সোশাল মিডিয়ায় গ্রাফিক পোস্টে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার (Government of India) গত পাঁচ বছরে বিশ্ব ব্যাঙ্ক (World Bank) থেকে কোনও ঋণ (Loan) নেয়নি এবং কংগ্রেস শাসনকালের বকেয়া ঋণ পরিশোধ করেছে।
বুম যাচাই করে দেখে বিশ্ব ব্যাঙ্কে থেকে ভারত ৫ বছরে কোনও ঋণ নেয়নি দাবিটি সঠিক নয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ও ভারতীয় জনতা পার্টির দলীয় প্রতীকসমেত গ্রাফিকটিতে লেখা হয়েছে, "ইতিহাস গড়লেন মোদীজি বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে গত পাঁচ বছরে কোন ঋণ না করেই দেশ চালালেন, পরিশোধ করলেন কংগ্রেসের করে যাওয়া বিপুল পরিমান ঋণ।"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: না, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত করেনি তৃণমূল
তথ্য যাচাই
বুম বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ভারতের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জানতে ইন্টারনেটে কীওয়ার্ড সার্চ করে। আমরা বেশ কিছু প্রতিবেদন খুঁজে পেয়েছি যেখানে গত পাঁচ বছরে ভারত সরকারের বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
২০১৭ সালে অর্থমন্ত্রকের তরফ থেকে টুইট করে বলা হয়, ভারত অসম নাগরিক কেন্দ্রীক পরিষেবা বিতরণ প্রকল্পের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাথে ৩৯.২ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সাক্ষর করে। এর পরেও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য প্রকল্প যেমন প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা, ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, গঙ্গা অববাহিকা প্রকল্প ইত্যাদির জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে ভারত।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অর্থমন্ত্রকের তরফে প্রকাশ করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা অতিমারি মোকাবিলার জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্ক তিন দফায় মোট ২.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করেছে। ১ বিলিয়ন স্বাস্থ্যের জন্য, ০.৭৫ বিলিয়ন সামাজিক সুরক্ষা ও ০.৭৫ বিলিয়ন অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধি।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ অর্থ বর্ষ থেকে ২০২১ অর্থ বর্ষপর্যন্ত গত ৬ বছরে বিভিন্ন খাতে ভারতের নেওয়া ঋণের পরিসংখ্যানটি এখানে তুলে ধরা হল।
ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফ রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) দুই সংস্থা মিলে গঠিত হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। আইআরডি নিম্ন ও মাঝারি আয়ের দেশগুলিকে ঋণ দেয়। অন্যদিকে, আই ডিএ খুব গরিব দেশগুলিকে সুদ ছাড়া ঋণ বা গ্র্যান্ট দিয়ে থাকে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ৩১ মে, ২০২১ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা হিসেবে ভারতের কাছে আইবিআরডি ও আইডিএ ঋণের ১৭.৮৩৮ বিলিয়ন ও ২২.৩ বিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। ঋণগ্রহীতার বাধ্যবাধকতার অর্থ হল নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরোনোর পর মার্কিন ডলারে থাকা ঋণের বকেয়া হিসেব। তৃতীয় পক্ষের বকেয়া হিসেবও ঋণগ্রহীতার বাধ্যবাধকতার অন্তর্ভুক্ত থাকে।
(অতিরিক্ত রিপোর্টিং মহম্মদ কুদরতি)
আরও পড়ুন: করোনাকালে তাইল্যান্ডের ক্লাস নেওয়ার ছবি ছড়াল কেরলে বোর্ড পরীক্ষা বলে