বাংলাদেশে বন্যার জল থেকে রক্ষা পেতে ঘরের টিনের চালে চড়ে ত্রাণের সামগ্রী নেওয়ার ছবিকে বিভ্রান্তিকর দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় জিইয়ে তোলা হল। ছবিটি এদেশে এমন সময়ে শেয়ার করা হচ্ছে যখন অসম ও বিহারে বিপর্যস্ত জনজীবন।
বিহারের ৩৮ টি জেলার মধ্যে দারভাঙা, গোপালগঞ্জ, সীতামারি, কিষানগঞ্জ সহ মোট ১১ টি জেলার প্রায় ১০ লক্ষ লোক বন্যার কবলে পড়েছেন। অন্যদিকে অসমে বন্যায় ৩৩ টি জেলার মধ্যে ২২ টি জেলায় প্রায় ২২ লক্ষ লোকের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। ধিমাজি, নলবাড়ী, গোয়াপাড়া, ডিব্রুগড় প্রভৃতি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই বন্যায়।
বুম দেখে ছবিটি ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে অনলাইনে রয়েছে এবং ছবিটিকে ওই সময়ের বাংলাদেশের বন্যার ছবি বলা হয়েছে।
ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ছবিতে খালি গায়ে লুঙ্গি পরিহিত এক ব্যক্তি ঘরের টিনের চালে চড়ে ত্রাণের সামগ্রী নিতে দেখা যায়। সে ঘরের চালা পর্যন্ত থইথই করছে জল।
এই ছবিকে ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "দেশ কতটা উন্নত হলে, এতো উপরে ওঠে মানুষ...???"
বুম রিভার্স সার্চ করে দেখে ছবিটির সঙ্গে ভারতের অসম ও বিহারের বন্য়ার কোনও যোগ নেই। মূল ছবিটি বাংলাদেশের।
ইতালির আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) নিজস্ব ফেসবুক পেজে ছবিটিকে ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই
পোস্ট করে। (আর্কাইভ
লিঙ্ক)
ওই দিনের
ফেসবুক পোস্টে মোট ৮ টি ছবি শেয়ার করা হয়। ওই পোস্টে বলা হয় ছবিগুলি তুলেছেন দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) স্থিত সাংবাদিক তারেক মাহমুদ। ২৩ জুলাই ২০১৯ প্রকাশিত ইন্টার প্রেস সার্ভিস(আইপিএস)-এর
প্রতিবেদনেও লেখা হয় সে কথা। প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়, "উত্তর বাংলাদেশ ব্যাপক বন্য" (ইংরাজিতে মূল শিরোনাম: Floods Havoc in North বাংলাদেশ)। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা
জানায় যমুনার জলস্ফীতিতে প্লাবিত হয় দেওয়ানগঞ্জ সদর উপজেলা।
পোস্টের বর্ণনায় লেখা হয়, "বন্যা বাংলাদেশে স্বাভাবিক একটি ব্যাপার—এর দায় দেওয়া যেতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর অথবা উৎস স্থলে নদীর জল নিয়ন্ত্রনের উপর বা অপর্যাপ্ত ভাবে বিপর্যয় মোকাবিলাকে তদারকি করা। কিন্তু জীবনযাত্রার উপর এর প্রভাব অপূরণীয়।"
বিশ্বসংবাদ নামের একটি বাংলা সংবাদ ওয়েবসাইটে ১৩ জুলাই ২০১৯ প্রকাশিত একটি
প্রতিবেদনেও ছবিটি ব্যবহার করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয় দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টির ফলে প্রবল বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয় ওই অতিবর্ষণের ফলে বন্যার কারণে ৮০০
পরিবারকে পাহাড়ের ঢাল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।