একটি ছবিতে দাবি করা হয়েছে যে আমেরিকায় চলা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্রতিবাদে একটি পোস্টার দেখানো হয়েছে, যাতে লেখা ছিল 'আমরা আরববাসী নই যে আমাদের মারবে আর আমরা চুপ করে থাকব।' এই ছবিটি ভুয়ো এবং ফোটোশপ করে তৈরি করা হয়েছে।
২৫ মে ২০২০ সালে মিনেসোটার মিনেপলিস শহরে পুলিশি হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মৃত্যু হয়। এক জন শ্বেতাঙ্গ পুলিশকর্মীর হাতে তাঁর মৃত্যু হয়। সারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু এবং জাতিগত বিদ্বেষের কারণে অবিচারের নিন্দা করে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন শহরের মানুষের সমর্থন পেয়েছে এই প্রতিবাদ।
এই নকল ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্রতিবাদে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্টারের পাশে 'আমরা আরববাসী নই যে আমাদের মারবে আর আমরা চুপ করে থাকব' লেখা পোস্টারটি দেখা যাচ্ছে। আরবের বহু সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এই ছবিটি শেয়ার করেছেন। এই ছবিটি তাঁদের মধ্যে প্রভূত অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
এই টুইটটি আরব সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ইরাকি পার্লামেন্টের সদস্য সাদন আলদলিমিও এই ছবিটি টুইট করেন। তাঁর টুইটের অনুবাদ, "আমেরিকার প্রতিবাদীরা যে সব স্লোগান তুলেছেন তার মধ্যে যেটি দুঃখদায়ক: আমরা আরববাসী নই যে আমাদের মারবে আর আমরা চুপ করে থাকব।" টুইটটির আর্কাইভড ভার্সন
এখানে দেখা যাবে।
অন্য এক ফেসবুক ব্যবহারকারীও এই ভুয়ো ছবিটি শেয়ার করেছেন, সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, 'আমেরিকার প্রতিবাদে যে ব্যানার ব্যবহার করা হয়েছে, তা শুধু আরববাসীর নয়, সমস্ত ইসলামের গালে একটি থাপ্পড়। এই ব্যানারে বলা হয়েছে আমরা আরববাসী নই যে আমাদের মারবে আর আমরা চুপ করে থাকব।'
আসল ছবিটি তুলেছিলেন রয়টর্সের চিত্র সাংবাদিক জশুয়া। তিনি ২০১৬ সালে আমেরিকার ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্রতিবাদের সময় এই ছবিটি তুলেছিলেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে এই প্রতিবাদ হয়েছিল।
এখানে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পুলিশের গুলিতে নিহত আল্টন স্টার্লিং এবং ফিলান্ডো কাস্টাইলের মৃত্যুর বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ফিলান্ডো কাস্টাইল নামে এক কালো মানুষকে মিনেসোটায় ট্রাফিক আইন ভাঙ্গার জন্য গুলি করা হয় এবং নিজের গাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর ঠিক আগে ২০১৬ সালেরই ৫ জুলাই লুইসিয়ানায় আল্টন স্টার্লিং পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ওয়াশিংটন ডিসিসহ সারা আমেরিকায় ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার
প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
এই মর্ফড ছবিটি বেশ কিছুদিন ধরে ইন্টারনেটে দেখা যাচ্ছে। রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বুম গউড মা নামে একটি আরব নিউজ ওয়েবসাইট দেখতে পায়। এই ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালে আসল ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার কিছু দিন পরেই এই মর্ফড ছবিটির তথ্য যাচাই করা হয়।
২০১৬ সালের ১৪ জুলাই
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে যা লেখা হয় তার অনুবাদ করে দেখা যায় ওই ছবিটি নকল এবং সেখানে প্রতিবাদের আসল ছবিটির সঙ্গে এর যোগসূত্রও দেখা যায়।
আসল ছবিটি এখানে দেখা যাবে।