এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার কারণে গুজরাতে এক কিশোরীর উপর নির্যাতন চালানোর একটি অস্বস্তিকর ভিডিও এই ভুয়ো দাবি সহ প্রচার করা হচ্ছে যে, এটি উত্তরপ্রদেশে এক দলিতকন্যাকে কুয়ো থেকে জল তোলার জন্য উচ্চবর্ণের লোকেদের হাতে নিগ্রহ করার দৃশ্য।
বুম গুজারাত পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে, ঘটনাটি রাজ্যের ছোটে উদয়পুর জেলার এবং এই মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে এক পরিবারের ৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে।
ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে শেয়ার হচ্ছে, কন্নড় ভাষায় দেওয়া যার ক্যাপশনের অনুবাদ করলে দাঁড়ায়: "দেখুন, কীভাবে যোগীর রাজ্যে দক্ষিণপন্থী বাহুবলীরা উচ্চবর্ণের এক ব্যক্তির কুয়ো থেকে জল তোলার অপরাধে এক দলিতকন্যাকে নিগ্রহ করছে !"
ভিডিওটি অস্বস্তিকর হওয়ায় আমরা সেটি এই প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত করিনি।
বুম আগেই প্রতিবেদনের শুরুতেই জানিয়েছে, ঘটনাটি গুজরাতের ছোটে উদয়পুর জেলার এবং কিশোরীটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার পরিবারের লোকেরা তাকে পিটিয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার এম এস ভাবর বুমকে জানান, "ঘটনাটি রঙপুর থানার অন্তর্গত বিলওয়াত গ্রামের এবং তিন-চার দিন আগে ঘটেছে। মেয়েটির বয়েস বছর ১৬, এবং যারা তাকে মারধর করছে, তারা সকলেই তার বৃহত্তর পরিবারেরই সদস্য। মেয়েটি ওই গ্রামেরই ২০ বছরের একটি যুবকের সঙ্গে মধ্যপ্রদেশে পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকেরা শীঘ্রই তাকে ধরে ফেলে গ্রামে ফিরিয়ে আনে এবং তারপর মারধর করে। ঘটনার ভিডিওটি পুলিশের হাতে পৌঁছতেই ২৭ মে পুলিশকে সতর্ক করা হয়। প্রথমে আমরা রঙপুর থানার মাধ্যমে মেয়েটিকে খুঁজে পাই, তারপর তার সঙ্গে কথা বলার পর মারধর করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।"
তিনি আরও জানান, ২৭ মে তারিখেই রঙপুর থানা ১৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে, তার মধ্যে ৭ জনকে এ পর্যন্ত ধরা গেছে, বাকিরা ফেরার।
ভাবর সোশাল মিডিয়ার ভাইরাল দাবিকে অস্বীকার করে খণ্ডন করেন এবং জানান এটি উত্তরপ্রদেশে কোনও দলিতকন্যার উপর উচ্চবর্ণের লোকেদের নির্যাতনের ঘটনা নয়, গুজরাটের ঘটনা। মেয়েটি আদিবাসী পরিবারের এবং ভিডিওতে যাদের নিগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে, তারা কেউই বাইরের লোক নয়, সকলেই মেয়েটির নিজের পরিবারেরই সদস্য। তিনি বলেন: "এর মধ্যে কুয়ো থেকে জল তোলার কোনও গল্প নেই। প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার কারণেই তাকে মারধর করা হচ্ছিল এবং আমরা সেই প্রেমিকটির বিরুদ্ধেও অপহরণের মামলা করেছি, যেহেতু সে নিজে প্রাপ্তবয়স্ক অথচ মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক।"