সোশাল মিডিয়ায় পৃথিবী গ্রহের একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করে ভুয়ো দাবি জানানো হচ্ছে যে, এগুলি ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ এর পাঠানো ছবি, যে-মহাকাশযানটি ২০১৯ সালের ২২ জুলাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে।
বুম-এর হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও (৭৭০০৯০৬১১১) এই ছবিগুলি পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে এই দাবির সত্যতা।
ফেসবুকে ভাইরাল
ভাইরাল হওয়া পোস্টটির ক্যাপশন: ‘চন্দ্রযান-২ থেকে পাঠানো পৃথিবীর ছবি। কী দৃষ্টিনন্দন সব ছবি!’
একই ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে খোঁজ চালিয়ে আমরা দেখি, সেখানেও এই পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে:
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
চন্দ্রযান-২ এর ঘোষিত লক্ষ্য হল, চাঁদের দক্ষিণ মেরুপ্রদেশে অবতরণ করা, মহাকাশ থেকে পৃথিবীর ছবি তোলা নয়।
১ম ছবি
গুগল সার্চ করে দেখা গেছে, নাসার ওয়েবসাইটে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ অ্যাসট্রোনমি পিকচার অফ দ্য ডে শিরোনামে হানা গার্স্টাইনের ইলাস্ট্রেশনের এই ছবিটিই দেওয়া হয়েছিল।
২য় ছবি
এই ছবিটি ১০ সেকেন্ডের একটি শাটারস্টক ভিডিও-র স্ক্রিনশট, যার নাম দেওয়া হয়—সকালের পৃথিবীর উপর আলো।’
৩য় ছবি
এটিও শাটারস্টক থেকেই নেওয়া একটি ছবি, যেটিকে সৃষ্টি করেন অ্যালান উস্টার, নাম দেন—“মহাকাশে পৃথিবী গ্রহের উপর সূর্যোদয় ও চাঁদ।”
৪র্থ ছবি
গুগুল-এ অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্য টেলিগ্রাফ সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবিটি বিষয়ে জানানো হয় যে, ছবিটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নভোচরদের তোলা। নভোচরদের তোলা এই ছবিটিতে রাশিয়ার কুরিল দ্বীপে অবস্থিত সারিচেভ আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাতের ফলে ধোঁয়া, বাষ্প ও ছাইয়ের বিশাল উদ্গীরণ দেখা যাচ্ছে।
৫ম ছবি
ছবিটির অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, এটি মহাকাশ থেকে তোলা কোনও ফোটোগ্রাফ নয়, বরং ওয়ালপেপারের টেমপ্লেট হিসাবেই এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
৬ষ্ঠ ছবি
খোঁজখবর করে দেখা গেল, এটি ২০১৪ সালের পুরনো একটি ছবি, যা নানা ওয়েবসাইটে ব্যবহার হয়েছে। তবে এটির উত্স কী, তা জানা যায়নি।
৭ম ছবি
এই ছবিটি পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুর, যা নাসা কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করেছে বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে।
আরও পড়ুন: অগ্নি-৫ উৎক্ষেপণের আগে পালিত ধর্মীয় আচারগুলিকে চন্দ্রায়ন-২-এর ঘটনা বলে শেয়ার করা হচ্ছে
আরও পড়ুন: পৃথিবী থেকে মঙ্গল: ইসরোর ইতিবৃত্ত