পিঠে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে এমন এক ব্যক্তির একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে যে এটি গত ২৫ জানুযারি প্রয়াগরাজে (Prayagraj) রেলে লোক নেওযার পরীক্ষা উপলক্ষ্যে প্রতিবাদীর আহত হওযার ছবি।
বুম দেখে এই ছবিটি অন্তত ২০১৯ সাল থেকে ইন্টারনেটে ঘুরছে এবং সাম্প্রতিক বিক্ষোভ আন্দোলনের সঙ্গে এটিকে মিথ্যে করে জোড়া হযেছে।
সম্প্রতি বিহার ও উত্তরপ্রদেশে ২০২১ সালের রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ফলাফল ভুলভাল দেখানো হযেছে, এই অভিযোগ তুলে ছাত্ররা ব্যাপক বিক্ষোভে শামিল হয়। ওই দুই রাজ্যেই তারা রেলপথ অবরোধ করলে পুলিশ তাদের উপর লাঠি-চার্জ করে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই পরীক্ষা ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ৩১ জুলাই ২০২২-এর মধ্যবর্তী সময়ে গৃহীত হয় এবং তার ফল প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ১৫ জানুযারি। ওই হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ওই বিক্ষোভের রিপোর্ট করতে গিযে হিন্দি দৈনিক জাগরণ সংবাদপত্রের ২৮ জানুযারির প্রয়াগরাজ সংস্করণে একটি ছবি ছেপে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "বালিয়ার রজনীশ ভারতী পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হযেছেন"। পত্রিকার তরফে দাবি, ছবিটি তার আত্মীয়দের কাছ থেকে পাওযা গেছে।
হিন্দি দৈনিক নবভারত টাইমস-এর সাংবাদিক অনুপ পাণ্ডেও ২৭ জানুযারি এই ছবিটি টুইট করেছিলেন, কিন্তু পরে তিনি সেটি মুছে দেন। টুইটটির আর্কাইভ বয়ান দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
ফেসবুকে বেশ কয়েকজন ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশন দিয়েছেন, "চাকরি নিয়ে কী করবে? এখনও তো মথুরা আর কাশী বাকি রয়েছে!"
আরও পড়ুন: তৃণমূল জাতীয় দল প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাঁটাই ভিডিও ছড়াল বিজেপি
তথ্য যাচাই
গুগল এবং ইয়ানডেক্স-এ খোঁজ করে আমরা দেখেছি, অন্ততঃ ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে এই ছবিটি ইন্টারনেটে রয়েছে। আমরা দেখি বাংলাদেশের কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী ১৭ জুলাই এই ছবিটি শেয়ার করেছিলেন, যাতে আহত যুবকটির পায়েও ক্ষতচিহ্ন ছিল।
ছবিটার বাংলা ক্যাপশনে লেখা ছিল, "প্রেম করা সহজ, কিন্তু প্রেমিকার বাবা-মার হাত থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন। ইসলামে অবৈধ যৌন সম্পর্ক করা হারাম। যদি সব প্রেমিকদেরই প্রেমিকার বাবা-মা এভাবে ঠেঙাতে পারত, তাহলে এ দেশের তরুণরা অনেক মহান হয়ে যেত।"
এই পোস্টগুলির আর্কাইভ বয়ান দেখুন এখানে এবং এখানে।
ইতিপূর্বে ২০২০ সালের মার্চ মাসে বুম বাংলা একই ছবি ব্যবহার করে ভাইরাল করা একটি পোস্টের পর্দাফাঁস করেছিল। সেসময় ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল, লকডাউনের সময় রাজস্থানে এক ব্যক্তি তাঁর মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বেরলে পুলিশের প্রহারে তার এই অবস্থা হয়।
বুম নিজে থেকে ছবিটির উৎস যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।
আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে জুতো ছোঁড়া নিয়ে রাজনাথ সিংহের পুরনো কথা ফের ছড়াল