অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চড় মারার জন্য আম আদমি পার্টির সমর্থকরা এক ব্যক্তিকে মারধর করার পুরনো ভিডিও—বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য শেয়ার করে মিথ্যে দাবি করেছেন যে, এক ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়েছে।
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে, যে ব্যক্তি কেজরিওয়ালকে থাপ্পড় মেরেছিলেন, তিনি আপের কর্মীদের মার খাওয়ার পর জীবিত ছিলেন এবং পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ফুটেজটি মালব্য শেয়ার করেন। সঙ্গে ক্যাপশন দেন, "আপ কর্মীরা এ রকম নিষ্ঠুর কাজ করেছে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদযাত্রায় এক জন মানুষকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। তিনি নীরব দর্শক হয়ে তখন শুধু দেখেছেন, ঘটনার সময় কোনও হস্তক্ষেপ করেননি, কিচ্ছুটি হয়নি, এমন ভাব করে নিজের কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন... সরকারি দায়িত্বে থাকার কথা তো বাদই দিন, এ রকম এক জন লোক কি জনজীবনের পক্ষে উপযুক্ত?"
আরও পড়ুন: ইমাম বুখারীর সঙ্গে বিজেপি সাংসদ মনোজ তিওয়ারির পুরনো ছবিকে সাম্প্রতিক বলা হল
ক্যাপশনের কিছু অংশ নিয়ে ফেসবুকে সার্চ করে দেখা যায় এই একই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় একই ক্যপশনের সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে।
বুম দেখেছে মালব্য ভিডিওটি টুইট করার অনেক আগে থেকেই এই একই ক্যপশন দিয়ে আরও অনেকে এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
Goons of AAP mob lynching a man during Arvind Kejriwal's Road Show
— Archie (@archu243) January 31, 2020
What is more disgusting is that Kejriwal just keeps watching the entire brutality without stopping his gundas
Does Delhi want such a CM again?#KejriwalExposed#शाहिनबाग_का_भंडाफोड़pic.twitter.com/qpOVOToMaE
তথ্য যাচাই
মালব্যর টুইটটি ভাল করে যাচাই করে আমরা দেখতে পাই যে অমিত রায়না নামে একজন টুইটার ব্যবহারকারী ২০১৯ সালের ৮ মে এই একই ভিডিও টুইট করেছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে ভিডিওটি গত বছরের এবং আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের কোনও পদযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
বুম গুগলে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে মে মাসের সময় সীমার মধ্যে এই বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে। এর ফলে আমরা ২০১৯ সালের ৪ মে তারিখের আপের পদযাত্রায় কেজরিওয়ালকে এক ব্যক্তির থাপ্পড় মারার ঘটনার উপর অনেকগুলি সংবাদ প্রতিবেদনের সন্ধান পাই।
ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদনে এই ঘটনার একটি ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। আমরা ইন্ডিয়া টুডের ভিডিওটি মালব্যর পোস্ট করা ভিডিওটির সঙ্গে তুলনা করে দুটির মধ্যে প্রচুর মিল খুঁজে পাই, সেটি দেখে বোঝা যায় এই ভিডিও ফুটেজ দুটি একই ঘটনার।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে আপের কর্মীরা ঐ ব্যক্তিকে আটকায় এবং ঘটনাস্থলেই তাকে মারধর করে। পরে দিল্লি পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ঐ ব্যক্তিকে কি পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল?
কাউকে মারধরের ঘটনাকে তখনই লিঞ্চিং বা গণপিটুনি দিয়ে হত্যা বলা যাবে, যদি ওই মারধরের আঘাতের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে যে ব্যক্তিকে মারধর করা হয়, পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁর আঘাতের চিকিৎসা করা হয়। যেহেতু তিনি সেই আঘাত সামলে নেন, তাই এই ঘটনাকে গণপিটুনিতে হত্যা বলা যাবে না। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে যে ওই ব্যাক্তি এক জন বিক্ষুব্ধ আপ কর্মী। আপ এই দাবির বিরোধিতা করেছে এবং অভিযোগ করেছে যে দিল্লি পুলিশ ওই ব্যক্তিকে পদযাত্রায় পাঠিয়েছিল।