছেন।
"শাহিন বাগের দিদিমা এখন পাঞ্জাবি কৃষক," বলা হয়েছে ক্যাপশানটিতে।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের প্রতিবাদে ও সেটি বাতিলের দাবিতে, পাঞ্জাবের কৃষকদের উদ্যোগে 'দিল্লি চলো' পদযাত্রায় হাজার হাজার কৃষক যোগ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। বিগত তিন দিন ধরে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের চাষিরা দেশের রাজধানীর দিকে হেঁটে চলেছেন। দিল্লি-হরিয়ানা বর্ডারে, পুলিশের অবরোধ ও কাঁদানে গ্যাসকে উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলে, কৃষকদের অবশেষে ২৭ নভেম্বর দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
দুটি ছবির একটি সেট শেয়ার করা হচ্ছে। একটিতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময়, বিলকিস বানোকে শাহিন বাগের অবেরোধে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয়টিতে, মাথায় হলুদ স্কার্ফ জড়ানো এক বৃদ্ধাকে লাঠি হাতে কৃষকদের সঙ্গে দিল্লির দিকে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশানে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, বানো এখন কৃষক সেজেছেন।
"শাহিন বাগের দিদিমা এখন পাঞ্জাবি কৃষক," বলা হয়েছে ক্যাপশানটিতে।
পোস্ট দেখা যাবে এখানে; আর্কাইভ দেখা যাবে এযানে।
বলিউডের তারকা কঙ্গনা রানাউত, ছবিগুলি তাঁর টুইটে উদ্ধৃত করে রিটুইট করে মিথ্যে দাবি করেছেন। উনি বলেছেন, দুটি ছবিতে যে দুই বৃদ্ধাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা আসলে একই ব্যক্তি। এখন ডিলিট করে দেওয়া টুইটটিতে লেখা হয়েছিল, "হা হা, সেই একই দিদিমা যাঁকে টাইম ম্যাগাজিনে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ভারতীয় বলে দেখানো হয়...১০০ টাকা দিলেই যাঁকে পাওয়া যায়..."
বলিউডের তারকা কঙ্গনা রানাউত, ছবিগুলি তাঁর টুইটে উদ্ধৃত করে রিটুইট করে মিথ্যে দাবি করেছেন। উনি বলেছেন, দুটি ছবিতে যে দুই বৃদ্ধাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা আসলে একই ব্যক্তি। এখন ডিলিট করে দেওয়া টুইটটিতে লেখা হয়েছিল, "হা হা, সেই একই দিদিমা যাঁকে টাইম ম্যাগাজিনে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ভারতীয় বলে দেখানো হয়...১০০ টাকা দিলেই যাঁকে পাওয়া যায়..."
আর্কাইভ দেখা যবে এখানে।
দেখতে এখানে ক্লিক করুন; আর্কাইভের জন্য এখানে।
ফেসবুকে ভাইরাল
ভাইরাল ক্যাপশনটি দিয়ে সার্চ করলে দেখা যায় যে, মিথ্যে ক্যাপশন সহ ছবি দু'টি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল
