২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশের আমরোহাতে রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এক বিজেপি নেতা মদন বর্মা (Madan Verma) মহিলাদের হাতে প্রহৃত হওয়ার হওয়ার ঘটনাকে বিভ্রান্তিকর দাবি সহ সোশাল মিডিয়াতে সাম্প্রতিক ঘটনা বলে ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুকে পোস্টে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে আমরোহার বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) মহিলাদের হাতে প্রহৃত হলেন।
বুম দেখে ভাইরাল ছবির ব্যক্তি আমরোহার বিধায়ক নন। ২০১৮ সালে রেশন দুর্নীতিতে মদতের অভিযোগে মহিলাদের হাতে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা প্রহৃত হন।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবি দুটির একটিতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন মহিলা ধাওয়া করছেন গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তিকে। অন্য ছবিটিতে দেখা যায় ওই ব্যক্তির পাঞ্জাবিটি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে।
ছবি দুটি শেয়ার করে ফেসবুক পোস্টে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বিজেপি বিধায়ক-কে জুতা-চপ্পল-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করলেন মহিলারা। এই ঘটনার নিন্দা করি, কেননা আমাদের মানসিকতা বিজেপির মত নয়। পাশাপাশি, এটাও মনে রাখার দরকার রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, এমন একটা দিন আসবে জনগণ বিজেপি নেতাদের তাড়া করে মারবে। সেই ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। এবং বিজেপির বিদায় ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে।''
তথ্য যাচাই
বুম 'বিজেপি নেতাকে জুতো পেটানো উত্তরপ্রদেশ', 'মহিলার হাতে নিগৃহীত বিজেপি নেতা' প্রভৃতি কিওয়ার্ড সার্চ করে ভয়েজ অফ হিন্দি নামে ওয়েব পোর্টালে ২০১৮ সালের ৫ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়।
প্রতিবেদনটির শিরোনাম, "আরমরোহা: বিজেপি নেতাকে মহিলাদের চপ্পল জুতো দিয়ে বেধড়ক মার।" (মূল হিন্দিতে:"अमरोहा: बीजेपी नेता की महिलाओं ने की चप्पल-जूतों से जमकर पिटाई")
ওই প্রতিবেদনে লেখা ঘটনার সারমর্ম হল, ওই গেরুয়া পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তি হলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা মদন বর্মা। গ্রামে তিনটি রেশন দোকান থাকলেও মহিলারা রেশন পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন।
রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও কার্ড তৈরিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন মহিলার।
বিষয়টি নিয়ে আগে স্থানীয় বিজেপি নেতা মদন বর্মার কাছে অভিযোগ জানালে তিনি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে রেশন ডিলারের পক্ষ নেন। বিক্ষোভ চালাকালীন উত্তেজিত হয়ে এক মহিলা চপ্পল খুলে জুতো পেটা (Shoes hurled) শুরু করে মদন বর্মাকে। অন্যান্য সব মহিলারা একজোট হয়ে তাড়া করে মদনকে। এই সময় মহিলাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মদন বর্মার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়।
গুজরালা টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই সময় জেলাস্তরে বৈঠক চলছিল বিজেপি নেতাদের। সে সময় উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রী সভার দুই মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
বুম যাচাই করে দেখেছে মদন বর্মা স্থানীয় বিজেপি নেতা তিনি আমরোহার বিধায়ক নন। ঘটনাটি নিয়ে ৬ জুন ২০১৮ নিউজ১৮ হিন্দি প্রকাশিত রিপোর্টের ভিডিও দেখা যাবে নিচে।