একটি গলির মধ্যে, একটি ষাঁড় (Bull) এক ব্যক্তিকে গুঁতিয়ে দেওয়ার ভিডিও এই মিথ্যে ক্যাপশন সহ ভাইরাল হয়েছে যে, ওই ব্যক্তি একজন মুসলমান (Muslim)।
ওই ঘটনাটি সম্পর্কে কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন বুম'র চোখে পড়ে। এবং যে গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে, বুম সেই গ্রামের সরপঞ্চ ও স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে কথা বলে। জানা যায়, মৃত ব্যক্তি মুসলমান ছিলেন না।
ভিডিওটিতে একটি ষাঁড়কে একটা গলির মধ্যে দিয়ে যেতে দেখা যায়। এক ব্যক্তি সেটিকে লাঠি দিয়ে মারার চেষ্টা করলে, ষাঁড়টি তাঁকে গুঁতিয়ে, তিনবার শূন্যে ছুঁড়ে, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।
বীভৎসতার কারণে ভিডিওটিকে এখানে দেওয়া হয়নি।
সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিতমূলক কয়েকটি ক্যাপশন সমেত ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দক্ষিণপন্থী ফেসবুক পেজ ভিডিওটি যে ক্যাপশন সহ শেয়ার করেছে, সেটির মানে দাঁড়ায়, "এবং সলীম চাচা মারা গেলেন। নন্দীজি বকরীদের কুরবানি গ্রহণ করলেন।"
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: और सलीम चच्चा अल्लाह को प्यारे हो गए बकरीद पर नंदीजी ने ली कुर्बानी)
ভাইরাল পোস্ট এখানে ও এখানে দেখা যাবে। আর্কাইভ সংস্করণ দেখা যাবে এখানে।
পাঠকদের প্রতি অনুরোধ: দেখবেন কিনা ভেবে দেখবেন।
আরও পড়ুন: ২০১২ সালে মহিলার বেশে ধৃত তালিবান জঙ্গির ছবি ছড়াল কাশ্মীরের ঘটনা বলে
তথ্য যাচাই
'सांड ने ली आदमी की जान' – এই হিন্দি শব্দগুলি দিয়ে বুম কি-ওয়ার্ড সার্চ করে। দেখা যায়, 'নিউজ পাঞ্জাব' ওয়েবসাইট ওই একই ভিডিও আপলোড করেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ঘটনাটি হরিয়ানার পানিপথ-এ ঘটে। সেখানে ৬৩ বছরের দীপচাঁদ নামের এক ব্যক্তিকে একটি ষাঁড় গুঁতিয়ে মেরে ফেলে। এই সূত্রের ওপর ভিত্তি করে আমরা আরও কি-ওয়ার্ড সার্চ করি। তার ফলে, 'দ্য ট্রিবিউন', 'নিউজ ১৮', ও 'পাঞ্জাব কেশরী'-তে প্রকাশিত রিপোর্ট দেখতে পাই আমরা।
প্রতিটি রিপোর্টে মৃত ব্যক্তিকে দীপচাঁদ নামেই শনাক্ত করা হয়।
দ্য ট্রিবিউন-এর রিপোর্টে বলা হয় যে, ১১ জুলাই, ২০২১, হরিয়ানার পানিপথের সৌন্ধপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। সেটি সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে। দীপচাঁদকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকে তাঁকে রোহতক-এর পিজিআইএমএস-এ স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে তিনি ১২ জুলাই মারা যান।
ওই ঘটনা সম্পর্কে আরও জানার জন্য সৌন্ধপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দীপক নামের এক পুলিশ আধিকারিক বুমকে বলেন, দীপচাঁদ একটি গলির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন একটি ষাঁড় তাঁর সামনে এসে পড়ে। "লোকটি একটা লাঠি দিয়ে তাকে আক্রমণ করলে, ষাঁড়টি ক্ষেপে গিয়ে তাঁর দিকে তেড়ে আসে," বলেন দীপক।
সৌন্ধপুরের সরপঞ্চ রাজেশ কুমারের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করি। তিনি নিশ্চিত করে বলেন যে, মৃত ব্যক্তি একজন হিন্দু ছিলেন। "দীপচাঁদ ছিলেন ঝিনওয়ার সম্প্রদায়ের সদস্য," রাজেশ বুমকে বলেন।
আরও পড়ুন: ২০২০ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লকডাউন বিধির ভিডিও ভুয়ো দাবিতে ভাইরাল