কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ (Digvijaya Singh) একটি প্যারডি টুইটার অ্যাকাউন্টের পোস্ট শেয়ার করেন, যাতে নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর (New York Times) এমন একটি ভুয়ো ক্লিপিং ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে একটি ক্রন্দনরত কুমীরের ছবি দিয়ে ক্যাপশন দেওয়া হয়— "প্রধানমন্ত্রী মোদী কাঁদছেন"l দিগ্বিজয় পরে তাঁর নিজের টুইটটি মুছে দিলেও ওই ভুয়ো টুইটের ভিত্তিতে দাবি করেন যে্, নিউ ইয়র্ক টাইমস মোদীকে (Modi) সমালোচনা করেছে।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে কোভিড-১৯-এর মোকাবিলায় তৎপর স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতেই মোদীকে নিয়ে এই টুইটটি ভাইরাল হয়। মোদীর আবেগঘন বার্তা প্রচারিত হওয়ার পরেই তাঁর এই আবেগ লোকদেখানো এটা বোঝাতে প্রবাদোক্ত কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন-এর অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
দিগ্বিজয় সিংহ উপরোক্ত ভাইরাল ক্লিপিংটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন: "জয়শংকরজি, এখন যখন আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেনই, তখন সেখানে নিউ ইয়র্ক টাইমস যাতে মোদীর ভাবমূর্তি ধবংস না করে, সেটা নিশ্চিত করবেন কি? হাজার হোক, তাঁর কাছে কোভিড-আক্রান্ত দেশবাসীর কষ্ট লাঘবের চেয়ে নিজের অমলিন ভাবমূর্তি রক্ষা করা বেশি দরকারি! সময়বিশেষে কান্নায় ভিজে ওঠা তাঁর কাছে একটা শিল্প!"
আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
টুইটারেও ভাইরাল
একই সম্পাদিত টুইটটি টুইটারে অনেকেই শেয়ার করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভারতের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ঘা খেয়েছে:
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: মিথ্যে দাবিতে ছড়াল সোনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহের ২০১৭ সালের ভিডিও
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এই তথাকথিত ক্লিপিংটি ভুয়ো। এটি সম্পাদিত হয়েছে— কুমীরের ছবি এবং মোদীকে নিয়ে দেওয়া শিরোনাম, দুই-ই জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সংবাদপত্রটির প্রথম পৃষ্ঠায় এ ধরনের কোনও কুমীরের ছবি বা মোদীকে নিয়ে লেখা প্রকাশিতই হয়নি। এই ভুয়ো ক্লিপিংটির উত্স হল দ্য ডেইলি নিউ ইয়র্ক টাইমস নামে একটি প্যারডি টুইটার অ্যাকাউন্ট, যারা এটি প্রকাশের সময় স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করেছে যে এটি একটি বিদ্রুপাত্মক টুইট।
ওই একই দিনের অর্থাত্ ২১ মে-র নিউইয়র্ক টাইমস-এর আন্তর্জাতিক সংস্করণ খুললে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে, তার প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা ছবি ও শিরোনাম সম্পূর্ণ আলাদা, ভাইরাল ক্লিপিং-এর মতো একেবারেই নয়। এই দিনের সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান ছবিতে দেখা যাচ্ছে ছাদে বসানো সারিবদ্ধ সোলার প্যানেল, যার ক্যাপশন দেওয়া হয়েছেঃ "এর কোনও বিকল্প নেই l সৌরশক্তি হলো ঈশ্বরের আশীর্বাদের মতো!"
ভুয়ো ক্লিপিংটির সঙ্গে নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রথম পৃষ্ঠার তুলনা করে আমরা দেখেছি, সেখানে না প্রধানমন্ত্রী মোদীর অশ্রু নিয়ে কোনও প্রতিবেদন আছে, না কোনও কুমীরের ছবি। তবে ভাইরাল ক্লিপিং-এর অন্যান্য খবর নিউইয়র্ক টাইমস-এর আন্তর্জাতিক সংস্করণেরই অনুরূপ:
আরও পড়ুন: আইএসআইএস-এর ভাঙা ধর্মীয়স্থানের ছবি ছড়াল ইজরায়েল মসজিদ ভাঙল বলে