ঘুমিয়ে পড়ার সময় তিনটি চিতাকে এক ব্যক্তির জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকার একটি কাটছাঁট করা ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় এই বলে ভাইরাল হয়েছে যে এটি রাজস্থানের সিরোহি এলাকায় পিপলেশ্বর মহাদেব মন্দিরের একটি ঘটনা। বুম দেখেছে, ঘটনাটি দক্ষিণ আফ্রিকার একটি চিতা প্রতিপাসন কেন্দ্রের।
ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে বর্ণনা করা হয়েছে, এই তিনটি চিতাই মন্দিরের এক কর্মীর আদর খেতে-খেতে এভাবে ঘুমিয়ে পড়তে অভ্যস্ত।
এটির ক্যাপশনে লেখা: "ভিডিওটি পিপলেশ্বর মহাদেব মন্দিরের (সিরোহি)l সেখানে এই তিনটি চিতার পরিবারই এভাবে মন্দির-সেবকের সঙ্গে ঘুমোতে অভ্যস্ত l"
একই বিবরণী সহ লোকসভার প্রাক্তন সদস্য এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদও ভিডিওটি টুইট করেছেন। টুইটটি দেখুন
এখানে এবং তার আর্কাইভ বয়ান
এখানেl
ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট যেখানে একটি লোককে চিতাবাঘের সাথে গাঁ ঘেষাঘেষি করে শুতে দেখা যায়
ফেসবুকেও ভিডিওটি একই ব্যাখ্যা সহ ভাইরাল হয়েছেl এ রকম একটি পোস্টের আর্কাইভ বয়ান দেখুন
এখানে।
ফেসবুক ভিডিওর স্ক্রিনশট যেখানে বলা হয় সিরোহির পিপলেশর মহাদেব মন্দিরে একটি লোক তিনটি চিতার সাথে শুয়ে আছে
'চিতার সঙ্গে ঘুমনো মানুষ'—এই শব্দগুলি দিয়ে গুগল-এ খোঁজখবর করে বুম ইউ-টিউবে ডল্ফ ভোল্কার-এর আপলোড করা একটি দীর্ঘতর ভিডিওর সন্ধান পায়। গত বছরের জানুয়ারিতে এটি আপলোড হয়। ভল্কারের গ্রাহক সংখ্যা ৪ লক্ষেরও বেশি।
ভিডিওর বর্ণনাটা এই রকম: "চিতারা কি ঠান্ডা কংক্রিটের মেঝে পছন্দ করে, নাকি গরম কম্বল, বালিশ এবং একজন বন্ধু! তিনটি চিতার সঙ্গে রাত্রিযাপন!" এই বর্ণনা থেকেই আমরা জানতে পারি যে, ভল্কার হলেন একজন বন্যপ্রাণি প্রেমিক, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার চিতা প্রতিপালন কেন্দ্র 'চিতা-অভিজ্ঞতা'য় তাদের সঙ্গে রাত কাটানl এই বিশেষ ভিডিওতে ভল্কার পর্যবেক্ষণ করেছেন মানুষের সান্নিধ্যের উষ্ণতা পেলে প্রাণিদের আচরণে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে।
ইউটিউবে ভল্কার তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছেন: "আমাকে এই চিতাগুলির সঙ্গে রাত্রিযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কারণ আমি এদের বড় হতে দেখেছি এবং অতীতে এদের সঙ্গে একটা সম্পর্কও তৈরি করে নিয়েছি। আমার মনে হয়, এটা খুবই বড় ব্যাপার যে এই চিতাগুলো আমাকে এতটাই বিশ্বাস করে ও পছন্দ করে যে, তাদের সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায়ও রাতে আমার কোল ঘেঁষে শুতে এবং নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে দ্বিধা করে না।"
বুম
টুইটারেও খোঁজ নিয়ে দেখেছে, একই দিনে ভল্কার সেখানেও এই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন।
ভল্কারের ফেসবুক পেজটির নাম '
চিতার সঙ্গে ফিসফিস' এবং নিজের সম্পর্কে তাঁর লেখা, তিনি জীববিজ্ঞানের একজন ডিগ্রিধারী এবং বন্য প্রাণিদের আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করায় উৎসাহী। তিনি নিজেও একটি চিতা প্রতিপালন কেন্দ্র তৈরি করতে আগ্রহী এবং সে জন্যই দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছেন।
এ ছাড়াও আমরা ২০২০ সালের জুন মাসে এই ভিডিওটি বিষয়ে
নিউজ-১৮-এর একটি প্রতিবেদন পেয়েছি, যেটি সোশাল মিডিয়ায় রীতিমত হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিল। প্রতিবেদনটিতে ভারতীয় বন-আধিকারিক প্রবীণ কাসওয়ানের একটি টুইটেরও উল্লেখ রয়েছে এই দুর্ধর্ষ ভিডিওটির বিষয়ে।