ভাইরাল ক্যাপশনটি দিয়ে সার্চ করলে দেখা যায় যে, মিথ্যে ক্যাপশন সহ ছবি দু'টি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমে বিলকিস বানোর ছেলে মনজুর আহমেদ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। উনি জানান, বিলকিস বানো এখনও কৃষক আন্দোলনে অংশ নেননি। এবং ছবিতে যে বৃদ্ধাকে দেখা যাচ্ছে তিনি বিলকিস নন।আহমেদ আরও জানান, উনি ওই মহিলার ছবিটি শেয়ার করেন ও সেই সঙ্গে বলেন যে, বিলকিস 'দাদি'ও দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেবেন। "হলুদ স্কার্ফ-পরা মহিলা উনি নন। পদযাত্রায় হেঁটে-চলা ওই বয়স্ক মহিলার ছবি আমি ফেসবুকে পোস্ট করি। আর বলি যে, বিলকিস দাদিও খুব তাড়াতাড়ি কৃষকদের প্রতিবাদে অংশ নেবেন। আমার মনে হয়, কে্উ বোধহয় দু'জনকে গুলিয়ে ফেলে। তারপর আমি আমার পোস্টটি ডিলিট করে দিই," বলেন আহমেদ।
বানো শিঘ্রই কৃষকদের প্রতিবাদে অংশ নেবেন বলে আহমেদ যে ফেসবুক পোস্টটি করেছিলেন, সেটা তিনি বুমকেও পাঠান। ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, "আমার দেশের বাঘিনীরা, আপনাদের সমর্থন করতে আমি আসছি। বিলকিস দাদি।"
বিলকিস বানোর সঙ্গে কথা বললে, উনি জানান ভাইরাল ছবিতে যে বৃদ্ধাকে দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তি উনি নন। উনি আরও বলেন যে, কৃষকদের আন্দোলনে উনি এখনও যোগ দেননি, কিন্তু শীঘ্রই দেবেন।
"আমি শাহিন বাগে আমার বাড়িতে বসে আছি। ওই ছবিতে আমি নেই। যে মহিলার ছবি শেয়ার করা হচ্ছে, আমি সেই ব্যক্তি নই। আমি কাল আন্দোলনে যোগ দেব," বানো বুমকে একথা বলেন ২৮ নভেম্বর ২০২০।
আমরা বানোর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিই। নীচের ভিডিওটিতে তাঁকে ভাইরাল পোস্টের দাবি অস্বীকার করতে দেখা যাচ্ছে।
"আমি শাহিন বাগে আমার বাড়িতে বসে আছি। ওই ছবিতে আমি নেই। যে মহিলার ছবি শেয়ার করা হচ্ছে, আমি সেই ব্যক্তি নই। আমি কাল আন্দোলনে যোগ দেব," বানো বুমকে একথা বলেন ২৮ নভেম্বর ২০২০।
আমরা বানোর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিই। নীচের ভিডিওটিতে তাঁকে ভাইরাল পোস্টের দাবি অস্বীকার করতে দেখা যাচ্ছে।
তাছাড়া, ভাইরাল ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, আমরা কয়েকটি রিপোর্ট দেখতে পাই যেগুলিতে ওই বৃদ্ধার ছবি ব্যবহার করা হয়। ২৭ নভেম্বর, হিন্দি সংবাদপত্র 'অমর উজালা' একটি রিপোর্টের সঙ্গে ছবিটি ছাপে। প্রতিবেদনটির শিরোনামে বলা হয়, 'কৃষকরা অবরোধ ভেঙ্গে দিল্লির দিকে এগোচ্ছে'। ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, 'পদযাত্রায় এগিয়ে চলেছেন বয়স্ক মহিলারা। ফটো সিরসা।'
তবে আমরা দেখি যে, ১৩ অক্টোবর ২০২০ তে, ফেসবুক পেজ 'মেরা গাঁও, মেরা স্বভিমান'-এ ওই মহিলার ছবিটি প্রধান ছবি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ছবিটিতে যে পতাকা দেখা যাচ্ছে, সেটিতে যা লেখা রয়েছে তা অনুবাদ করে আমরা দেখি, সেটি ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের পতাকা। এবং দেখা যায়, ওই ছবিটিতেও মহিলারা একই হলুদ দোপাট্টা পরে আছেন। রিপোর্টগুলি দেখুন এখানে।
ওই বৃদ্ধার ছবির উৎস বুম নিজস্ব উপায়ে জানতে পারেনি।
কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে ভুয়ো খবর বুম আগেও খণ্ডন করেছে। যেমন, প্রতিবাদী কৃষকদের ওপর জলকামান ব্যবহার করার পুরনো ছবিকে সাম্প্রতিক বলে চালানো হলে, বুম সেটিকে মিথ্যে প্রমাণ করে।