২০১৯ সালে পুলিশ আজেরবাইজানের রাজধানীতে বিক্ষোভকারীদের দমন করছে, এমন একটি দৃশ্যের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে—এভাবে স্পেনের পুলিশ সেখানে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে জারি হওয়া লকডাউন গায়ের জোরে কার্যকর করছে।
ভিডিওটির ক্যাপশন হল: "এটা স্পেনের লকডাউনের দৃশ্য। তোমরা ভারতীয়রা ভাগ্যবান যে, এখানে পুলিশ শুধু লাঠি-পেটা করছে।"
কিন্তু বুম দেখেছে, ভিডিওটি আজেরবাইজানের রাজধানী শহর বাকু'র এবং এর সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জারি হওয়া লকডাউনের কোনও সম্পর্ক নেই।
পাঁচ মিনিটের এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, দাঙ্গা মোকাবিলার পোশাকে সজ্জিত পুলিশ রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের মারধর করছে এবং তারপর কয়েকজনকে আটক করে ভ্যানে তুলছে। ভিডিও ফুটেজটিতে বেশ কয়েকটি 'জাম্প-কাট' রয়েছে, যার ফলে মনে হয় একটি দীর্ঘতর ভিডিওর বিভিন্ন অংশ জুড়ে-জুড়ে এটি তৈরি করা হয়েছে।
নীচে ভিডিওটি দেখুন। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই ক্যাপশন সহ ভিডিওটি অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। হোয়াটসঅ্যাপেও ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে।
ক্লিপটি এমন সময় ভাইরাল করা হয়েছে, যখন ভারত করোনাভাইরাস অতিমারির সংক্রমণ ঠেকাতে ২১ দিনের লকডাউন-এর মধ্য দিয়ে চলেছে। এই ভাইরাসে ইতিমধ্যেই ভারতে ৯৮৭ জন সংক্রামিত হয়েছে এবং ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কহীন এই ছবি দুটি কোভিড-১৯ লকডাউন চলাকালীন পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা নয়
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট নিয়ে অনুসন্ধান করে দেখেছে, অনেক জায়াগতেই ভিডিওটি রয়েছে। তবে মূল ভিডিওটি আজেরবাইজানের বাকু শহরে তোলা, ২০১৯ সালের অক্টোবরে।
মূল ভিডিওটি নীচে দেখুন:
বুম জেনেছে, ভিডিওটি ২০১৯ সালে আজেরবাইজানে সংগঠিত একটি বিক্ষোভ মিছিলের। ৮, ১৯ ও ২০ অক্টোবরের তারিখে বাকু-তে একের-পর-এক বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছিল।
প্রতিবাদীরা সব রাজনৈতিক দলের জোটে শামিল হয়ে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছিলেন এবং এই প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রে অর্থনৈতিক অসাম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন। বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছিল যে, আজেরি পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করে এবং কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকও করে।
১৯ অক্টোবরের এক রিপোর্টে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানায়, পুলিশ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদী জোটের প্রধান পপুলার ফ্রন্টের নেতা সহ ৮০জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে।