দুটি ধুলোমাখা বালক কাঁদতে কাঁদতে নিজেদের জড়িয়ে ধরছে— এই কয়েকটি ছবির একটি সেট মিথ্যে ক্যাপশনের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ওই ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে যে, ছবিটি ইজরায়েল (Israel) ও প্যালেস্তাইনের (Palestine) মধ্যে চলা সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময়কার।
বুম যাচাই করে দেখে ছবিটি ২০১৬ সালে সিরিয়ায় তোলা।
ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মধ্যে চলা সংঘর্ষে প্রতি দিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে ১৫ মে গাজায় প্রায় ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে গাজায় ইজরায়েলের বোমা হামলায় ৩৩ জন প্যালেস্তানীয়র মৃত্যু হয়েছে , তাদের মধ্যে ১৩ জন শিশুও রয়েছে। ওদিকে হামাস ও অন্যান্য উগ্রপন্থী দলের রকেট হামলায় ইজরায়েলে ২ জন শিশু সমেত ১০ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুটি মর্মস্পর্শী ছবির সেটটি শেয়ার করা হয়েছে। সঙ্গে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে '#গাজার দুই ভাই… ওই সময় পর্যন্ত… দু'জনেই ভেবেছিল যে, অন্য জন ইজরায়েলি বোমা আক্রমণে মারা গেছে।" ছবিতে দুই বালককে কাঁদতে কাঁদতে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরতে দেখা যাচ্ছে।
ছবিটির আর্কাইভ দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ছবিটি ফেসবুকেও একই দাবির সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে।
আর্কাইভ দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: ভিডিও গেমের দৃশ্যকে বলা হল ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফুটেজ
তথ্য যাচাই
ছবিটির উপর রিভার্স ইমেজ সার্চ চালিয়ে আমরা ওয়াশিংটন পোস্টের ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে পাই।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয় যে, সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে বোমা বিস্ফোরণে তাদের ভাইয়ের মৃত্যুতে এই দুই শোকাহত সিরিয়ান বালক পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট ওই বোমা হামলার ফলে ১৩ থেকে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।
আমরা কিওয়ার্ড সার্চও করি, এবং ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট ইনসাইড এডিশন'স-এর ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা একটি ভিডিও দেখতে পাই ।
ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয় "মর্মবিদারক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাদের ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকাহত দুই ভাই"।
ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওর বিবরণে লেখা হয়েছে, "সিরিয়ায় ব্যারেল বিস্ফোরণে তাদের এক ভাইয়ের মৃত্যুতে অপর দুই ভাই পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ওখানকার গৃহযুদ্ধের ফলে হাজার হাজার শিশু মারা যায় এবং গৃহহীন হয়। ওমরান নামে এক ধুলিধূসরিত শিশুর হতবাক হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে বসে থাকার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর সারা বিশ্বের সামনে এই সমস্যাটি নতুন করে উঠে আসে। আলেপ্পো মিডিয়া সেন্টার নামে সরকার-বিরোধী কর্মীদের একটি দল এই ভিডিওটি প্রকাশ করে।"
ডেলিমেইলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই ভিডিওটি দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: সবজি ও মদ বিক্রিতে লকডাউন বিধি বৈষম্য মিথ্যে দাবিতে ছড়াল পুরনো ছবি