ইদ উৎসবের সময় কয়েকজন মুসলমান ব্যক্তি কিছু যুবককে মারধর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন এমনটাই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের (Bangladesh) এক ভিডিওতে। কিন্তু সেই ভিডিও এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে মসজিদের বাইরে হনুমান চালিসা বাজানোর জন্য হিন্দু যুবকদের মেরে তাড়াচ্ছেন ভারতের মুসলমানরা।
রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর সময়, হিন্দু সংগঠনগুলির আয়োজিত শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে পাথর ছোঁড়া নিয়ে ভারতের নানা রাজ্যে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ায়। ওই সংগঠনগুলি মসজিদের সামনে জনসভা করে হনুমান চালিসা বাজায় এবং মাইক লাগিয়ে আজান পড়া বন্ধ করার দাবি তোলে।
সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে যে ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে, সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "মসজিদের সামনে কী ভাবে হনুমান চালিসা পড়তে হয়, পাঁচজন মুসলমান একশ'জন হিন্দুকে সেই শিক্ষা দিয়েছে।"
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
হিন্দিতে ওই মিথ্যে ক্যাপশন সহ ভিডিওটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হচ্ছে।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: पांच मुस्लिम ने एक सौ हिंदुओं को मस्जिद के सामने हनुमान चालीसा पढ़ने का तरीका सिखाया)
ভিডিওটি কন্নড় ভাষায়ও শেয়ার করা হচ্ছে। সেখানে দাবি করা হচ্ছে যে, হুব্বালিতে মসজিদের সামনে হনুমান চালিসা পাঠ করার জন্য মুসলমানরা হিন্দুদের মারধর করেন।
আরও পড়ুন: না, ভিডিওর মারধর খাওয়া ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার তথ্য বা জনকল্যাণ মন্ত্রী নন
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওটি বাংলাদেশের। সেখানে, ইদ উৎসবের সময় ট্রাকের ওপর মাইক বা সাউন্ডবক্স লাগিয়ে গান বাজানোর জন্য ইসলামীয় গোষ্ঠী 'তৌহিদি জনতার' সদস্যরা মুসলমান যুবকদের মারধর করেন।
ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি আলাদা করে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তার ফলে ৫ মে, ২০২২-এ, বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদন সামনে আসে। তাতে ওই একই ভিডিও দেখা যায়। এবং তাতে বলা হয়, ইদ উৎসবের সময় মাইক লাগিয়ে গান বাজানোর জন্য তৌহিদি জনতার সদস্যরা মুসলমান যুবকদের মারধর করেন।
তাছাড়া, প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া ভিডিওটি আরও স্পষ্ট। এবং আমরা লক্ষ করি যে, সাইনবোর্ডগুলি বাংলায় লেখা।
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
নীচে বাংলাদেশের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হল। তাতেও ওই একই ভিডিও রয়েছে।
কর্নাটক পুলিশের তথ্য-যাচাই শাখাও একটি বিবৃতি প্রকাশ করে । কর্নাটকের হুব্বালিতে একটি মসজিদের সামনে হনুমান চালিসা বাজানোর জন্য মুসলমানরা হিন্দু যুবকদের মারধর করেন, বিবৃতিটিতে ওই মিথ্যে দাবি খণ্ডন করা হয়।
ইদ উৎসবের সময়, উচ্চগ্রামে বাজনা বাজানোর জন্য বাংলাদেশে বেশ কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়, এমন খবরও আমরা দেখতে পাই।
আরও পড়ুন: ভাইরাল ছবিটি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের পুত্র ভ্লাদিমির ঝোগার নয়