সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদ যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন ২০১৬ সালের আন্দোলনকারীদের উপর দিল্লি পুলিশের আক্রমণের ভিডিও নতুন করে ভাইরাল হল সোশাল মিডিয়ায়।
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে ভিডিওটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের। সে সময় ছাত্ররা পিএইচডি গবেষক রোহিত ভেমুলার মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিল। আর সেই ঘটনার সঙ্গে নাগরিকত্ব আইনের (সি এ এ) কোনও সম্পর্ক নেই। নাগরিকত্ব আইন বাতিল করার দাবিতে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের প্রতি অসংযত ব্যবহারের কারণে দিল্লি পুলিশ ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সর্বভারতীয় সম্পাদক ধীরজ গুর্জর ১৯ সেকেন্ড লম্বা এই ভিডিওটি টুইট করেছেন। সঙ্গে তিনি বিভ্রান্তিকর মন্তব্য। এটি নয়া নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রতিবাদ যখন চরমে, গুর্জর তখনই টুইটটি করলেন। টুইটটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "পুলিশের সঙ্গের লোকেরা কারা, যারা মহিলাদের এ রকম নৃশংস ভাবে মারছে? মোদী সরকার এই ভাবে নারীদের সম্মান করে?"
(হিন্দিতে মূল লেখাটি: पुलिस के साथ ये कौन लोग है जो महिलाओं को बुरी तरह से मार रहे है? क्या इसी तरह मोदी जी की सरकार महिलाओं का सम्मान करती है")
पुलिस के साथ ये कौन लोग है जो महिलाओं को बुरी तरह से मार रहे है? क्या इसी तरह मोदी जी की सरकार महिलाओं का सम्मान करती है? pic.twitter.com/L3jR2fr4OF
— Dheeraj Gurjar (@dgurjarofficial) January 1, 2020
ভিডিওটি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে এবং নেটিজেনরা এটিকে লখনউ-এর ঘটনা বলে চিহ্নিত করেছেন। শেয়ার করা ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ভিডিওটি লখনউয়ের বলেই শোনা যাচ্ছে এবং সেখান থেকেই এটি শেয়ার করা হয়েছে। যে সব ছেলেমেয়েরা প্রতিবাদ করছে তাদের উপর পুলিশের অত্যাচার স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।" (হিন্দিতে মূল লেখাটি: 'वीडियो कथित रूप से लखनऊ का बताया और शेयर किया गया है, प्रदर्शन करने वाले लड़के और लड़कियों पर पुलिस अत्याचार साफ़ देखा जा सकता है'')
उक्त वीडियो में दिख रहे पुलिसकर्मी उत्तर प्रदेश पुलिस से सम्बन्धित नहीं हैं।#UPPAgainstFakeNews
— UP POLICE (@Uppolice) December 30, 2019
বুম ভিডিওটি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এবং দেখতে পায় যে এটি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় আর ঘটনাটি নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দৃশ্যও নয়।
২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে এবিপি নিউজের একটি নিউজ বুলেটিনে আমরা এই একই ভিডিও দেখতে পাই। ওই প্রতিবেদন অনুসারে ভিডিওটি দিল্লির, সেখানে হায়দরাবাদ নিবাসী রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করছিলেন, তাদের আরএসএস হেডকোয়ার্টার থেকে জোর করে বাইরে বার করে দেওয়ার ঘটনার।
ভেমুলা হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির এক জন গবেষক ছিলেন। বিজেপির ছাত্রশাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। 'অম্বেদকর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন'-এর নামের অধীনে তিনি যখন বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরেন তখন তার ২৫,০০০ টাকার ভাতাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার মৃত্যুতে সারাদেশের ছাত্ররা দেশ জুড়ে প্রতিবাদে নামে।
ভিডিওটি সম্পর্কে বলা হয়, "রোহিত ভেমুলার মৃত্যুর ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত মহিলাদের উপর দিল্লি পুলিশ নৃশংস ভাবে অত্যাচার করে।"