'আজতক-এ' প্রকাশিত, হায়দরাবাদে (Hyderabad) একটি বিস্ফোরণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মিথ্যে শিরোনামের স্ক্রিনশট সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। হিন্দি প্রতিবেদনটির শিরোনামে বলা হয়েছে, 'হায়দরাবাদ: গৌলিগুডা গোল মসজিদে রাসায়নিক বিস্ফোরণ, গুরুতর আহত ২'।
স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বুম জানতে পারে যে, ২ জুলাই-এর ওই বিস্ফোরণটি, যেটিকে রাসায়নিক বিস্ফোরণ বলে অনুমান করা হচ্ছে, সেটি হায়দরাবাদের অফজলগঞ্জে একটি পয়ঃপ্রণালীতে ঘটে। অথচ, সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি ঘটে একটি মসজিদে। ওই বিস্ফোরণে এক ব্যক্তি নিহত হন ও একজন আহত হন। আজতক তাদের হিন্দি প্রতিবেদনটি আপডেট করে সেটির শিরোনাম বদল করলেও, তাদের বাংলা রিপোর্টটির বিভ্রান্তিকর শিরোনামটি পালটানো হয়নি।
আজতক-এর প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট সাস্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে।
(হিন্দিতে লেখা শিরোনাম: हैदराबाद: गौलीगुडा गोल मस्जिद में केमिकल ब्लास्ट, 2 लोग गंभीर रूप से घायल)
স্ক্রিনশটটি শেয়ার করা হয়েছে একটি ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে।
সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "পরীক্ষা সফল হয়েছে"।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: सफल परीक्षण किया गया)
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। একই সাম্প্রদায়িক দাবি সমেত অন্যান্য পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে দেখুন।
কিছু সংবাদ ওয়েবসাইট, যেমন 'ইনখবর' ও যাচাই করা ইউটিউব চ্যানেল '১০টিভি' মিথ্যে শিরোনাম সহ ঘটনাটি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
যাচাইয়ের জন্য স্ক্রিনশটটি বুমের হেল্পলাইনেও আসে।
আরও পড়ুন: সৌদির রাজা সলমনের সামনে মাথা নত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর? ছবি ভুয়ো
তথ্য যাচাই
'কেমিক্যাল ব্লাস্ট গৌলিগুডা' – এই শব্দগুলি দিয়ে বুম কি-ওয়ার্ড সার্চ করে। তার ফলে, ওই ঘটনাটি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পাওয়া যায়।
১২ জুন, ২০২২-এ, 'দ্য নিউজ মিনিট'-এ প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, হায়দরাবাদের আফজলগঞ্জ থানার অন্তর্গত এলাকার গৌলিগুডা'য় ঘটনাটি ঘটে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, 'অভিযোগ, দু'জন ব্যক্তি একটি ম্যানহোলে রাসায়নিক পদার্থ ঢালার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। তার ফলে এক ব্যক্তি প্রাণ হারান'।
রিপোর্টটিতে ওই মৃত ব্যক্তিকে ভরত বট্টাড বলে শনাক্ত বরা হয়। এবং, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, আহত ব্যক্তিটি হলেন মৃত ব্যক্তির বাবা গোপাল বট্টাড।
'নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত বট্টাড-এর বাবা একটি দোকান চালাতেন, যেখানে প্লাস্টিক, ফাইবারের সামগ্রী ও মেঝের টাইলস জোড়ার রজন বিক্রি করা হত। বাবা ও ছেলে যখন রজন রাখার পাত্র পরিষ্কার করছিলেন, তখন ওই ঘটনা ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "ভরত-এর বাবা জলের কল বন্ধ করতে যান ও ভরত তাঁদের বাড়ির কাছে ম্যানহোলে রাসায়নিক পদার্থ ফেলতে থাকেন। তখনই বিস্ফোরণটি ঘটে। ভরত ঘটনাস্থলেই মারা যান।"
রিপোর্টটিতে আরও বলা হয়, বেনুগোপাল নামের এক ব্যক্তি ও বট্টাডদের এক প্রতিবেশী অল্প আঘাত পান। বিস্ফোরণটির ফলে, ম্যানহোলটি সম্পূর্ণ উড়ে যায় ও রাস্তায় বড় গর্ত তৈরি হয়।
আফজলগঞ্জ থানার স্টেশন হাউস অফিসার রবীন্দ্র রেড্ডির সঙ্গে বুম যোগাযোগ করে। রেড্ডি বুমকে বলেন যে, একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যে।
"বাবা আর ছেলে একটি রাসায়নিক দ্রব্যের দোকান চালাতেন এখানে। রাসায়নিক পদার্থটি পুরনো হয়ে, পাত্রে জমে গিয়েছিল। জল দিয়ে পাত্রটি পরিষ্কার করতে গেলে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। তার ফলে, বিস্ফোরণ ঘটে ও ছেলেটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়," রেড্ডি বুমকে বলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় অটল মন্দির ভুয়ো দাবিতে ছড়াল মধ্যপ্রদেশের ভিডিও