সোশ্যাল মিডিয়ায় কেটে ফেলা জঙ্গলের মাঝে গৃহহীন বন্য প্রাণীর পিছনে অনেকগুলি জেসিবি দাঁড়িয়ে থাকার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা অনেকেই ছবিটি তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদের (Hyderabad) কাঞ্চি গাচ্চিবওলির (Kanchi Gachibowli) জঙ্গলের দৃশ্য হিসাবে শেয়ার করেছেন।
বুম দেখে ভাইরাল ছবিটি আসল নয়। সেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগে তৈরি করা হয়েছে।
তেলাঙ্গানা সরকারের হায়দরাবাদের শহুরে বন কাঞ্চি গাচ্চিবওলির ৪০০ একর জমি নিলাম করে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরি করার পরিকল্পনা অনুসারে সেখানের গাছ কাটা শুরু হয়। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এই জঙ্গল সাফ করার বিরুদ্ধে সেখানকার পড়ুয়ারা আন্দোলন শুরু করেন, পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ান। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলাটি নিজের আওতায় নেয় এবং এপ্রিলের ৩ তারিখ তেলাঙ্গানা সরকারকে জঙ্গল কেটে ফেলা আপাতত বন্ধ রাখতে বলেন।
ভাইরাল ছবিটি শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লেখেন, "হায়দ্রাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি ছবি এটা। এটা কোনো AI Generated ছবি না! একদিন মানুষ কেও এই ভাবে পৃথিবী ছেড়ে পালাতে হবে নিজের বাসস্থান ছেড়ে। আর কিছুদিনের সময়ের অপেক্ষা। গাছ থাকতে গাছের মর্ম বুঝলো না কেও।।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
আরও এক ব্যবহারকারী ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, "হায়দ্রাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের অন্তর্গত পশুপাখি সমৃদ্ধ ৪০০ একর বনভূমিকে বাণিজ্যিক স্বার্থে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমে, ভাইরাল ছবির সত্যতা যাচাই করতে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে তবে, এই ছবির কোনও বিশ্বাসযোগ্য উৎস খুঁজে পায় না। এছাড়াও, কাঞ্চি গাচ্চিবওলির জঙ্গলের দৃশ্য বলে কোনও নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদনেও ছবিটি আমরা পায়নি।
আমরা ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে সেটিতে কয়েকটি অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করি যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগে তৈরি ছবিতে দেখা যায় যেমন হরিণের পায়ে বিকৃতি, পাখির দুটি ডানার মধ্যে অসমঞ্জস্যতা, ইত্যাদি।
এরপর, আমরা ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইট হাইভ মডারেশন এবং সাইটইঞ্জিনের সাহায্যে পরীক্ষা করি। দুটি ওয়েবসাইটই আমাদের নিশ্চিত করেছে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি, আসল নয়।
নীচে হাইভ মডারেশনে আমাদের করা পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখা যাবে।
সাইটইঞ্জিনে করা ছবিটির পরীক্ষার ফল নীচে দেখুন।