কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা ভারত আর চিনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের এক গুচ্ছ পুরনো ফুটেজ টুইট করে সেগুলিকে গালওয়ান উপত্যকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ছবি বলে চালিয়েছেন।
বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে এক টুইট বার্তায়, সুরজেওয়ালা লেখেন, "@ড. জয়শঙ্কর আমরা যেন তথ্য গুলিয়ে না ফেলি। দয়া করে সোশাল মিডিয়ায় ভিডিওটি দেখুন। এবং আমায় বলুন কেন কোনও আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখা হয়নি (৩৪ সেকেন্ডে দেখুন গালওয়ান)। এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার চুক্তির কথা বলে, নিরস্ত্র সেনাদের স্পর্শকাতর সামরিক পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দেওয়ার পক্ষে সাফাই গাওয়া বন্ধ করুন।"
তাঁর টুইটে সুরজেওয়ালা গালওয়ান উপত্যকার উল্লেখ করেন। সোমবার রাতে সেখানে ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। তার ফলে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হন। চিনা সেনাদের মধ্যেও হতাহতের কথা শোনা গেছে। ১৯৭৫-এর পর, চিন ও ভারতের মধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ। ওই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে যে, সেনারা কেন তাঁদের বন্দুক থেকে গুলি চালালেন না, যখন তাঁদের পিটিয়ে মারা হচ্ছিল বলে খবরে প্রকাশ।
কিন্তু ভিডিওগুলি কি সত্যিই গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের ছবি?
আরও পড়ুন: না, এটা নিহত কর্নেল সন্তোষ বাবু'র মেয়ের ছবি নয়
তথ্য যাচাই
সুরজেওয়ালার টুইট-করা দুটি ফুটেজ থেকে কিছু প্রধান ফ্রেম বেছে নিয়ে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তার ফলে, ফুটেজগুলি যে গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের অনেক আগে থেকেই ইন্টারনেটে ছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রথম ফুটেজ থেকে আমরা একটি ইউটিউব ভিডিওর সন্ধান পাই্। ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তে সেটি আপলোড করেছিল 'ওয়াইবি ভ্লগ'। সেটির শিরোনামে বলা হয়, "অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে, ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) সঙ্গে বচসায় লিপ্ত চিনা সেনারা।" ভিডিওটি ঠিক কবে তোলা হয়েছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি বুম। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, সেটি গালওয়ান সংঘর্ষের আগে তোলা হয়েছিল এবং তার সঙ্গে ওই ফুটেজের কোনও সম্পর্ক নেই।
দ্বিতীয় ফুটেজটি আমাদের আরও একটি ইউটিউব ভিডিওর সন্ধান দেয়। তার শিরোনামে বলা হয়, "দেখুন: চিনের সেনারা ভারতের এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করলে, বাধা দেয় জওয়ানরা পার্ট-১"। এই ভিডিওটি ৭ জুন ২০২০ তে আপলোড করে 'ডেকান হেরাল্ড'। ক্যাপশনে ডেকান হেরাল্ড জানায় যে তারা ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
ডেকান হেরাল্ড আরও বলে যে, ভিডিওটির কোনও তারিখ নেই এবং "মনে করা হচ্ছে সেটি জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তোলা হয়। সেখানে ভারতীয সেনাদের দেখা যাচ্ছে।"
ভিডিওটির উৎস সম্পর্কে আমরাও নিশ্চিত হতে পারি নি। তবে সেটি যে তিন বছর আগে তোলা হয়েছিল এবং গালওয়ানের সঙ্গে যে সেটির কোনও সম্পর্ক নেই, সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।