Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

ক্যান্সার নিয়ে ইয়োশিনোরি ওসুমি ও অন্য বিজ্ঞানীর বক্তব্য যা আপনি ভুল জানেন

সোশাল মিডিয়ায় রোজা রাখলে ক্যান্সার রোগ সারবে এই ভুয়ো দাবির পাশাপাশি আরও দুই বিজ্ঞানীর আবিষ্কারকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

By - Shachi Sutaria | 29 April 2020 12:19 PM GMT

তিনজন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, ঔষধ ছাড়াই শুধু জীবনযাপন পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়েই কর্কট বা ক্যান্সার থেকে আরোগ্যলাভ সম্ভব, এ রকম দাবি সহ একটি ছবি বিভ্রান্তিকরভাবে ভাইরাল হয়েছে।

ভাইরাল গ্রাফিক ছবিটির স্বত্ব হিসেবে হায়দরাবাদের ডাঃ শহীদ বেগ-এর নাম উল্লেখ করা আছে।

ডাঃ শহীদ বেগ হায়দরাবাদের এক ফিজিওথেরাপিস্ট এবং বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি অনুশীলন করে থাকেন l তাঁর দাবি করেছেন—ডাঃ অটো ওয়ারবার্গ, ডাঃ ফরিদ মুরাদ এবং ডাঃ ইয়োশিনোরি ওসুমি নাকি তাঁদের গবেষণায় প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, যে-কোনও স্তরের ক্যান্সার ঔষধের প্রয়োগ ছাড়াই সারিয়ে দেওয়া যায়।


হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া এই ছবিটিতে ৩টি দাবি করা হয়েছে।

১ নং দাবি:

অক্সিজেন নেই এমন পরিবেশে ক্যান্সারের কোষগুলি বেঁচে থাকতে পারে না, ডাঃ ওয়ারবার্গের এই গবেষণার ভিত্তিতে ছবিটিতে দাবি করা হয়েছে, শরীরে অক্সিজেনের স্তর বাড়িয়ে তুলতে নিয়মিত ব্যায়াম করা বাধ্যতামূলক।

তথ্য যাচাই

ডাঃ ওয়ারবার্গ কখনও বলেননি, অক্সিজেন নেই এমন পরিবেশে ক্যান্সার কোষ বেঁচে থাকতে পারে না।

তাঁর গবেষণা কেবল দেখিয়েছে, অক্সিজেন আছে, এমন পরিবে্শেও এই কোষগুলি অ্যানেরবিক গ্লাইকোলিসিস চালিয়ে যেতে পারে। অ্যানেরবিক গ্লাইকোলিসিস হল জীবদেহের সেই রাসায়নিক রূপান্তর, যাতে গ্লুকোজ ভেঙে গিয়ে ল্যাক্টেটে রূপান্তরিত হয়, অক্সিজেনের উপস্থিতিতে যার পাইরুভেটে রূপান্তরিত হওয়ার কথা ছিলl কোষগুলিকে সামর্থ্য জোগাতেই গ্লুকোজ পাইরুভেটে রূপান্তরিত হয়ে থাকে।

ডাঃ ওয়ারবার্গ লক্ষ্য করেছেন, অ্যানেরবিক গ্লাইকোলিসিসে গ্লুকোজের পরমাণুগুলি অক্সিজেনের উপস্থিতিতেও এমন আচরণ করে, যা অক্সিজেন না থাকলেও করতো, অর্থাৎ তারা ল্যাক্টেটে রূপান্তরিত হয়ে যায়, আর কোষগুলি গেঁজে গিয়ে শক্তি তৈরি করে নেয়, যা ক্যান্সার কোষগুলিকে বাড়তে সাহায্য করে। ব্যায়াম করলেই শরীরে বেশি মাত্রায় অক্সিজেন প্রবেশ করবে এবং ক্যান্সারের কোষগুলি হ্রাস করতে সহায়ক হবে, এমন দাবির কোনও বৈজ্ঞানিক সমর্থন নেই।

আরও পড়ুন: কালোজিরেতে পাওয়া গেল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন? তথ্যটি সম্পূর্ণ সত্য নয়

২ নং দাবি:

ডাঃ মুরাদের নোবেলজয়ী গবেষণার বিষয় ছিল, ধমনীর মধ্যে রক্তচলাচলে যে বাধা সৃষ্টি হয়, প্রচুর পরিমাণে কাঁচা সব্জি এবং ফলমূল খেলে তা সরিয়ে দেওয়া সম্ভব, যেহেতু এগুলোতে নাইট্রিক অক্সাইড রয়েছে। কিন্তু ভাইরাল ছবিটিতে দাবি করা হয়েছে, প্রভূত পরিমাণে কাঁচা শাকসব্জি ও ফলমূল খেলে ধমনীর ব্লকেজ দূর করা সম্ভব এবং শরীরের সুস্থ কোষগুলিতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়।

তথ্য যাচাই

কিন্তু ক্যান্সার চিকিৎসায় নাইট্রিক অক্সাইডের ভূমিকা কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নাইট্রিক অক্সাইড যেমন টিউমারকে অবদমিত করতে পারে, তেমনই আবার ক্যান্সার কোষের সংখ্যাকেও বাড়িয়েও দিতে পারে।

আলোচ্য ছবিটিতে কিন্তু ধমনীতে রক্তের প্রবাহ ও তার চলাচলের পথের বাধা বিষয়েই আলোচনা করা হয়েছে, ক্যান্সার কোষের উপর তার প্রভাবের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

