পুরস্কার পাওয়া একটি অ্যানিমেটেড ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, এক দল জিরাফ একটি সুইমিং পুলে নেমে নানা রকম কসরত দেখাচ্ছে l এই ভিডিওটিকে অস্ট্রেলিয়ায় সত্যিকারের একটি ঘটনার প্রদর্শনী বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে জিরাফগুলো দেখানো হয়েছে, সেগুলো কোনওটাই আসল জিরাফ নয়, সবই অ্যানিমেটেড। এটি বানিয়েছেন প্রখ্যাত ফরাসি অ্যানিমেশন শিল্পী নিকোলাস দেভেউ।
২০১৬ সাল থেকেই এই ভিড়িওটি ইন্টারনেটে ঘুরছে এবং ইদানীং আবার নতুন করে জিইয়ে তোলা হয়েছে। ফেসবুক এবং ইউ-টিউবে বারংবারই এটা শেয়ার হয়ে চলেছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে: "এটা বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলাগুলোর একটি l এটি অস্ট্রেলিয়ায় প্রদর্শিত হয়ে থাকে। এই জিরাফগুলিকে বহু অর্থ ব্যয় করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জলের ভয় কাটিয়ে উঠতে জিরাফের অন্তত দু বছর সময় লাগে আর জলে ঝাঁপ দেওয়ার সাহস সঞ্চয় করতে আরও দু-তিন বছর। উপভোগ করুন!''
ফেসবুকে এই পোস্টটির আর্কাইভ সংস্করণ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানেl আর ইউটিউবে পোস্টটির আর্কাইভ বয়ান দেখতে পারেন এখানে।
বুমও তার হোয়াটঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরে এই ভিডিওটি পেয়েছে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, এক পাল জিরাফ লাইন দিয়ে এক-এক করে একটি সুইমিং পুলে ঝাঁপ দেবার মঞ্চতে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং তারপর চমকপ্রদ সব কসরত দেখিয়ে জলে পড়ছে। দুটি জিরাফ আবার বাকিদের উত্সাহিত করতে ছাদ থেকে উল্টো করে ঝুলে রয়েছে।
একদম জলজ্যান্ত অ্যানিমেশন তৈরি করতে সিদ্ধহস্ত নিকোলাস দেভেউ এই অ্যানিমেশন ভিডিওটি বানিয়েছেন।
জন্তু-জানোয়ারদের নিয়ে এরকম আরও অনেক অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম দেভেউ এর আগেও তৈরি করেছেন। হাতিরা আকাশ থেকে ডাইভ দিচ্ছে, জিরাফেরা দড়ির ওপর দিয়ে ব্যালান্সের খেলা দেখাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রাণিকে দিয়ে অসম্ভব সব শারীরিক কসরতের অ্যানিমেশন ভিডিও বানানোর জন্য দেভেউ-র যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে।
তাঁর ওয়েবসাইট অনুযায়ী দেভেউ জিরাফ নিয়ে তাঁর এই অ্যানিমেশনের পরিকল্পনা করেন অন্য একটি এই ধরনের ভিডিও তৈরির ১০ বছর পরে, যেটিতে একটি হাতিকে একটা দুদিকে টাঙানো দড়ির ওপর কসরত করতে দেখানো হয়েছে। এই শর্ট অ্যানিমেশনটি তৈরি করতে দেভেউ-র দেড় বছর সময় লেগেছে এবং এটি বিভিন্ন শর্ট অ্যানিমেশন ছবির প্রদর্শনীর জন্য মনোনীত হয়েছে, পুরস্কৃতও হয়েছে।
তথ্য-যাচাইকারী ওয়েবসাইট স্নোপস ২০১৬ সালেই এই পোস্টের ভুয়ো দাবির পর্দাফাঁস করেছিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বাঁশ-কলাগাছ দিয়ে রাস্তা তৈরির পুরনো ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের বলা হল