ফ্যাক্ট চেক

কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রশংসায় সমাজকর্মী তামারা গ্রিগসবি? দাবিটি ভুয়ো

বুম যাচাই করে দেখে তামারা গ্রিগসবি মারা যান ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ। তিনি হাভার্ডের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ফেলো ছিলেন না।

By - Sk Badiruddin | 8 Nov 2020 8:05 PM IST

কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রশংসায় সমাজকর্মী তামারা গ্রিগসবি? দাবিটি ভুয়ো

সোশাল মিডিয়া পোস্টে একটি ভুয়ো খবরের কাগজের ক্লিপিং শেয়ার করে সামাজিক ও নারী উন্নয়নমূলক প্রকল্প কন্যাশ্রী নিয়ে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। ওই সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে দাবি করা হয়েছে হাভার্ড-এর সমাজতত্ব বিভাগের ফেলো তামারা গ্রিসবে 'কন্যাশ্রী' প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন তাঁর গবেষণা পত্রে।

ভাইরাল হওয়া পোস্টে শেয়ার করা সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে লেখা হয়েছে, গত এক শতাব্দীতে গোটা বিশ্বে সেরা মডেল নারী প্রগতিতে 'কন্যাশ্রী' নোবেলের যোগ্য।'' পরে আরও লেখা হয়েছে, ''হাভার্ড-এর সমাজতত্ব বিভাগের ফেলো তামারা গ্রিসবে'র গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মেয়েদের স্বার্থে এতবড় মডেল গত ১০০ বছরে বিশ্বে আর তৈরি হয়নি।'' ওই সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও আমেরিকার প্রয়াত সমাজকর্মী তামারা গ্রিগসবির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

এরকম দুটি পোস্ট দেখা যাবে এখানে ও এখানে। পোস্ট দুটি আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে। 

এই একই ছবি ক্যাপশন সহও ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে। সেরকম একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ''নারী প্রগতিতে বিশ্বের সেরা প্রকল্প "কন্যাশ্রী" নোবেল পাওয়ার যোগ্য। #BGM''

Full View

পোস্টটি দেখা যাবে এখানে

আরেকটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ''নারী প্রগতিতে গত এক শতাব্দীতে গোটা বিশ্বে সেরা মডেল বাংলার কন্যাশ্রী।।এতবড় মডেল যা গত ১০০ বছরে বিশ্বের বুকে হয়নি, এবং অবশ্যই এটি নোবেল পাওয়ার যোগ্য মত বিশেষজ্ঞ দের।। #নারীপ্রগতিতেএগিয়েবাংলা #পিছিয়েদেশ #BanglarGorboMamata #WestBengal''

Full View

পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে

আরও পড়ুন: সম্পর্কহীন ছবি ছড়িয়ে দাবি অস্ত্র সহ অসমে ধৃত এক মুসলিম কংগ্রেস নেতা

তথ্য যাচাই

বুম দেখে ওই সংবাদপ্রত্রের ক্লিপে ব্যবহার হওয়া ছবিটি আমেরিকার রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক তামারা গ্রিগসবির। এই বানানটি ত্রুটিপূর্ণভাবে তামারা গ্রিসবে লেখা হয়েছে ভাইরাল সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে। বুম তামারা গ্রিগসবি কন্যাশ্রী নিয়ে প্রশংসা করা কোনও সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি। বুম দেখে ভাইরাল হওয়া ক্লিপংটিতে 'সমাজত্ত্ব' বানানটি সঠিক নয়। গ্রিগসবির উইকিপিডিয়া কমন্সে থাকা ছবিটি দেখা যাবে এখানে

৪১ বছর বয়সে তামারা মারা যান ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে তামারা ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে পুরোপুরি অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তামারা।

ভাইরাল সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে তামারা গ্রিগসবির পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে হাভার্ডের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ফেলো তিনি। অথচ বুম দেখে তামারা গ্রিগসবি হাভার্ডের ফেলো ছিলেন না, বরং তিনি অন্য আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার্ড বিশ্ববিদ্য়ালয়ে স্নাতক স্তরে অধ্যয়ণ করেন।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে বাল্য বিবাহ ও নারী শিক্ষা প্রসারে শুরু করে সামজিক, ও জনকল্যানমূলক প্রকল্প 'কন্যাশ্রী'। ভাইরাল সংবাদপত্রের ক্লিপিংয়ে দাবি করা স্বীকৃতির ব্যাপারে সুনিশ্চিত হতে বুম কন্যাশ্রী ওয়েবসাইটের অ্যাওয়ার্ড-এর অংশ খুঁটিয়ে দেখে। আর্কাইভ লিঙ্ক

ওয়েবসাইটের অ্যাওয়ার্ড অংশে বিদেশ ও দেশে একাধিক প্রশংসা ও স্বীকৃতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রদত্ত বিশেষ পুরস্কার।

মানপত্রের ছবিগুলিও রয়েছে অ্যাওয়ার্ড গ্যালারিতে

বুম বিষয়টি নিয়ে রাজ্যে নারী, শিশু বিকাশ ও সামাজিক উন্নয়ণ দপ্তরের স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী ডঃ শশী পাঁজা ও বিভাগীয় সচিব শ্রীমতি সংঘমিত্রা ঘোষের মতামত চেয়ে মেল করেছে। তামারা গ্রিগসবির কন্যাশ্রী প্রশংসা সম্পর্কিত কোনও নথি দপ্তরের হাতে থাকলে তা চাওয়া হয়েছে। প্রত্যুত্তর পেলে প্রতিবেদনটি সংস্করণ করা হবে।

বুম স্বাধীনভাবে যাচাই করেনি ভাইরাল ছবিটি কোন সংবাদপত্রের ক্লিপিং।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসঙ্ঘ কাশ্মীরকে বিরোধ অমীমাংসিত এলাকার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে?

Tags:

Related Stories