৩ নং দাবি

ডাঃ ইয়োশিনোরি ওসুমির গবেষণা অটোফ্যাগি নিয়ে, যেখানে বলা হয়েছে, খাদ্যের অভাবে কোষগুলি দেহের অবাঞ্ছিত, ক্ষতিগ্রস্ত এবং রোগাক্রান্ত কোষগুলিকে খেতে থাকে। ছবিটি তার ব্যাখ্যা করেছে এই ভাবে যে, উপবাস করলে প্রতিরোধ-ক্ষমতা বাড়ে এবং ক্যান্সার কোষগুলিকেও মেরে ফেলা যায়। তাই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লোকেদের সপ্তাহে অন্তত একদিন উপোস করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ফেসবুকে এই বিষয়েই ভুয়ো দাবি করা হয়েছে যে, নবেল প্রাপক গবেষক ডাঃ ইয়োশিনোরি ওসুমি নাকি রোজা বা উপবাস রাখেন প্রতি সপ্তাহে।

Full View

পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে

তথ্য যাচাই

অটোফ্যাগি মানে হল, নিজেই নিজেকে খাওয়া। শরীরের কোষগুলি তাদের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ না পেয়ে আশপাশের অন্য ক্ষতিগ্রস্ত কোষদেরই খুঁজে বের করে খেয়ে ফেলে। উপবাস বা রোজা করার গুণাগুণ নিয়ে কিছু চর্চা হলেও সপ্তাহে একদিন করে উপোস করলে ক্যান্সার-আক্রান্ত কোষগুলি নষ্ট করে ফেলা যায়, এমন দাবির পিছনে যথেষ্ট গবেষণা নেই। নাইট্রিক অক্সাইডের মতোই অটোফ্যাগিও ক্যান্সার কোষগুলিকে দাবিয়েও দিতে পারে, অথবা তাদের বৃদ্ধিও ঘটাতে পারে, যা নির্ভর করবে পরিবেশের উপর এবং টিউমারটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তার উপর।

আবার অকার্যকর বা  ডিসফাংশনাল অটোফ্যাগি তো শরীরে ক্যানসারের কারণও হয়ে উঠতে পারে।

২০১৬ সালের নোবেল পান ডাঃ ইয়োশিনোরি ওসুমি। যা পার্কিনসন ও ডিমেনশিয়া প্রভৃতি চিকিৎসায় নতুন পথ খুলে দেবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তাঁর গবেষণায় কোথাও বলা হয়নি, রোজা ক্য়ান্সার সারাবে

ডাঃ শহীদ বেগের বক্তব্য

বুম ভাইরাল ও অর্ধসত্য পোস্টের ব্যাপারে হায়দরাবাদের ফিজিওথেরাপিস্ট এবং বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতির প্রবক্তা ডাঃ বেগের কাছে জানতে চায় কেন তিনি এ ধরনের দাবি সম্বলিত ছবিটি তৈরি করেছেন। তিনি বলেনঃ "আমাদের দেশে ২০ লক্ষেরও বেশি ডাক্তার রয়েছে, অথচ তারা উচ্চ রক্তচাপের মতো একটা সরল রোগের নিরাময় করতে পারে না, কারণ তারা সর্বক্ষণ ব্যবসায়ে ব্যস্ত l কাঁচা খাবার খাওয়া এবং ১০-১৫ মিনিট হাঁটার মতো সহজ দাওয়াই দিয়েই রক্তচাপের সমস্যা দূর করা যায়। কিন্তু কোনও ডাক্তারই সে কথা আপনাকে বলবে না, কেননা তারা ঔষধ নিয়ে পড়াশোনা করেছে, পুষ্টি বা খাদ্যগুণ বিষয়ে অজ্ঞ।"

"যে সব ডাক্তার ওষুধ কোম্পানিগুলোর কথায় ওঠে-বসে, তাদের কথায় কান দেবেন নাl যদি সত্যিই আপনাদের কোনও সুপরামর্শ দরকার হয়, তাহলে যে সব মহান গবেষকরা মানবদেহ নিয়ে চর্চা করছেন, তাদের কথা শুনুন।"

আরও পড়ুন: মিথ্যে: বিভিন্ন ধরনের চা পানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ সারতে পারে

ক্যান্সার-বিশেষজ্ঞরা কী বলেন

এই সব তত্ত্ব বুঝতে বুম মুম্বইয়ের পি ডি হিন্দুজা এবং এমআরসি হাসপাতালের ক্যান্সার-শল্যচিকিৎসক ডাঃ মুরাদ লালা-র সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বুমকে বলেন: "এই ছবিটিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে, ক্যান্সার তেমন সরল ব্যাপার নয়, এটি একটি বহুস্তরীয় প্রক্রিয়া l ক্যান্সার চিকিৎসায় উচ্চ চাপের অক্সিজেন প্রকোষ্ঠ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে বটে, কিন্তু তাতে সুফল পাওয়ার নিশ্চিত প্রমাণ এখনও নেইl" 

ভাইরাল ছবির অন্য দুটি দাবির ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য, "গবেষণাপত্র থেকে দু-একটি অংশকে পরিপ্রেক্ষিতের ভাইরে নিয়ে উদ্ধৃত করা হয়েছে এবং সেগুলিরও ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।" 

"ক্যান্সার রোগীদের উচিত কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে মূল বিষয়বস্তু থেকে বিচ্ছিন্ন কোনও উদ্ধৃতিকে মান্যতা না দেওয়া এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে চলা প্রয়োজন।"

Related Stories