একজন শিখের (Sikh) নামাজ পড়ার পুরনো ছবি একটি মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, তিনি একজন মুসলমান (Muslim), যিনি শিখ সেজে কৃষক আন্দোলনে (Farmers Protest) অংশ নেন এবং নামাজ পড়তে আসার আগে পাগড়িটা খুলতে ভুলে যান।
বুম দেখে, ছবিটি ২০১৬ সালের। সেটি এখনকার নয়, যেমনটা দাবি করা হচ্ছে। ছবিটিতে একজন পাগড়ি-পরা ব্যক্তিকে একটি মসজিদে মুসলমানদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রের আনা তিনটি কৃষি আইন (Farm Laws) বাতিলের দাবিতে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা কৃষকরা দিল্লির সীমান্তে ২৬ নভেম্বর ২০২০ থেকে অবস্থান করছেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে।
এক মিথ্যে ও সাম্প্রদায়িক দাবি সমেত ভাইরাল ছবিটি হরিন্দর এস সিক্কা (Harinder S Sikka) নামের এক ব্যক্তি টুইট করেন। তিনি বলেন, "উনি কিষাণ র্যালিতে অংশ নেন, পাগড়ি খুলতে ভুলে যান, এবং মসজিদে ফিরে যান। তাঁর উদ্দেশ্য আর যাইহোক, তাঁদের (কৃষকদের) উপকার করা নয়। এই ছবি শেয়ার করতে সাহায্য করুন। কৃষি আইনের নাম করে, জেহাদি, কমিউনিস্ট আর বিশ্বসঘাতকরা প্রকাশ্যে তাদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে।@নরেন্দ্র মোদী @অমিত শাহ।"
ফেসবুকে ভাইরাল
একই ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে আমরা দেখি যে, সেখানেও মিথ্যে দাবি সমেত ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
গুগুল ইমেজ দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায় যে, ভাইরাল ফটোটি ২০১৬তে তোলা। সেটি ইদানীং কালে তোলা নয়, যেমনটি দাবি করা হচ্ছে।
একটি ওয়েবসাইটে আমরা একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট দেখতে পাই। সেটিতে ভাইরাল ছবিটি ছিল। ফেসবুক পোস্টটির তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৬। তাতে ছবিটি পোস্ট করা হয় ও ক্যাপশনে বলা হয়, "এই শিখ ব্যক্তি জুম্মার দিন মসজিদে ওজু করেন এবং 'আল্লাহু আকবর' বলে সকলের সঙ্গে প্রার্থনা করেন। এই সুন্দর ধর্মকে আল্লা যেন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেন।"
আমরা দেখি যে, ২০১৬তে ছবিটি বেশ কিছু ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়।
বুম নিজে ঘটনাটি যাচাই করে দেখতে পারেনি। তবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, ছবিটি ২০১৬তে তোলা হয় এবং আজকের কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে সেটির কোনও সম্পর্ক নেই।
কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে মিথ্যে খবর বুম আগেও খণ্ডন করেছে। সেগুলিতে মিথ্যে খবর ও পুরনো ছবি দিয়ে প্রতিবাদী কৃষকদের নিশানা করা হয়।