রবিবার একটি ফেসবুক পেজ একটি ভিডিও শেয়ার করে। সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির এক যুব নেতা কাশ্মীর স্বাভাবিক বলে দবি করেন। কিন্তু ভিডিওটিতে তিনি নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রাখেন।
‘প্রেস্টিটিউট’ নামের এক ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়। ক্যাপশনে বলা হয়, “কাশ্মীরের পরিস্থিতি একজন কাশ্মীরির কাছ থেকে...এটা রাহুল গান্ধীকে এক্সপোজ করবে।”
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পোস্টটি ৬০০ বার শেয়ার করা হয়েছিল।
এক মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি আসলে একটি সেলফি ক্লিপ। তাতে এক ব্যক্তি দাবি করছেন যে কাশ্মীর শান্ত। সেখানে স্কুল, কলেজ আর সরকারি অফিস খোলা আছে। আর উপত্যকায় কোনও ধরনের কারফিউ জারি নেই।
ব্যক্তিটি আরও দাবি করেন যে, সেনাবাহিনী বিনাপয়সার চিকিৎসা ক্যাম্প খুলেছে। সেখানে নিঃখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। এবং কাশ্মীরি যুবকরা পুরোপুরি সেনাবাহিনীকে সমর্থন করছে।
তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যে খবরের এক অভিযান চালাচ্ছে। এবং উনি সাধারণ মানুষকে ওই সব ভুয়ো ভিডিও আর টুইটার বিশ্বাস না করতে অনুরোধ করেন।
বুম প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর ওই পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। পোস্টটি আর্কইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
ওই পোস্টের ওপর যে সব মতামত আসে, তার মধ্যে একটিতে বলা হয়, ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি হলেন বিজেপি কর্মী আকিব মির।
আকিব মিরের টুইটার অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পরিচিতিতে বলা আছে যে, উনি একজন বিজেপি কর্মী। ‘মির’ দিয়ে সার্চ করলে, ‘স্টেট অবজারভার’ নামের এক ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সামনে আসে।
মির ওই ভিডিওটি ২৩ অগস্ট ২০১৯ তারিখে টুইট করেন। সেটি এখনও তাঁর টুইট প্রোফাইলে লাগানো আছে। সেখানে মির ভুয়ো পরিচয় দেননি।
ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের চরিত্র পাল্টে দেওয়ার এক হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন। সে্ই দিন থেকে ২৬ অগস্ট ২০১৯-এর মধ্যে ২১ দিন কেটে যায়। সপ্তাহশেষের খবরে বলা হয় ল্যান্ডলাইন যোগাযোগ ফের চালু করা হচ্ছে। কিন্তু রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় ইন্টারনেট ব্যবস্থা এখনও বন্ধ আছে।কিছু অঞ্চলে, বিশেষ করে শ্রীনগরের সৌরা এলাকায়, বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদের খবর পাওয়া যায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিসগুলি খুলেছে। কিন্তু স্কুলগুলি এখনও ফাঁকা। অবিভাবকরা তাঁদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না।
কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায়, অনলাইনে প্রতিবাদের যেসব ছবি আর ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে, সেগুলি পুরনো। এ বিষয়ে বেশ কিছু ভুয়ো তথ্য বুম ইতিমধ্যেই খন্ডন করেছে।
তার কয়েকটি প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে।