এনডিটিভিতে (NDTV) প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের অংশ বলে ভুয়ো দাবি করে একটি স্ক্রিনশট সোশাল মিডিয়ায় বিপুলভাবে শেয়ার করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে সংবাদপত্র দ্য হিন্দুর এক সাংবাদিককে এলটিটিইর পুনরুত্থান বিষয়ে ভুয়ো খবর তৈরি করার জন্য অর্থ দিয়েছেন।
বুম অনুসন্ধান করে দেখে ভাইরাল হওয়া ঐ স্ক্রিনশটটি ফোটশপ করে তৈরি করা হয়েছে এবং এনডিটিভি তাদের ওয়েবসাইটে এরকম কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।
৯ মে প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে ইস্তফা দেওয়া স্বত্ত্বেও শ্রীলঙ্কায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ এবং নানা হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সম্প্রতি হিংসাত্মক রূপ নেয় এবং তাতে ৩০০'র বেশী মানুষ আহত হন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ভাইরাল হওয়া পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি শেয়ার করেছেন এবং সঙ্গে ক্যাপশন দিয়েছেন, " আমরা তার কাছ থেকে আর কিই বা আশা করতে পারি"।
এনডিটিভির এই ভুয়ো প্রতিবেনটির শিরোনামে লেখা হয়েছে, " প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহন্দা রাজাপক্ষে দ্য হিন্দুর এক সাংবাদিককে এলটিটিইর পুনরুত্থান বিষয়ে ভুয়ো খবর তৈরি করার জন্য অর্থ দিয়েছেন।"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
অন্য আর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটির সঙ্গে ক্যাপশন দিয়েছেন, " এই ক্ষমতালিপ্সু শাসক রাজনৈতিক ক্ষমতা ছাড়া থাকতেই পারে না।"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: না, ভিডিওর মারধর খাওয়া ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার তথ্য বা জনকল্যাণ মন্ত্রী নন
তথ্য যাচাই
এনডিটিভির বলে দাবি করা ওই ভুয়ো প্রতিবেদনের শিরোনামের কয়েকটি শব্দ দিয়ে বুম কিওয়ার্ড সার্চ করে কিন্তু এরকম কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আমরা এনডিটিভি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সুপর্ণা সিং-এর ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এই ছবিটি সমেত করা একটি টুইট দেখতে পাই। ওই টুইটে সিং লিখেছেন, "ভুয়ো খবর।"
পোস্টটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
তাছাড়াও ওই ভুয়ো প্রতিবেদনটিতে বুম অনেকগুলি গরমিল দেখতে পাই।
উদাহরন হিসাবে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটির ডেটলাইনটি ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সেখানে প্রতিবেদনটির আপডেট করার সময় উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সময়ে রাত ১০:৩৮, ১৫ মে। অথচ সুপর্ণা সিং এই স্ক্রিনশটটি টুইট করেছেন ১৫ মে বিকেল ৩: ১৯ মিনিটে।
ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটির শিরোনামে একটি ব্যকরণের ভুলও রয়েছে—সেখানে ভুল জায়গায় কমা দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল স্ক্রিনশটে যে ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে এনডিটিভির প্রতিবেদনের আসল ফন্টের সঙ্গে তা মেলে না। তাছাড়া এনডিটিভির প্রতিবেদনের শিরোনাম অন্যরকম স্টাইলে লেখা হয়- শিরোনামের প্রত্যেকটা শব্দের প্রথম শব্দ ক্যাপিটালে লেখা হয়।
নীচে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশট এবং এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনের তুলনা করা হল।
আরও পড়ুন: ভাইরাল ছবিটি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের পুত্র ভ্লাদিমির ঝোগার নয়