পাঞ্জাবি অভিনেত্রী সোনিয়া মান ও গায়ক মেহতাব ভার্ক-এর লঙ্গরে বসে খাবার খাওয়ার একটি ছবি শেয়ার করে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা এক চিকিৎসক ও ইঞ্জিনিয়ার দম্পতি কৃষকদের প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।
ছবিটি একটি ভুয়ো গল্পের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, বলা হয়েছে যে এই দম্পতি মধুচন্দ্রিমা বা ক্যালিফোর্নিয়ায় তাঁদের সফল কর্মজীবনে ফিরে না গিয়ে দিল্লিতে চলা কৃষকদের প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মূলত পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষকরা 'দিল্লি চলো' পদযাত্রার আয়োজন করেছেন। প্রতিবাদ এখনও চলছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
আরও পড়ুন: মিথ্যে দাবিতে জিইয়ে উঠল কঙ্গনা রানাউত ও মার্ক ম্যানুয়েলের ছবি
হিন্দিতে লেখা ক্যাপশনের বাংলা অনুবাদ করলে হয়: "বর ক্যালিফোর্নিয়ার ইঞ্জিনিয়ার এবং কনে চিকিৎসক, তাঁরা ভারতে এসেছিলেন বিয়ে করতে। তাঁদের বিয়ে হল ২৫ নভেম্বর। কিন্তু, যেখানে তাঁরা কোটি কোটি টাকা রোজগার করতেন, বিয়ের পর সেই ক্যালিফোর্নিয়ায় সেখানে ফিরে না গিয়ে, মধুচন্দ্রিমার বদলে তাঁরা কৃষক প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা নিজের দেশের কৃষকদের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত।"
(হিন্দি ভাষায় লেখা মূল লেখা: "इनकी 25 नवम्बर को शादी हुई हैं,लड़का इन्जीनियर हैं और लड़की डाक्टर हैं केलिफोर्निया में, शादी करने भारत आए थे,वापस केलिफोर्निया या हनीमून पर जाने के बजाय किसान आन्दोलन में ऐसे हाल में हैं | जबकि दोनों करोड़ों कमाते हैं, यहाँ इसलिए हैं क्योंकि अपने देश के किसान की चिंता हैं,गोबरभक्तों | बीजेपी और गोदी मीडिया के अनुसार ये भी आतंकवादी,खालिस्तानी और देशद्रोही हैं निकिता जाटोलिया")
এরকম দুটি পোস্ট আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টার্নবুলের মোদী নিয়ে ভুয়ো মন্তব্য ভাইরাল
তথ্যযাচাই
বুম দেখেছে যে ছবিতে পাঞ্জাবি অভিনেত্রী সোনিয়া মান ও গায়ক মেহতাব ভার্ককে দেখা যাচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় মান এবং ভার্কের অ্যাকাউন্টের পোস্ট দেখলে বোঝা যায় তাঁরা কৃষকদের প্রতিবাদকে সমর্থন করছেন এবং তাঁরা প্রতিবাদ স্থলে তোলা নিজেদের অনেক ছবিও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
সম্প্রতি সেপ্টেম্বর মাসে তাঁরা দু'জন একসঙ্গে একটি সঙ্গীত ভিডিওতে কাজ করেছেন।
হরমন নামে মেহতাব ভার্কের ম্যানেজমেন্ট টিমের এক সদস্য বুমকে জানান, "ওঁরা দুজন শুধুই বন্ধু এবং তাঁরা কৃষকদের প্রতিবাদে সমর্থন জানাতে গিয়েছিলেন, মোটেই ওঁরা বিবাহিত নন এবং কৃষকদের সমর্থন জানাতে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন।"
আমরা মানের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তাঁর সোশাল মিডিয়া টিম জানায় যে ভাইরাল হওয়া 'পোস্টটি ভুয়ো'।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর মান তাঁর পরীক্ষিত ফেসবুক প্রোফাইলে যে ছবি আপলোড করেছেন সেটি দেখতে পাই। তিনি ছবিটি যে ক্যাপশনের সঙ্গে আপলোড করেছেন, " গুরু দা লঙ্গর #কিষাণএকতাজিন্দাবাদ #কিষাণ_আন্দতা #কিষাণি #ধর্ণা @iammehtabvirk".
আমরা একই ছবি তাঁর যাচাই করা ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলেও দেখতে পাই।
মান কৃষক প্রতিবাদ থেকে ভার্কের সঙ্গে অন্য কয়েকটি ছবিও আপলোড করেন। সেগুলি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
কৃষকদের সমর্থন জানিয়ে ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভার্ক মানের সঙ্গে একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেছেন। দেখুন এখানে।
আরও পড়ুন: ২০১৩'র খালিস্তানপন্থী ব্যানারের ছবি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জুড়ে ভাইরাল