সোশাল মিডিয়ায় গ্রাফিক পোস্ট শেয়ার করে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য 'আর নেই'।
বুমের কাছে সর্বশেষ আসা হাসপাতালের বুলেটিনের খবর অনুযায়ী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও আপাতত স্থিতিশীল তিনি।
বুধবার প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। কৃত্রিম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। শরীরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ চিকিৎসকদের। পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে তাঁকে দেখভালের জন্য। আপাতত কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আশায় কিছুটা স্বস্তিতে ডাক্তারেরা।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভ্রান্তিকর গ্রাফিক পোস্টে লেখা হয়েছে, "আমাদের সকলের প্রিয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর নেই। কিন্তু ভালো করে নজর করলে দেখা যায় তাতে লেখা, "তার বাড়িতে আর নেই হাসপাতালে ভর্তি।" বুদ্ধদেব বাবুর ছবি সহ ওই পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করে ওই ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশন লিখেছেন, "বেদনাতে ভরপুর।"
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
এরকম রসিকতায় নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন, কমেন্টেই তার প্রমান মেলে। নেটিজেনরা ওই ফেসবুক ব্যবহরকারীর বিরুদ্ধে রুচি হীনতা ও বরিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে যথাযত সম্মান না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
সকাল ১১ টা ১৫ মিনিটের উডল্যান্ডস হাসপাতালের বুলেটিন অনুযায়ী ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান হয় ওই বুলেটিনে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে ভেন্টিলেশন।
বুম আগেই সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করলে চাউড় হওয়া মৃত্য়ুর গুজব নস্যাৎ করে দেন তিনি।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সিওপিডির সমস্যা দীর্ঘদিনের। বেশ কিছুদিন ধরেই পোর্টেবেল সিলিন্ডারের সাহায্য নিয়ে বাড়িতেই শুশ্রুষা চলছিল তাঁর। কলকাতার পারদ নামছে আর শীতে শুরুতে সমস্যা বাড়ায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। মঙ্গলবার ডাক্তাররা তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে যান পরীক্ষা করতে। বুধবার অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে বুদ্ধদেব বাবুর কন্যা সুচেতনার সঙ্গে কথা বলেন। দ্রুত আরোগ্যে কামনার পাশাপাশি সরকারি সাহায্যের সবরকম আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাম দলের একাধিক নেতৃবৃন্দ, রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধানখড় ও কলকাতার পুরপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিমও হাসপাতালে যান খবর নিতে।
বুম অক্টোবর মাসে মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার মৃ্ত্যু গুজবের তথ্য-যচাই করেছিল।
সম্পাদকীয় নোট: প্রতিবেদনে মিমের বাক্যাংশ জুড়ে সংস্করণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভ: বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তেরঙা অবমাননার পুরনো ছবি আবার ছড়াল