কার্ফিউ এবং লকডাউনের নির্দেশ অগ্রাহ্য করার দায়ে রেওয়া-র এক মন্দির পুরোহিতের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ব্যবস্থাগ্রহণ সোশাল মিডিয়ায় সাম্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে ভাইরাল করা হয়েছে। ভুয়ো অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, নিগ্রহকারী পুলিশ ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের এবং পুরোহিত সে সময় মন্দিরে একাই ছিলেন।
ঘটনার বিশদ বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, "সিভিল লাইন্স পুলিশ স্টেশনের স্টেশন হাউস অফিসার একটা খবর পান যে, প্রায় শদুয়েক লোক ওই মন্দিরে জড়ো হয়েছে। অফিসার রাজকুমার মিশ্র তখন একদল পুলিশ নিয়ে মন্দিরে পৌঁছন। পুলিশ দেখেই সমবেত জনতা দৌড়ে পালাতে থাকে। রাগের চোটে তখন মিশ্র পুরোহিতের হাতের দণ্ডটা কেড়ে নিয়ে তা দিয়েই তাঁকে মারতে থাকেন।"
সুপার আবিদ খান জানান, "মন্দিরের ভিতর পুলিশের ওই আচরণ অন্যায় এবং অপ্রয়োজনীয় ছিল। আমরা ওঁর বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছি। তদন্তের ফলাফল না জানা পর্যন্ত অফিসার মিশ্রকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অপসারিতও করা হয়েছে।
অথচ সোশাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকজন শেয়ার করেছেন যে, আবিদ খানই সেই পুলিশ অফিসার, যিনি এই অপকর্মটি ঘটিয়েছেন। শেয়ারকারীদের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জাতীয় মুখপাত্র বিজয়শংকর তেওয়ারির যাচাই-করা টুইটার হ্যান্ডেলও রয়েছে।
कहा जा रहा है कि रीवा में मंदिर के पुजारी को शयन आरती करते समय पुलिस ने पीटा तथा पूजा का सामान बिखेर दिया,यहां के एस पी आबिद खान हैं,दोषी पुलिस वाले को तत्काल दण्डित किया जाए। pic.twitter.com/a6UKpV5Ppr
— Vijay Shankar Tiwari (@VijayVst0502) April 3, 2020
অতীতে অনেকবার সাম্প্রদায়িক পোস্ট শেয়ার করে ভুয়ো খবর ছড়ানোয় সিদ্ধহস্ত সুদর্শন নিউজ টুইট করে, পুরোহিত যদিও সম্পূর্ণ একাই মন্দিরে ছিলেন, তবুও পুলিশ তাঁকে মারধর করা হয়—এটা বোঝাতে যে পুরোহিতটি লকডাউনের কোনও নিয়ম ভাঙেননি। পোস্টটিতে একটা সাম্প্রদায়িক মোচড় দিতেই বলা হয়, জেলার পুলিশ সুপারের নাম আবিদ খান।
मध्यप्रदेश रीवा के मन्दिर में अकेले पूजा कर रहे पुजारी को बेरहमी से मारा.
— Sudarshan News (@SudarshanNewsTV) April 2, 2020
पैरों से फेंक दिया गया जल और बूटों से कुचला पूजा स्थल.
चीखता रहा पुजारी- "मां के नवरात्रि का अंतिम दिन है., दीपक जलाने आया हूँ साहब"#आबिद_खान हैं रीवा पुलिस के SP..@ChouhanShivraj @CMMadhyaPradesh pic.twitter.com/umTFoFddDT
পুরোহিত মন্দিরে সম্পূর্ণ একা ছিলেন বা সেখানে কোনও ভিড় ছিল না, এই দাবি নস্যাৎ করে মধ্যপ্রদেশের জনসংযোগ দফতর এক টুইটে জানায়। "লকডাউন সত্ত্বেও জনতা মন্দিরে ভিড় জমিয়েছিল বলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।" হিন্দিতে লেখা ওই টুইটে দফতর জানায়, "যে-পুলিশ অফিসার পদক্ষেপ করেন, তাঁর নাম রাজকুমার মিশ্র এবং যে-অফিসারকে ছবিতে দেখানো হয়েছে, তিনি মোটেই এসপি আবিদ খান নন। মিশ্রর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে।"
রেওয়া রেঞ্জের ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ পুলিশের সরকারি ফেসবুক পেজেও ঘটনাটি বিশদে বিবৃত করে জানানো হয়েছে, অফিসার রাজকুমার মিশ্রকে ওই ঘটনার পর তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর জায়গায় স্টেশন হাউস অফিসারের পদে নিয়োগ করা হয়েছে শিবপূজন সিং বিষেণকে।
আবিদ খান বুমকে জানান, সোশাল মিডিয়ায় সাম্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে পোস্ট শেয়ার হওয়ার আগেই দায়ী অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়। "মন্দিরের পুরোহিতকে আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল যাতে মন্দিরে কোনও ভিড় না হয় এবং যেহেতু পুরোহিত নিজেও একজন সরকারি কর্মচারী, তাই লকডাউনের নিয়মকানুনও তাঁর সম্যক জানা থাকার কথা। তা সত্ত্বেও তিনি পুজোর বন্দোবস্ত করেন এবং তা দেখতে ভিড়ও জমে যায়।" ঘটনার পরেই অবশ্য পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং পুরোহিতও থানায় এসে লকডাউন ভাঙার জন্য ক্ষমা চেয়ে যান।
"রেওয়া-র লোকজন সরকারি তদন্ত শুরু হওয়ার পর ঘটনাটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু সহসা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট শেয়ার হতে লাগল যে আমিই নাকি ওই পুরোহিতকে মারধর করেছি এবং পুরোহিত নাকি সে সময় মন্দিরে একাই ছিলেন! আমাদের গোটা পুলিশ বাহিনী এবং শহরের নাগরিকরাও অবশ্য বুঝে গেলেন কীভাবে ভুয়ো খবর প্রকৃত ঘটনার চেয়েও দ্রুত গতিতে সফর করে।"
আইন ভাঙার জন্য পুরোহিতের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়েছে কিনা জানতে চাইলে খান বলেন— "না, আমরা তেমন কিছু করিনি। বস্তুত ধর্মীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে আমরা এই সব ক্ষেত্রে কোনও অভিযোগ দায়ের করিনা, কেবল তাঁদের বোঝাই, এ ভাবে ভিড় হতে দেওয়াটা কতটা বিপজ্জনক এবং ক্ষতিকর। ওই পুরোহিতের বেলাতেও সেটাই করা হয়েছে।"