মায়ের (Mom delivers baby) পাশে সদ্যজাত ও ডাক্তারি পোশাকে থাকা ব্যক্তির দুটি সম্পর্কহীন পুরনো ছবি মনগড়া (fictional story) কাহিনী সমেত ভুয়ো দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে। ছবিটি ছড়িয়ে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে, ছবিতে মৃত মায়ের (mom dies) হাতের উপরে রয়েছে সদ্যজাত (childbirth) শিশু। ডাক্তার প্রসবের সময় গর্ভস্থ ভ্রুণ ও মায়ের প্রাণ সংশয়ের কথা জানালে মা স্বেচ্ছায় সন্তানকে বাঁচাতে মৃত্যু বরণ করেন। পাশের অন্য ছবিতে কাঁদছেন নাকি সেই ডাক্তার!
ভাইরাল হওয়া প্রথম ছবিতে দেখা যায় অস্ত্রপচারের টেবিলে মা ও তাঁর পশে সদ্যজাত। দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যায় এক পুরুষ ডাক্তার হাসপাতালের কক্ষে চিন্তিত মুখে।
ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "দীর্ঘ ৭ ঘন্টার অপারেশন। অতঃপর.... সদ্য জন্মানো বাচ্চা শিশুটি তার মৃত মায়ের হাতের উপরে। এবং তার পাশেই ডাক্তার কাঁদছেন। এই মা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত। যার কারণে কোন বাচ্চা নিতে পারছিলেন না! দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষা করে বড় ধরনের রিস্ক নিয়েছেন সন্তান নেয়ার জন্য। হয়তো সন্তান বাঁচবে না হয় মা! এরপর ডাক্তার তার সবটুকু দিয়ে ৭ ঘন্টার চেষ্টায় বললো, বাচ্চা এবং মা দুই জনকে একসাথে বাঁচানো সম্ভব নয়। সর্বশেষ ডাক্তার সিদ্ধান্ত নিলেন - বাচ্চার মাকে জিজ্ঞেস করবেন, তিনি কী করতে চান? বাচ্চাকে বাঁচাবেন, না কি নিজের জীবন? মা নিজেই নিভে গিয়ে বাচ্চাকে আলো দিতে রাজি হলেন.. অপারেশন এর পর মা তার ফুটফুটে বাচ্চাটিকে তার মুখের কাছে নিয়ে চুমু খেলেন, বুকে জড়িয়ে নিলেন। মাত্র দুই মিনিট পর হাসি দিয়ে চোখ বন্ধ করলেন সারা জীবনের জন্য। মা হিসেবে দুই মিনিটের স্বার্থক জীবনের কাছে হার মানল মায়ের পুরোটা জীবন।হাঁ এটাই মায়ের জাত। সারাবিশ্বে হাজারেরও বেশি মা প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করেন বাচ্চা জন্ম দেয়ার সময়। সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক সন্তানকে জ্ঞান দান করুক তারা যেন বাবা-মা কে সবসময় সন্মান করে।"
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
আরও পড়ুন: বিহারে বরের যৌতুক চাওয়ার ভাইরাল ভিডিওটি সাজানো
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ২০১৫ ও ২০১৭ সালের দুটি সম্পর্কহীন ছবি স্পর্শকাতর, ভুয়ো ও কাল্পনিক অনুসঙ্গ সহ ছড়াচ্ছে।
বুম মায়ের সঙ্গে সদ্যজাতের ছবিটি রিভার্স সার্চ করে ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ একটি তুর্কীর ফোটোগ্রাফি ফেসবুক পেজে ছবিটি খুঁজে পায়। ছবিটির বাংলায় ক্যাপশন লেখা হয়, "সেরা পুনর্মিলন"
(তুর্কি ভাষায় মূল ক্যাপশন: En güzel kavuşma)
ডাক্তারের ছবিটি রিভার্স সার্চ করলে ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখের একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নিয়ে যায় আমাদের। একটি ফোটোগ্রাফির অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়, "কিছু বাবা এই সব মুহূর্তে আনন্দ উপভোগ করে। আমি প্রফুল্ল জেনে যে তিনি বাবা হয়েছেন।
(তুর্কি ভাষায় মূল ক্যাপশন: Bazı babalar o kadar güzel yaşıyor ki bu anları. ..Icimden iyi ki baba olmuş)
১৯ জানুয়ারি ২০২২ পত্রিকাতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজস্থানের যোধপুরের শাস্ত্রীনগরে ৩১ বছর বয়সী সুহানী চোপড়া সন্তান প্রসবের পর মারা যান। পরে তাঁর চোখ দুটি দান করার সিদ্ধান্ত নেন স্বামী বিশ্রুত জৈন।
ডাক্তারের ছবিটি অবশ্য মনগড়া কাহিনী সমেত ২০১৭ সাল থেকে ভাইরাল। পড়ুন স্ন্যপসের তথ্য-যাচাই।
আরও পড়ুন: টিভি সিরিজের ভিডিও ছড়াল ইউক্রেনীয়দের নকল আঘাত বলে